পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা
৫৫৭৪-[৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: আমার শাফা’আত লাভের ব্যাপারে কিয়ামতের দিন সেই ব্যক্তিই সর্বাপেক্ষা সৌভাগ্যবান হবে, যে তার অন্তর বা মন থেকে একান্ত সচ্ছতা সহকারে ’লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলেছে। (বুখারী)
الفصل الاول (بَاب الْحَوْض والشفاعة )
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: أَسْعَدُ النَّاسِ بِشَفَاعَتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ خَالِصا من قلبه أونفسه رَوَاهُ البُخَارِيّ
رواہ البخاری (99) ۔
(صَحِيح)
ব্যাখ্যা: কিয়ামতের দিন আল্লাহর নবীর শাফা'আত পাওয়ার মূল যোগ্যতা ও শর্ত হবে ঈমান, যার মূলমন্ত্র হলো ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ। ঈমান বাড়ে এবং কমে। অতএব এক যাররা পরিমাণ ঈমান থাকলেও সে সর্বশেষে শাফা'আতের আওতায় পড়বে। যে ব্যক্তি খালেস অন্তরে এই ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পাঠ করবে যাতে কোন প্রকার লৌকিকতা, কপটতা, সন্দেহ এবং শির্ক থাকবে না; কিয়ামতের দিন প্রথম পর্যায়েই সে শাফা'আত পেয়ে ধন্য হবে।
মু'মিনেরা প্রত্যেকেই শাফা'আতের সৌভাগ্য লাভ করবে, কিন্তু হাদীসে বর্ণিত খালেস অন্তরের মু'মিনগণ শাফা'আতের অধিক মাত্রা পেয়ে ধন্য হবে। তারা হাশরের ময়দানের মহাভীতিকর পরিস্থিতিতে (আরশের ছায়াতলে অথবা বিশেষ রহমতের আশ্রয় পাওয়ার) সুপারিশপ্রাপ্ত হবে, যা অন্যেরা পাবে না।
কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (أَسْعَدُ) ‘অধিক সৌভাগ্যবান'-এর দ্বারা এখানে উদ্দেশ্য: (أَاَسَّعَيْدُ) ‘সৌভাগ্যবান অর্থাৎ এটা সাধারণ সৌভাগ্যবান অর্থে ব্যবহৃত হবে। যেহেতু আহলে তাওহীদ ছাড়া কেউ শাফা'আতের মর্যাদা লাভ করতে পারবে না। অথবা এর দ্বারা উদ্দেশ্য ঐ ব্যক্তি যার ‘আমলের দ্বারা রহমত প্রাপ্তির অধিকারী এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না। সে আমার শাফা'আত পেয়ে ধন্য হবে।
আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, ইতোপূর্বে অতিবাহিত হয়েছে যে, শাফা'আত লাভের সৌভাগ্য তথা ঈমানের ফলশ্রুতিতে এবং তার জন্য অধিক আশা রাখার কারণে হবে অথবা আমলের কারণে হবে।
আর ‘আমল এবং ইয়াক্বীনের মারাতিব বা স্তর বিভিন্ন রয়েছে। অতএব স্তর ভিত্তিতেই মর্যাদার কম বেশি হবে। এজন্য (خَالِصًا) শব্দের তাক্বীদ (قَلْبِهِ) দ্বারা করা হয়েছে। অর্থাৎ (خَالِصًاكَائِنًامِنْ قَلْبِهِ) অন্তরের অন্তঃস্থল থেকেই যদি লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ হয় তবে সে শাফাআতের সর্বোচ্চ সৌভাগ্য লাভ করবে।
(মিরক্বাতুল মাফাতীহ, ফাতহুল বারী ১ম খণ্ড হা. ৯৯, ২৩৫ পৃ.)।