পরিচ্ছেদঃ ১৩. স্বপ্নে জামা, কূপ, দুধ, মধূ, ঘি, খেজুর ও অন্যান্য জিনিস দেখা
২২০২. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, মদীনাবাসী এক মহিলা ছিল যার স্বামী ছিল একজন ব্যবসায়ী। সে (ব্যবসায় লাভের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্থানে) বারবার যাতায়াত করতো। আর যখনই তার স্বামী তার কাছ থেকে অনুপস্থিত থাকতো, তখনই সে স্বপ্ন দেখতো। কিন্তু তার গর্ভাবস্থায় তাকে রেখে তার স্বামী খুব কমই বাইরে যেতো। এমতাবস্থায় সে মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বললো: আমার স্বামী ব্যবসা উপলক্ষ্যে বাইরে যাতায়াত করেন। যখন তিনি আমাকে গর্ভাবস্থায় রেখে বাইরে গেলেন, তখন ঘুমন্ত ব্যক্তি যেরূপ (স্বপ্ন) দেখে, আমি তদ্রুপ (স্বপ্নে) দেখলাম যে, আমার ঘরের একটি খুঁটি ভেঙ্গে গিয়েছে এবং আমি একটি কানা সন্তান প্রসব করেছি।
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “ভাল। ইন্শা আল্লাহু তা’আলা তোমার স্বামী তোমার নিকট ভালভাবেই ফিরে আসবে এবং তুমি একটি নেককার সন্তান প্রসব করবে।”
এরপর সে এ স্বপ্নটি আরো দু’বার বা তিনবার দেখলো। আর প্রত্যেক বারই সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বলতো এবং তিনি তাকে (একথাই) বলতেন এবং তার স্বামীও ফিরে আসতো। আর সে একটি করে সন্তান প্রসব করতো। এরপর সে পূর্বে যেভাবে আসতো, সেভাবেই একদিন সে মহিলা এলো, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুপস্থিত ছিলেন। আর সে ঐ স্বপ্নই দেখেছিল। তখন আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর দাসী! তুমি কী ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করবে?
সে বললো, আমি যে স্বপ্ন দেখেছি, তা। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসেন, তখন আমি তাঁকে সেই (স্বপ্নের) ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তম কথা বলেন এবং তিনি যেমন বলেন, তেমনই হয়।
তখন আমি তাকে বললাম, তুমি আমাকে তোমার স্বপ্নে কথা বলো দেখি। সে বললো, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসবেন, তখন আমি তাঁকে আমার স্বপ্নের কথা বলবো, যেমন আগে বলতাম।
কিন্তু আল্লাহর কসম! সে আমাকে তা না বলা পর্যন্ত আমি তাকে ছাড়লাম না। (এরপর যখন সে তার স্বপ্নের কথা বললো) তখন আমি বললাম, আল্লাহর কসম! তোমার স্বপ্ন সত্য হলে, (এর অর্থ) অবশ্যই তোমার স্বামী মারা যাবে এবং তুমি একটি পাপাচারী সন্তান জন্ম দেবে। তখন সে কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়লো। সে বলতে লাগলো, আমি তোমার কাছে কেন আমার স্বপ্ন বলতে গেলাম?
তার কান্নারত অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করলেন। তখন তিনি তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “হে আয়িশা! এর কি হয়েছে?”
আমি তাঁকে তার এ (স্বপ্নের) ঘটনাটি জানালাম এবং আমি এর যে ব্যাখ্যা দিয়েছি তাও বললাম।
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “হে আয়িশা! থামো। তুমি কোনো মুসলিমের স্বপ্নের তা’বীর (ব্যাখ্যা) করলে, তার কল্যাণকর ব্যাখ্যা দেবে। কেননা, ব্যাখ্যা দাতা যেখাবে ব্যাখ্যা দেবে, স্বপ্ন সেভাবেই বাস্তবায়িত হবে।”আল্লাহর কসম! এরপর তার স্বামী মৃত্যুবরণ করলো এবং আমি তাকে একটি পাপাচারী সন্তান জন্ম দিতে দেখলাম।[1]
بَاب فِي الْقُمُصِ وَالْبِئْرِ وَاللَّبَنِ وَالْعَسَلِ وَالسَّمْنِ وَالتَّمْرِ وَغَيْرِ ذَلِكَ فِي النَّوْمِ
أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ بْنُ يَعِيشَ حَدَّثَنَا يُونُسُ هُوَ ابْنُ بُكَيْرٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ إِسْحَقَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ كَانَتْ امْرَأَةٌ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ لَهَا زَوْجٌ تَاجِرٌ يَخْتَلِفُ فَكَانَتْ تَرَى رُؤْيَا كُلَّمَا غَابَ عَنْهَا زَوْجُهَا وَقَلَّمَا يَغِيبُ إِلَّا تَرَكَهَا حَامِلًا فَتَأْتِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَقُولُ إِنَّ زَوْجِي خَرَجَ تَاجِرًا فَتَرَكَنِي حَامِلًا فَرَأَيْتُ فِيمَا يَرَى النَّائِمُ أَنَّ سَارِيَةَ بَيْتِي انْكَسَرَتْ وَأَنِّي وَلَدْتُ غُلَامًا أَعْوَرَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرٌ يَرْجِعُ زَوْجُكِ عَلَيْكِ إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى صَالِحًا وَتَلِدِينَ غُلَامًا بَرًّا فَكَانَتْ تَرَاهَا مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا كُلُّ ذَلِكَ تَأْتِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيَقُولُ ذَلِكَ لَهَا فَيَرْجِعُ زَوْجُهَا وَتَلِدُ غُلَامًا فَجَاءَتْ يَوْمًا كَمَا كَانَتْ تَأْتِيهِ وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غَائِبٌ وَقَدْ رَأَتْ تِلْكَ الرُّؤْيَا فَقُلْتُ لَهَا عَمَّ تَسْأَلِينَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا أَمَةَ اللَّهِ فَقَالَتْ رُؤْيَا كُنْتُ أُرَاهَا فَآتِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَسْأَلُهُ عَنْهَا فَيَقُولُ خَيْرًا فَيَكُونُ كَمَا قَالَ فَقُلْتُ فَأَخْبِرِينِي مَا هِيَ قَالَتْ حَتَّى يَأْتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَعْرِضَهَا عَلَيْهِ كَمَا كُنْتُ أَعْرِضُ فَوَاللَّهِ مَا تَرَكْتُهَا حَتَّى أَخْبَرَتْنِي فَقُلْتُ وَاللَّهِ لَئِنْ صَدَقَتْ رُؤْيَاكِ لَيَمُوتَنَّ زَوْجُكِ وَتَلِدِينَ غُلَامًا فَاجِرًا فَقَعَدَتْ تَبْكِي وَقَالَتْ مَا لِي حِينَ عَرَضْتُ عَلَيْكِ رُؤْيَايَ فَدَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهِيَ تَبْكِي فَقَالَ لَهَا مَا لَهَا يَا عَائِشَةُ فَأَخْبَرْتُهُ الْخَبَرَ وَمَا تَأَوَّلْتُ لَهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَهْ يَا عَائِشَةُ إِذَا عَبَرْتُمْ لِلْمُسْلِمِ الرُّؤْيَا فَاعْبُرُوهَا عَلَى الْخَيْرِ فَإِنَّ الرُّؤْيَا تَكُونُ عَلَى مَا يَعْبُرُهَا صَاحِبُهَا فَمَاتَ وَاللَّهِ زَوْجُهَا وَلَا أُرَاهَا إِلَّا وَلَدَتْ غُلَامًا فَاجِرًا
তাখরীজ: ((মুহাক্বিক্ব এর কোনো তাখরীজ দেননি।–অনুবাদক))