৫৫৮৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা

৫৫৮৬-[২১] আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: জাহান্নাম হতে সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত এবং সর্বশেষে জান্নাতে প্রবেশকারীকে আমি খুব ভালোভাবেই চিনি। সে এমন এক লোক, যে হামাগুড়ি দিয়ে জাহান্নাম থেকে বের হয়ে আসবে। আল্লাহ তা’আলা বলবেন, যাও, তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর। তোমাকে জান্নাতে দুনিয়ার সমপরিমাণ এবং তার দশগুণ জায়গা দেয়া হলো। তখন সে বলবে, হে প্রভু! আপনি কি আমার সাথে হাসি-ঠাট্টা করছেন? অথচ আপনি তো (সকল বাদশাহর) বাদশাহ! ইবনু মাস্’উদ (রাঃ) বলেন, আমি দেখলাম, এ কথাটি বলে রাসূলুল্লাহ (সা.) এমনভাবে হাসলেন যে, তার মাড়ির দাত পর্যন্ত প্রকাশ হয়ে পড়ল। আর বলা হয়, এ লোক মর্যাদার দিক দিয়ে হবে জান্নাতীদের সর্বনিম্ন স্তরের। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب الْحَوْض والشفاعة )

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنِّي لَأَعْلَمُ آخِرَ أَهْلِ النَّارِ خُرُوجًا مِنْهَا وَآخِرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ دُخُولًا رَجُلٌ يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ حَبْوًا. فَيَقُولُ اللَّهُ: اذْهَبْ فَادْخُلِ الْجَنَّةَ فَإِنَّ لَكَ مِثْلَ الدُّنْيَا وَعَشَرَةَ أَمْثَالِهَا. فَيَقُولُ: أَتَسْخَرُ مِنِّي - أَوْ تَضْحَكُ مِنِّي - وَأَنْتَ الْمَلِكُ؟ وَلَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ضَحِكَ حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ وَكَانَ يُقَالُ: ذَلِكَ أَدْنَى أَهْلِ الْجَنَّةِ مَنْزِلَةً. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (6571) و مسلم (308 / 186)، (461) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن عبد الله بن مسعود قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اني لاعلم اخر اهل النار خروجا منها واخر اهل الجنة دخولا رجل يخرج من النار حبوا. فيقول الله: اذهب فادخل الجنة فان لك مثل الدنيا وعشرة امثالها. فيقول: اتسخر مني - او تضحك مني - وانت الملك؟ ولقد رايت رسول الله صلى الله عليه وسلم ضحك حتى بدت نواجذه وكان يقال: ذلك ادنى اهل الجنة منزلة. متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (6571) و مسلم (308 / 186)، (461) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: সর্বশেষে যাকে জান্নাতে দেয়া হবে সে ধারণা করবে যে, জান্নাত মনে হয় ভরে গেছে। এটা আল্লাহ তা'আলার দেয়া জান্নাতের বর্ণনা বা আকৃতি অনুসারে বলবে। সে বলবে, হে আল্লাহ! আমি তো জান্নাত পরিপূর্ণ পেলাম! অর্থাৎ আমার জন্য সেখানে কোন জায়গা নেই, আমি কোথায় যাব? আল্লাহ তা'আলা তখন তাকে বলবেন, তুমি যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর, এখানে ‘জান্নাত’ দ্বারা জিনস্ উদ্দেশ্য অথবা খাস জান্নাত। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা বলবেন, তোমার জন্য দুনিয়া সমপরিমাণ প্রশস্ত অথবা মূল্যমান জান্নাত দেয়া হলো সাথে আরো তার দশগুণ। এতে আল্লাহ তা'আলার ঐ বাণীর দিকে ইশারা রয়েছে যেখানে ইরশাদ হয়েছে:
(مَنۡ جَآءَ بِالۡحَسَنَۃِ فَلَهٗ عَشۡرُ اَمۡثَالِهَا...) “যে নেক কাজ করবে তার জন্য দশগুণ সাওয়াব রয়েছে...।” (সূরাহ আল আ'আম ৬ : ১৬০)
মু'মিন যখন দুনিয়া বর্জন করে তখন সে আর অধিকারের ক্ষেত্রে একপ্রকার অবরুদ্ধ ও বন্দি হয়ে যায়। অতএব তখন তাকে ইনসাফের ভিত্তিতে তার সমপরিমাণ প্রতিদান দেয়া হয় তার আল্লাহ তা'আলা স্বীয় অনুগ্রহে তা কয়েকগুণে বৃদ্ধি করেন।
এসব কথা শুনে বান্দা সহজে তা বিশ্বাস করতে চাইবে না, ফলে সে আল্লাহ তা'আলাকে বলবে, হে আল্লাহ! তুমি ভূমণ্ডল ও নভোমণ্ডলের মালিক, পূতঃপবিত্র, তুমি আমার সাথে হাসি-ঠাট্টা করছ?
হাদীসের বাক্যে (أَتَسْخَرُ مِنِّي - أَوْ تَضْحَكُ مِنِّي - وَأَنْتَ الْمَلِكُ؟) এখানে (أَوْ) হলো রাবীর সন্দেহ। অর্থাৎ জান্নাতে প্রবেশমুখী লোকটি (أَتَسْخَرُنِىْ) বলবে না, (أَتَضْحَكُ نِىْ) বলবে, এটা রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে সঠিক স্মরণ নেই। যদি (أَتَضْحَكُ نِىْ) শব্দটিই বাস্তবে হয়ে থাকে তাহলে সেটা (أَتَسْخَرُنِىْ) এর অর্থই প্রদান করবে। কেননা (ساخر) বা উপহাসকারী যাকে নিয়ে উপহাস করে তাকে দেখে হাসে, তাই (ضحك) হাসিকে রূপকার্থে ঠাট্টার স্থানে আনা হয়েছে।
(أَتَسْخَرُنِىْ) “তুমি আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করছ’, এ কথার অর্থ নিয়ে কয়েকটি মত রয়েছে।
(মিরক্বাতুল মাফাতীহ, ফাতহুল বারী ১১শ খণ্ড, ৫০১ পৃ. হা. ৬৫৭১; শারহুন নাবাবী ৩য় খণ্ড, হা, ৩০৮; তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৫০৬ পৃ.)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)