৫৫৮৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা

৫৫৮৯-[২৪] আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: ঈমানদারদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝামাঝি একটি পুলের উপর আটক রাখা হবে এবং দুনিয়াতে পরস্পর পরস্পরে যা অন্যায়-অবিচার হয়েছিল তার প্রতিশোধ নেয়া হবে। সবশেষে যখন তারা পবিত্র এবং পরিচ্ছন্ন হয়ে যাবে, তখন তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে। ঐ সত্তার শপথ! যার হাতে আমি মুহাম্মাদের প্রাণ! মু’মিনদের প্রত্যেকে পৃথিবীতে তার নিজ বাড়িকে যেমনিভাবে চিনত, তার তুলনায় সে জান্নাতে তার স্থান ভালোরূপে চিনতে পারবে। (বুখারী)

الفصل الاول (بَاب الْحَوْض والشفاعة )

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَخْلُصُ الْمُؤْمِنُونَ مِنَ النَّارِ فَيُحْبَسُونَ عَلَى قَنْطَرَةٍ بَيْنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ فَيُقْتَصُّ لِبَعْضِهِمْ مِنْ بَعْضٍ مَظَالِمُ كَانَتْ بَيْنَهُمْ فِي الدُّنْيَا حَتَّى إِذَا هُذِّبُوا وَنُقُّوا أُذِنَ لَهُمْ فِي دُخُولِ الْجَنَّةِ فَوَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَأَحَدُهُمْ أَهْدَى بِمَنْزِلِهِ فِي الْجَنَّةِ مِنْهُ بِمَنْزِلِهِ كَانَ لَهُ فِي الدُّنْيَا» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (2440) ۔
(صَحِيح)

وعن ابي سعيد رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «يخلص المومنون من النار فيحبسون على قنطرة بين الجنة والنار فيقتص لبعضهم من بعض مظالم كانت بينهم في الدنيا حتى اذا هذبوا ونقوا اذن لهم في دخول الجنة فوالذي نفس محمد بيده لاحدهم اهدى بمنزله في الجنة منه بمنزله كان له في الدنيا» . رواه البخاري رواہ البخاری (2440) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (يَخْلُصُ الْمُؤْمِنُونَ مِنَ النَّارِ) মু'মিনদের জাহান্নাম থেকে বের করা হবে বা মুক্ত করা হবে, এখানে (يُخْلَصُ) শব্দটিকে ‘মাজহুল' বা কর্মবাচ্য হিসেবে (باب افعال) এর (الاخلاص) ক্রিয়ামূল থেকে পাঠযোগ্য। কোন কোন সংস্করণে (باب تفعيل) থেকে তাশদীদযোগে পঠিত হয়েছে। আবার কোনটিতে (يَخْلُصُ) ‘ইয়া বর্ণে যবর, এবং ‘লাম' বর্ণে পেশযোগে (ثلاثيات) থেকে পঠিত হয়েছে।
নিহায়াহ্ গ্রন্থে (خلص) এর অর্থ (سَلِمَ وَنَجَا) ‘নিরাপদ হয়েছে-‘মুক্ত হয়েছে উল্লেখ হয়েছে।
(القَنْطَرَة) শব্দের অর্থ সেতু বা ব্রীজ, এখানে জাহান্নামের উপরে প্রসারিত পুলসিরাতকে বুঝানো হয়েছে অথবা জান্নাত এবং জাহান্নামের মাঝখানে একটি উঁচু জায়গা আ'রাফও হতে পারে। এখানে আল্লাহ তা'আলা মুমিনদের পরস্পরের যুলুমের প্রতিকার গ্রহণ করে তাদের এতদসংক্রান্ত হক্কুল ইবাদের দায়বদ্ধতা থেকে মুক্ত এবং পবিত্র করবেন। কাফিরদের জন্য এ বিধান প্রযোজ্য নয় কারণ তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামী। রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর বাণী: (لَأَحَدُهُمْ أَهْدَى بِمَنْزلِهِ) “তাদের প্রত্যেকেই জান্নাতে তাদের ঘর অধিক চিনতে পারবে।” এ বাক্যের মধ্যে (بِمَنْزلِهِ) এর ‘বা’ অব্যয়টি (الى) এর অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এখন বাক্যটি হয়েছে, (لَأَحَدُهُم أَعْرَفُ وَأَكْشَرُهِدَايَةً إِلَى مَنْزِلِهِ) তারা প্রত্যেকেই তাদের জান্নাতের অবস্থানস্থলের দিকে অধিক পথপ্রাপ্ত ও পরিচয়প্রাপ্ত হবে।
‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (هُدًى) শব্দটি (ب) দ্বারা স্বকর্মক হয় না বরং (ل) অথবা (الى) দ্বারা হয়। (ب) এর মধ্যে ইলসাক তথা সম্পৃক্ততার অর্থ বিদ্যমান। অতএব এর অর্থ হবে, সে জান্নাতে তার অবস্থানস্থলকে চেনার ক্ষেত্রে অধিক অগ্রণী হবে। এ অর্থে আল্লাহর বাণী: (.. یَهۡدِیۡهِمۡ رَبُّهُمۡ بِاِیۡمَانِهِمۡ ۚ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِهِمُ الۡاَنۡهٰرُ..) “...তাদের রব তাদের ঈমানের কারণে তাদের লক্ষস্থলে অর্থাৎ জান্নাতে পৌছাবেন যার তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে...।” (সূরা ইউনুস ১০: ৯)।
মুল্লা আলী ক্বারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, অর্থাৎ তাদের ঈমানের নূরের কারণে আখিরাতে তাদের জান্নাতের পথে পরিচালিত করবেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)