পরিচ্ছেদঃ ১৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সাক্ষাৎ ত্যাগ, সম্পর্কচ্ছেদ ও দোষান্বেষণে নিষেধাজ্ঞা
৫০৩৮-[১২] আবুদ্ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি কি তোমাদের এমন কাজ সম্পর্কে বলব না, যার সাওয়াবের মর্যাদা সিয়াম (রোযা), সাদাকা ও সালাতের চেয়েও বেশি? আবুদ্ দারদা(রাঃ) বলেন, তখন আমরা বললামঃ হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেনঃ সে কাজ হলো, দু’জন মুসলিমের মধ্যে আপোষ করানো। যে ব্যক্তি ঝগড়া ও বিপর্যয় সৃষ্টি করে, সে যেন মস্তক মুণ্ডনকারী। [আবূ দাঊদ ও তিরমিযী; আর ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ হাদীসটি সহীহ।][1]
وَعَنْ أَبِي
الدَّرْدَاءِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِأَفْضَلَ من درجةِ الصِّيامِ والصدقةِ وَالصَّلَاة؟» قُلْنَا: بَلَى. قَالَ: «إِصْلَاحُ ذَاتِ الْبَيْنِ وَفَسَادُ ذَاتِ الْبَيْنِ هِيَ الْحَالِقَةُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ صَحِيح
ব্যাখ্যাঃ (مِنْ دَرَجَةِ الصِّيَامِ وَالصَّدَقَةِ) আশরাফ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এ ‘আমল দ্বারা উদ্দেশ্য নফল, ফরয না। অর্থাৎ দু‘জন মুসলিমের মাঝে আপোষ করানো নফল সিয়াম, সালাত ও সাদাকা হতে উত্তম। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
(إِصْلَاحُ ذَاتِ الْبَيْنِ) অর্থাৎ ঐ সৎ গুণের অবতারণা, যা দ্বারা জাতির মধ্যে সম্প্রীতি, ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠা করা হয়। যেমন- মহান আল্লাহ বলেনঃ وَاللهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ ‘‘আর আল্লাহ অন্তরের সকল বিষয় সম্যক অবগত’’- (সূরাহ্ আ-লি ‘ইমরা-ন ৩ : ১৫৪)। এটাও বলা হয়ে যাকে যে, (ذَاتِ الْبَيْنِ) (দু’জন মুসলিমের মধ্যে আপোষ-মীমাংসা করানো )-এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো দু’জনের মধ্যকার ঝগড়া বিবাদ এবং সম্পর্ক বিচ্ছেদের অবসান ঘটানো। (الْبَيْنِ) বলা হয় বিচ্ছিন্নতা ও দলাদলিকে।
(وَفَسَادُ ذَاتِ الْبَيْنِ هِيَ الْحَالِقَةُ) অর্থাৎ এটা এমন একটা গুণাবলী যা দীনকে মুণ্ডন করে এবং সমূলে উৎপাটন করে। যেমন খুর বা ব্লেড চুলকে মুণ্ডন করে। অত্র হাদীসে উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে দু’জনের মাঝে মীমাংসা করার ব্যাপারে আর উভয়ের মাঝে দ্বন্দ্ব লাগানোকে নিষেধ করা হয়েছে কারণ সংশোধন এর মাঝে আল্লাহর রজ্জুকে মজবুত করে ধরার উপায় আছে। এ কাজে মুসলিমের মাঝে বিচ্ছেদ হবে না। আর দু’জনের মাঝে বিশৃঙ্খলা লাগানো দীনের জন্য বিষফোড়া। অতএব যে ব্যক্তি উভয়ের মধ্যে সংশোধনের চেষ্টা করবে এবং বিশৃঙ্খলা দূর করবে, সে ঐ ব্যক্তির চেয়ে বেশি মর্যাদাবান হবে। যে কেবলমাত্র সিয়াম পালন করে ও গোপনে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৯১১; তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৫০৬)