পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ
৫৭৫৭-[১৯] ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। একবার তিনি কাফিরদের মুখে নবী (সা.) -এর বিরুদ্ধে তিরস্কারমূলক কিছু কথা শুনতে পেলেন। তাতে তিনি ক্রোধান্বিত হয়ে নবী (সা.) -এর কাছে ছুটে এসে কথাটি তাকে জানালেন। এতদশ্রবণে তিনি (সা.) মিম্বারে দাঁড়িয়ে বললেন, তোমরা বল দেখি আমি কে? উত্তরে সাহাবীগণ বললেন, আপনি আল্লাহর রাসূল!’ তিনি বললেন, আমি হলাম, ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আবদুল মুত্ত্বালিব এর পুত্র মুহাম্মাদ। আল্লাহ তা’আলা যে সকল সষ্টিজীব সৃষ্টি করেছেন তন্মধ্যে আমাকে উত্তম শ্রেণিতে সৃষ্টি করেছেন। আবার সেই মানব শ্রেণিকে দু’ভাগে (আরব ও আ’যম) নামে বিভক্ত করেছেন। আর আমাকে তার উত্তম দলে (আরবের মধ্যে) সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর সেই দলকে আবার উত্তম গোত্রে (কুরায়শ গোত্রে) সৃষ্টি করেছেন। আবার সেই গোত্রকেও বিভিন্ন পরিবারে বিভক্ত করেছেন। তার নামে উত্তম পরিবার (হাশিমী পরিবারে) আমাকে সৃষ্টি করেছেন। অতএব লোক ও পরিবার হিসেবে আমি সর্বোত্তম। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)
وَعَن الْعَبَّاس أَنَّهُ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَأَنَّهُ سَمِعَ شَيْئًا فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَقَالَ: «مَنْ أَنَا؟» فَقَالُوا: أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ. فَقَالَ: «أَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ إِنَّ اللَّهَ خَلَقَ الْخَلْقَ فَجَعَلَنِي فِي خَيْرِهِمْ ثمَّ جعلهم فرقتَيْن فجعلني فِي خير فِرْقَةً ثُمَّ جَعَلَهُمْ قَبَائِلَ فَجَعَلَنِي فِي خَيْرِهِمْ قَبيلَة ثمَّ جعله بُيُوتًا فَجَعَلَنِي فِي خَيْرِهِمْ بَيْتًا فَأَنَا خَيْرُهُمْ نفسا وَخَيرهمْ بَيْتا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3607 ۔ 3608 وقال : حسن) * فیہ یزید بن ابی زیاد : ضعیف مشھور ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: (فَكَأَنَّهُ سَمِعَ شَيْئًا) অর্থাৎ ‘আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে রাগত ভাব নিয়ে এসেছেন, যেন তিনি কাফিরদের কাছে কিছু শুনেছেন।
কাফিররা নবী (সা.) -এর বংশ ও মর্যাদা নিয়ে কটাক্ষ করেছে। যেমন তারা বলেছে- (وَ قَالُوۡا لَوۡ لَا نُزِّلَ هٰذَا الۡقُرۡاٰنُ عَلٰی رَجُلٍ مِّنَ الۡقَرۡیَتَیۡنِ عَظِیۡمٍ) “তারা বলে, কুরআন কেন দুই জনপদের কোন প্রধান ব্যক্তির ওপর অবতীর্ণ হলো না?” (সূরা আয যুখরুফ ৪৩ : ৩১)।
এটা বলে তারা যেন নবীর মর্যাদা নিয়েই কটাক্ষ করেছে। কারণ তাদের ধারণা মতে, এত বড় বিষয় সাধারণ মুহাম্মাদের ওপর অবতীর্ণ না হয়ে বড় কোন ব্যক্তির ওপর অবতীর্ণ হওয়ার কথা। তাদের এমন অবজ্ঞা ‘আব্বাস (রাঃ)-কে কষ্ট দেয়। তাই তিনি পীড়িত মন নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কাছে আসেন। রাসূল (সা.) তা বুঝতে পেরে মিম্বারে উঠে নিজের মর্যাদা তুলে ধরেন। বংশ ও মর্যাদার দিক দিয়ে তার ওপর কেউ নেই সেটাই রাসূল (সা.) তার এই হাদীসে প্রকাশ করেন।
(«مَنْ أَنَا؟» فَقَالُوا: أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ.) “তিনি বললেন, আমি কে? তারা বলল, আপনি আল্লাহর রাসূল।” রাসূল তাদের কাছে প্রশ্ন করে নিজের পরিচয় তুলে ধরতে চেয়েছেন। কারণ প্রশ্নের পর কোন কিছু প্রকাশ করা সম্বোধিত ব্যক্তির হৃদয়ে অধিক রেখাপাত করে। তাছাড়া প্রশ্নের মাধ্যম সম্বোধিত ব্যক্তির পূর্ব ধারণা সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদের কাছে “আমি কে?” প্রশ্ন করে তার মর্যাদা সম্পর্কে তারা কতটুকু অবগত সেটাই প্রথমে নির্ণয় করতে চেয়েছেন। এই প্রশ্ন করলে তারা স্বভাবতই উত্তর দিলো, “আপনি আল্লাহর রাসূল।” রাসূল তাদের উত্তরের সাথে যোগ করলেন, “আমি মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল মুত্ত্বালিব...” অর্থাৎ আমার মর্যাদা কেবল রাসূল হওয়ার মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। বরং বংশের দিক দিয়েও আমার মর্যাদা শিখরে। বংশ মর্যাদার দিক থেকে কিভাবে তিনি শিখরে সেটাই হাদীসে তুলে ধরেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)