পরিচ্ছেদঃ ১৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - সৃষ্টির প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ
৪৯৪৭-[১] জারীর ইবনু ’আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করে না, আল্লাহ তার প্রতি অনুগ্রহ করেন না। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ الشَّفَقَةِ وَالرَّحْمَةِ عَلَى الْخَلْقِ
عَن جَرِيرِ بْنِ عَبْدُ اللَّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَرْحَمُ اللَّهُ مَنْ لَا يَرْحَمُ النَّاسَ» . مُتَّفق عَلَيْهِ
ব্যাখ্যাঃ দয়া বা রহমত আল্লাহ তা‘আলাই তার বান্দাদের অন্তকরণে দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা তার বান্দাদের মধ্যে দয়াশীলদেরকেই দয়া করেন। ইবনু বাত্ত্বল (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ অধ্যায়ের উদ্দেশ্য হলো রহমত দয়ার বিষয়টিকে আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করা, এটা আল্লাহ তা‘আলার সত্ত্বাগত গুণাবলীর অন্তর্গত। সুতরাং রহমান হচ্ছে আল্লাহর একটি গুণ এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ যাকে দয়া করবেন তাকে তিনি সেই গুণটি দান করবেন এবং তাকে তার দয়ার ছায়ায় আশ্রয় দিবেন। তিনি আরো বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলার সব নামের মূলকথা একটা নামকে কেন্দ্র করেই, আর সে নামটি হলো ‘‘আল্লাহ’’, যদিও প্রতিটি নামে ভিন্ন ভিন্ন গুণ রয়েছে। ইবনু ত্বীন (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ ‘‘রহমান এবং রহীম’’ এ দু’টি শব্দ রহমত মূল ধাতু থেকে গৃহীত। কেউ কেউ বলেন, এ দু’টি শব্দ স্বতন্ত্রভাবেই দু’টি নাম।
ইমাম খত্ত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ জামহূর ‘উলামায়ে কিরাম বলেন, ‘‘রহমান’’ নামটি ‘রহমত’ থেকে গৃহীত আরবী ব্যকরণ অনুপাতে মুবালাগাহ্ বা আধিক্যতার অর্থবাচক শব্দ। এর অর্থ এমন দয়া প্রদর্শনকারী যার কোন জুড়ি নেই। এজন্য আরবী ব্যকরণ অনুপাতে এ শব্দের কোন দ্বিবচন ও বহুবচন নেই। ইমাম খত্ত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ) আরো বলেনঃ অতএব ‘রহমান’ হলেন এমন নাম যার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা সমগ্র সৃষ্টিজীবকে রহমত করে থাকেন। অপরদিকে ‘‘রহীম’’ অর্থ যে নামের মাধ্যমে আল্লাহ কেবলমাত্র মু’মিনদের দয়া করে থাকেন, যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَكَانَ بِالْمُؤْمِنِينَ رَحِيمًا অর্থাৎ ‘‘আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি সর্বদাই দয়াশীল’’- (সূরাহ্ আল আহযাব ৩৩ : ৪৩)। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, ‘রহমান’ ও ‘রহীম’ এ দু’টি নাম অত্যন্ত দয়ার্দ্র নাম, এর একটির চাইতে আরেকটি দ্বারা বেশী দয়ার কথা বুঝায়। (ফাতহুল বারী ১৩শ খন্ড, হাঃ ৭৩৭৬)