৪৮২০

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - জিহ্বার হিফাযাত, গীবত এবং গালমন্দ প্রসঙ্গে

৪৮২০-[৯] আবুদ্ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয় অধিক অভিসম্পাতকারীরা কিয়ামতের দিন সাক্ষ্যদাতা হবে না এবং সুপারিশকারীও হবে না। (মুসলিম)[1]

بَابُ حِفْظِ اللِّسَانِ وَالْغِيبَةِ وَالشَّتَمِ

وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ اللَّعَّانِينَ لَا يَكُونُونَ شُهَدَاءَ وَلَا شُفَعَاء يَوْم الْقِيَامَة» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي الدرداء قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «ان اللعانين لا يكونون شهداء ولا شفعاء يوم القيامة» . رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ পূর্বের হাদীসে আলোচিত হয়েছে মু’মিন ব্যক্তি অভিসম্পাতকারী হবে না। একজন মু’মিন আরেক মু’মিনকে অভিসম্পাত করা নীচ ও হীন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। এতে ব্যক্তির শরাফত-ভদ্রতা ও ন্যায়পরায়ণতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়। তাই কিয়ামতের দিন সে মু’মিন হিসেবে পূর্ব জাতির জন্য সাক্ষ্যদানকারী। অথবা সুপারিশকারী হতে পারবে না।

স্মর্তব্য যে, কিয়ামতের দিন পূর্ববর্তীর নবীর উম্মাতেরা তাদের নবীদের রিসালাত ও দা‘ওয়াতকে অস্বীকার করে বলবে, ‘‘আমাদের কাছে কোন আহবানকারী আসেনি এবং তাওহীদের দা‘ওয়াতও পেশ করেনি’’। আল্লাহ তা‘আলা তখন ঐ সময়ের নবীদের ডেকে তাদের নিকট সাক্ষী তলব করবেন। তখন নবীগণ উম্মাতে মুহাম্মাদীকে সাক্ষী হিসেবে পেশ করবেন। উম্মাতে মুহাম্মাদী আল কুরআনে বর্ণিত পূর্ব জাতির ইতিহাস পাঠ করে তাদের কৃতকর্ম জানার কারণে নবীদের দা‘ওয়াতের সত্যতার সাক্ষী প্রদান করবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ

(وَكَذٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا لِتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ) ‘‘আমি এভাবেই তোমাদেরকে মধ্যমপন্থী জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি, যাতে তোমরা মানবজাতির জন্য সাক্ষী হও’’- (সূরাহ্ আল বাকারাহ্ ২ : ১৪৩)।

‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ অত্র আয়াতে উল্লেখিত الْوَسَط শব্দের অর্থ হলো الْعَدْل ন্যায়পরায়ণতা। অভিসম্পাত عَدَالَةِ বা ন্যায়পরায়ণতাকে বিলোপ করে, আর আদিল বা ন্যায়পরায়ণ নয় এমন ব্যক্তির সাক্ষী গ্রহণযোগ্য নয়।

ব্যাখ্যাকারগণ বলেছেনঃ তারা (লা‘নাত করার কারণে) ফাসিকে পরিণত হয়েছে। সুতরাং ফাসিকের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। তাই কিয়ামতের দিন তারা কোন সাক্ষী হতে পারবেন না এবং সুপারিশের মর্যাদাও পাবে না। কিয়ামতের দিন সুপারিশের অধিকার বা মর্যাদা হলো নবীদের এবং শাহীদদের জন্য খাস, এই মর্যাদা আল্লাহ মু’মিনদেরও দিনে। মু’মিনদের যে মর্যাদা দিবেন লা‘নাত বা অভিসম্পাতের কারণে সেই মর্যাদা বিলোপ হয়ে যাওয়ায় কিন্তু (কিয়ামতের দিন) তাদের কোন সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না। এটা অবশ্য তাদের বেলায় যারা এ কাজে অভ্যস্ত, ঘটনাক্রমে দু‘এক বারের দ্বারা এই মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হবে না।

(মিরক্বাতুল মাফাতীহ; শারহুন নাবাবী ১৬শ খন্ড, হাঃ [২৫৯৮]-৮৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবুদ দারদা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)