৪৫৮৮

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - শুভ ও অশুভ লক্ষণ

৪৫৮৮-[১৩] বুরয়দাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন কিছুতে অশুভ লক্ষণ গ্রহণ করতেন না। তাঁর অভ্যাস ছিল, তিনি যখন কোথাও কোন কর্মচারী পাঠাতে ইচ্ছা করতেন, তখন তার নাম জিজ্ঞেস করতেন। যদি তার নাম ভালো হত তাতে তিনি খুশি হতেন এবং খুশির রেখা তাঁর চেহারায় ফুটে উঠত। আর যদি তাঁর নাম মন্দ হত, তখন তাঁর চেহারায় অসন্তুষ্টির ভাব প্রকাশ পেত। যখন তিনি কোন লোকালয়ে প্রবেশ করতেন, তখন তার নাম জিজ্ঞেস করতেন। যদি তার নাম তার পছন্দমতো হত, আনন্দিত হতেন এবং খুশির ভাব তাঁর চেহারায় ফুটে উঠত। কিন্তু যদি তার নাম অপছন্দনীয় হত, তার ভাবও তাঁর চেহারায় পরিলক্ষিত হত। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ بُرَيْدَةَ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ لَا يَتَطَيَّرُ مِنْ شَيْءٍ فَإِذَا بَعَثَ عَامِلًا سَأَلَ عَنِ اسْمِهِ فَإِذَا أَعْجَبَهُ اسْمه فَرح بِهِ ورئي بشر ذَلِك على وَجْهِهِ وَإِنْ كَرِهَ اسْمَهُ رُئِيَ كَرَاهِيَةُ ذَلِكَ على وَجْهِهِ وَإِذَا دَخَلَ قَرْيَةً سَأَلَ عَنِ اسْمِهَا فَإِنْ أَعْجَبَهُ اسْمُهَا فَرِحَ بِهِ وَرُئِيَ بِشْرُ ذَلِكَ فِي وَجْهِهِ وَإِنْ كَرِهَ اسْمَهَا رُئِيَ كَرَاهِيَة ذَلِك فِي وَجهه. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن بريدة: ان النبي صلى الله عليه وسلم كان لا يتطير من شيء فاذا بعث عاملا سال عن اسمه فاذا اعجبه اسمه فرح به ورىي بشر ذلك على وجهه وان كره اسمه رىي كراهية ذلك على وجهه واذا دخل قرية سال عن اسمها فان اعجبه اسمها فرح به ورىي بشر ذلك في وجهه وان كره اسمها رىي كراهية ذلك في وجهه. رواه ابو داود

ব্যাখ্যাঃ (كَانَ لَا يَتَطَيَّرُ مِنْ شَيْءٍ) অর্থাৎ তিনি কোন জিনিসকে কুলক্ষণ মনে করেন না, মানুষ সাধারণত যাকে কুলক্ষণ মনে করে।

(فَإِذَا بَعَثَ عَامِلًا) অর্থাৎ কোন স্থানে কোন শ্রমিককে পাঠানোর ইচ্ছা করেন।

(فِي وَجْهِه) তার নামের দ্বারা অশুভ লক্ষণ মনে করে নয়, বরং শুভ লক্ষণ আনয়ন করার জন্য। তিনি সেই খারাপ নাম পরিবর্তন করে সুন্দর নাম রেখে দিতেন।

ইমাম বাযযার এবং ‘ত্ববারানী’র ‘‘আওসাত্ব’’ কিতাবে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, যখন তোমরা কোন ব্যক্তির কাছে কাউকে প্রেরণ করবে তখন সুন্দর চেহারার কাউকে এবং সুন্দর নামের কাউকে প্রেরণ করবে।

ইবনুল মালিক (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ সুন্নাত হলো কোন ব্যক্তি তার ছেলের ও তার খাদেমের জন্য সুন্দর নাম চয়ন করবে। কেননা অপছন্দনীয় নাম কখনও তার তাকদীরের সাথে মিলে যায়। যেমন- কোন ব্যক্তি তার ছেলের নাম রাখল খসারাহ (ক্ষতিগ্রস্ত)। অতঃপর তার জীবনে আল্লাহর বিধান অনুপাতে কখনও ক্ষতি হয়ে গেল। ফলে কতিপয় লোক এরূপ বিশ্বাস রাখবে যে, এটি হয়েছে তার নামের কারণে। সুতরাং লোকেরা তাকে কুলক্ষণ মনে করে তাদের বসার ও মিলিত হওয়ার স্থান থেকে তাকে সরিয়ে দিবে।

‘‘শারহুস্ সুন্নাহ্’’ কিতাবে আছে, মানুষের জন্য অবশ্যই কর্তব্য হলো সে তার সন্তান ও তার খাদেমদের জন্য সুন্দর নাম চয়ন করবে। কেননা অপছন্দনীয় নাম কখনও তাকদীরের সাথে মিলে যায়।

সা‘ঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব (রহিমাহুল্লাহ) বর্ণনা করেন যে, ‘উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) এক ব্যক্তিকে প্রশ্ন করেন, তোমার নাম কী? সে বলল, জাযরাহ্। তিনি বললেন, তোমার পিতার নাম কী? সে বলল, ইবনু শিহাব। তিনি বলনেন, তুমি কোথা থেকে এসেছ? সে জবাব দিল, ‘‘হারাকাহ্’’-তে। তিনি বললেন, তোমার বাড়ী কোথায়? সে বলল, হাররাতুন্ নার। তিনি বললেন, এটা কোথায়? সে বলল, ‘লাযা’ এলাকায়। ‘উমার (রাঃ) বললেন, তুমি তোমার পরিবারের কাছে গিয়ে দেখবে তারা পুড়ে গেছে। ‘উমার (রাঃ) যেমন বলেছিলেন ঠিক ঘটেছিলও তাই।

মুল্লা ‘আলী কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ সঠিক দিক থেকে হাদীসটি এভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, জাহিলী যুগে তারা তাদের সন্তানদের নাম রাখত খারাপ নামে। যেমন কুকুর, বাঘ, সিংহ। আর তাদের দাসদের নাম রাখত রাশিদ (সঠিক পথের অনুসারী), নাজীহ (সফলতা লাভকারী) ইত্যাদি। তাদের বক্তব্য ছিল এরূপ যে, আমাদের সন্তানেরা আমাদের শত্রু। আর আমাদের খাদেমগণ আমাদের নিজেদের জন্য। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৩৯১৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৩: চিকিৎসা ও ঝাড়-ফুঁক (كتاب الطب والرقى)