পরিচ্ছেদঃ ১৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - অনুগ্রহ ও স্বজনে সদাচার
৪৯১২-[২] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রা (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তার নাক ধুলোয় মলিন হোক, তার নাক ধূলোয় মলিন হোক, তার নাক ধূলোয় মলিন হোক (তথা অপদস্থ হোক)। তিনি জনৈক সাহাবী কর্তৃক জিজ্ঞাসিত হলেন, হে আল্লাহর রসূল! কে সে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ যে ব্যক্তি নিজের পিতা-মাতার কোন একজনকে বা উভয়কে বার্ধক্য অবস্থায় পেল, অথচ (তাদের খিদমাত করে) সে জান্নাতে প্রবেশ করল না। (মুসলিম)[1]
بَابُ الْبِرِّ وَالصِّلَةِ
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رَغِمَ أَنْفُهُ رَغِمَ أَنْفُهُ رَغِمَ أَنْفُهُ» . قِيلَ: مَنْ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «مَنْ أَدْرَكَ وَالِدَيْهِ عِنْدَ الْكِبَرِ أَحَدَهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا ثمَّ لم يدْخل الْجنَّة» . وَرَاه مُسلم
ব্যাখ্যাঃ (رَغِمَ أَنْفُهٗ) অর্থাৎ তার নাক ধূলোয় মলিন হোন। এটা দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, সে ব্যক্তি অপদস্থ হোক। নিহায়াহ্ গ্রন্থে বলা হয়েছে, তাঁর নাক মাটিতে মিলিয়ে দিক। আলোচ্য হাদীসে মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান ধ্বংস হোক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ সে নিতান্তই হতভাগা ও কপাল পোড়া। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৯ম খন্ড, হাঃ ৩৫৪৫)
(لَمْ يَدْخُلِ الْجَنَّةَ) পিতামাতার অবাধ্য হওয়ার কারণে এবং তাদের অধিকার যথাযথ পালন না করার কারণে সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এর অর্থ হলো পিতামাতার বৃদ্ধ বয়সে ও তাদের দুর্বল অবস্থায় তাদের প্রতি খরচ করা ও তাদের খিদমাতের মাধ্যমে তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করা জান্নাত লাভের অন্যতম মাধ্যম। সুতরাং কোন ব্যক্তি এই কাজে কমতি করলে জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাবে। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ ‘সে জান্নাতে প্রবেশ করল না’; এর অর্থ হলো সে অপমানিত ও লজ্জিত হবেন এবং ধ্বংস হবে। যে ব্যক্তি ঐ সুযোগ পেল যা তাকে সফলতা ও জান্নাত দানে ধন্য করবে এরূপ সুযোগ যে কাজে লাগাতে পারল না। সে মহান আল্লাহর বাণীকে কাজে লাগাতে পারেনি। মহান আল্লাহ বলেন, وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا ‘‘...আর পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো। তাদের একজন বা তাদের উভয়ে যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে বিরক্তি বা অবজ্ঞাসূচক কথা বলো না...’’- (সূরাহ্ বানী ইসরাঈল ১৭ : ২৩)। তিনি আরো বলেন, وَقُلْ رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا ‘‘...বল, হে আমার প্রতিপালক! তাদের প্রতি দয়া কর যেমনভাবে তারা আমাকে শৈশবে লালন পালন করেছেন’’- (সূরাহ্ বানী ইসরাঈল ১৭ : ২৪)। এ আয়াতগুলো যাবতীয় হারাম কথা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ করে এবং যাবতীয় ভালো কথা ও কাজ করার প্রতি আদেশ করে। দুনিয়াতে তাদের প্রতি সদয় হও। তাদের খিদমাত করতে ও মৃত্যুর পর তাদের জন্য জান্নাত লাভের দু‘আ করার জন্য নির্দেশ করে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)