পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জিহ্বার হিফাযাত, গীবত এবং গালমন্দ প্রসঙ্গে
৪৮৩৭-[২৬] ’উকবাহ্ ইবনু ’আমির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সাক্ষাৎ করে জিজ্ঞেস করলামঃ (হে আল্লাহর রসূল!) মুক্তির উপায় কি? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি নিজের জিহ্বাকে আয়ত্তে রাখো, নিজের ঘরে পড়ে থাকো এবং নিজের পাপের জন্য ক্রন্দন করো। (আহমাদ ও তিরমিযী)[1]
وَعَن عُقْبةَ
بن عامرٍ قَالَ: لَقِيتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: مَا النَّجَاةُ؟ فَقَالَ: «أَمْلِكْ عَلَيْكَ لِسَانَكَ وَلْيَسَعْكَ بَيْتُكَ وَابْكِ عَلَى خَطِيئَتِكَ» . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যাঃ ‘‘লোকটি প্রশ্ন করেছিল, মুক্তি কিসে বা মুক্তির উপায় কি?’’ অর্থাৎ কোন কাজ করলে আল্লাহর ‘আযাব এবং অসন্তুষ্টি থেকে মুক্তির পাওয়া যাবে? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমার জন্য যে কথায় কোন কল্যাণ নেই সে কথা থেকে বিরত থাক। তোমার জিহ্বার উপর তোমার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা কর।’
‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জওয়াবটি ছিল একটি বিজ্ঞচিত রীতিতে। লোকটি প্রশ্ন করেছিল মুক্তির হাকীকাত সম্পর্কে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে মুক্তির কারণ বলে দিলেন। কেননা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এটাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আরো বললেন, তোমার ঘরকে তোমার জন্য প্রশস্ত কর। এর অর্থ হলো তুমি তোমার ঘরেই অবস্থান কর। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হয়ো না এবং সর্বদা ঘরে অবস্থানে বিরক্ত হয়ো না, বরং এটাকে নিজের জন্য গনীমাত মনে কর। কেননা সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক নানা অনিষ্টতা এবং ফিৎনাহ্ থেকে মুক্তি বা বেঁচে থাকার এটাই প্রকৃষ্ট পন্থা। বলা হয়ে থাকে ‘‘নীরব থাকার জন্য ঘরের প্রকোষ্ঠে অবস্থান আবশ্যক।’’
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকটিকে অতীতের গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে কান্না-কাটি করে ক্ষমা প্রার্থনার পরামর্শ দিলেন। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ ‘কান্না’ শব্দের মধ্যে রয়েছে লজ্জিত হওয়া এবং অনুশোচনা প্রকাশ করা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৪০৬)