পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - হাশর
৫৫৩২-[১] সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কিয়ামতের দিন মানবমণ্ডলীকে লাল-শ্বেত মিশ্রিত এমন এক সমতল ভূমিতে একত্রিত করা হবে যেমন তা সাফাই করা আটার রুটির মতো। সে জমিনে কারো (ঘর বা ইমারতের) কোন চিহ্ন থাকবে না। (বুখারী ও মুসলিম)
الفصل الاول (بَاب الْحَشْر)
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى أَرْضٍ بَيْضَاءَ عَفْرَاءَ كَقُرْصَةِ النَّقِيِّ لَيْسَ فِيهَا عَلَمٌ لأحدٍ» . مُتَّفق عَلَيْهِ
متفق علیہ ، رواہ البخاری (6521) و مسلم (28 / 2790)، (7055) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
ব্যাখ্যা: (أَرْضٍ عَفْرَاءَ) খত্ত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (الْعَفَرُ) হলো সাদা যা তুষারশুভ্র নয়। কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (الْعَفَرُ) এমন সাদা যাকে কিছুটা লাল করা হয়। এজন্য বলা হয়, (عَفَرُالْأَرْضِ) তা হচ্ছে জমিনের উপরিভাগ। ইবনু ফারিস বলেন, (عَفْرَاءَ) অর্থ নির্ভেজাল সাদা। দাউদী বলেন, (شَدِيدَةُ الْبَيَاضِ) প্রচুর সাদা। তিনি বলেন, প্রথম অর্থটি অধিক নির্ভরযোগ্য।
(كَقُرْصَةِ ا لنَّقِيِّ) আটা যা ভেজাল ও আবর্জনামুক্ত। এটা খত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ)-এর মত।
(لَيْسَ فِيهَا مَعْلَمٌ لِأَحَدٍ) অন্য বর্ণনায় (مَعْلَم) রয়েছে। (عَلَمٌ) ও (مَعْلَم) একই অর্থে ব্যবহার হয়। খত্তাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো চিহ্ন। (مَعْلَم) মীম ও লাম বর্ণের যবর এবং এ দুটোর মাঝে ‘আইন সাকিন। আর তা এমন জিনিস যার দ্বারা পথের নির্দেশনা লাভ করা যায়। কাযী ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ)। বলেন, উদ্দেশ্য হলো তাতে কোন বসবাস, বাড়িঘর বা প্রাচীন ঐতিহ্যের কোন চিহ্ন নেই। আর নেই তাতে এমন কোন প্রকারের নিদর্শন যাতে পথের দিশা পাওয়া যায়। যেমন- পাহাড় বা স্পষ্ট বড় প্রস্তরখণ্ড। আবূ মুহাম্মাদ ইবনু জামরাহ্ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন- এতে আল্লাহর মহান ক্ষমতার দলীল রয়েছে। আর এর দ্বারা কিয়ামত দিবসের আনুসাঙ্গিক বিষয়াদি জানানো যায়। যাতে শ্রোতারা জাগ্রত জ্ঞানসম্পন্ন হতে পারে এবং এ বিপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে। কারণ কোন কিছুতে পতিত হওয়ার পূর্বে তার বিশেষ বিষয়াদি সম্পর্কে জানা থাকলে অন্তরকে প্রস্তুত ও উদ্দীপ্ত করা যায়। হঠাৎভাবে আপতিত হতে হয় না। সে দিনটা হবে ন্যায়নীতি কায়িম করার দিন ও হক প্রকাশের দিন। অতএব হিকমতের দাবী হলো যে স্থানে এসব কিছু হবে সে স্থানটা গুনাহ ও যুলুমের কর্মকাণ্ডমুক্ত থাকবে। আর এতে মু'মিন বান্দাদের নিকটে আল্লাহ তা'আলা তার মর্যাদার সাথে উপযুক্ত জমিনে সমাসীন হবেন। কারণ সেখানে কর্তৃত্ব শুধুমাত্র এক আল্লাহর জন্য নিবেদিত ও নির্ধারিত, আর সে স্থান শুধুমাত্র তার জন্য হওয়াই সমীচিন। [সংক্ষেপিত] (ফাতহুল বারী ১১ খণ্ড, হা. ৬৫২১)