পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৪৫৭২-[৫৯] আবূ কাবশাহ্ আল আনমারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিষমিশ্রিত বকরীর মাংস খাওয়ার কারণে নিজের মাথার তালুতে শিঙ্গা লাগান। মা’মার বলেন, বিষের কোন প্রতিক্রিয়া না থাকা সত্ত্বেও আমি আমার মাথার তালুতে শিঙ্গা লাগালাম। ফলে আমার স্মরণশক্তি লোপ পায়। এমনকি সালাতের মধ্যে আমাকে সূরাহ্ আল ফাতিহাহ্ বলে দিতে হত। (রযীন)[1]
الْفَصْلُ الثَّالِثُ
وَعَن أبي كَبْشَة الْأَنْمَارِيِّ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ احْتَجَمَ عَلَى هَامَتِهِ مِنَ الشَّاةِ الْمَسْمُومَةِ قَالَ مَعْمَرٌ: فَاحْتَجَمْتُ أَنَا مِنْ غَيْرِ سُمٍّ كَذَلِكَ فِي يَافُوخِي فَذَهَبَ حُسْنُ الْحِفْظِ عَنِّي حَتَّى كُنْتُ أُلَقَّنُ فَاتِحَةَ الْكِتَابِ فِي الصَّلَاةِ. رَوَاهُ رزين
ব্যাখ্যাঃ (احْتَجَمَ عَلٰى هَامَتِه) অর্থাৎ তার মাথার মাঝখানে অথবা তালুতে। (مِنَ الشَّاةِ الْمَسْمُومَةِ) অর্থাৎ তা খাওয়ার এবং বিষের প্রভাবের কারণে, এ বিষক্রিয়ার প্রভাবের কারণে প্রতি বছর তিনি শিঙ্গা লাগাতেন। যে বছর তিনি মারা যান, মরার সময় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছিলেন, ‘‘এখন আমার আবহারী রগটি ছিঁড়ে গেছে’’ এর কারণে তিনি শাহাদাতের সৌভাগ্য লাভ করেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ইয়াহূদী মাহিলা বিষমিশ্রিত বকরীর গোশত হাদিয়া দিলে তিনি তার সাহাবীদেরকে নির্দেশ দেন যে, তোমরা বিসমিল্লা-হ বলে ভক্ষণ কর, সুতরাং তারা তা খেয়ে ফেলল। অথচ তাদের কারো কোন ক্ষতি হয়নি। এটি হাকিম (রহিমাহুল্লাহ) বর্ণনা করেছেন তার মুসতাদরাকের মধ্যে। তিনি এটি আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণনা করেছেন। আর বলেছেন যে, এর সানাদ সহীহ। সিরাজ প্রণেতাও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
মুবারক (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এতে আমার ভাবার বিষয় আছে, যখন প্রসিদ্ধ হাদীস প্রণেতাগণ, জীবনীকারগণ, ইতিহাসবিদগণ বর্ণনা করেছেন যে, কোন সাহাবী সেই বিষ-মিশ্রিত বকরীর গোশত খাননি কেবল বিশর ইবনু বারা’ ইবনু মা‘রূর ব্যতীত। তিনি এক লোকমা খেয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই বকবীর গোশত ঢেলে দিতে অথবা মাটির নিচে পুঁতে দিতে বলেন। তারা মতভেদ করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি সেই ইয়াহূদী মহিলাকে হত্যা করার নির্দেশ দেন, না তাকে মাফ করে দেন। সঠিক মত হলো তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার পক্ষ থেকে তাকে মাফ করে দেন। তবে বিশর ইবনু বারা’ ইবনু মা‘রূর এর হত্যার ক্বিসাস স্বরূপ তাকে হত্যা করার নির্দেশ দেন। আর আমি মনে করি এ বর্ণনার মধ্যে কঠিন ভুল অথবা পবিত্র অপছন্দ রয়েছে। মহান আল্লাহই ভালো জানেন। আমি বলছি যদি হাকিম-এর বর্ণনাটি বিশুদ্ধও হয় তবে সম্ভবত তার বর্ণনাটিও বেশি হবে। আল্লাহই ভালো জানেন।
(مِنْ غَيْرِ سُمٍّ كَذٰلِكَ) অর্থাৎ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে কারণে লাগিয়ে ছিলেন ঐ রকম কারণ ব্যতীত। এটি ছিল রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অতিরিক্ত অনুসরণ করার কারণে। অথবা তিনি ধারণা করেছিলেন যে, মাথার মাঝখানে শিঙ্গা লাগানো কাজটা বিষের কারণে না হলেও উপকারী হবে। তাই আমি শিঙ্গা লাগালাম।
(فِي الصَّلَاةِ) তার বর্ণনা দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, তার এ সমস্যা সাময়িক কিছুদিনের জন্য ছিল। তারপর তিনি সুস্থ হয়ে যান। সম্ভবত এটা হয়েছিল তার অধিক রক্ত রক্ষণের কারণে। আর তার শিঙ্গা লাগানো যথাযথ কারণে হয়নি। মহান আল্লাহই ভালো জানেন। এছাড়া অনেক হাদীসে বলা হয়েছে যে, শিঙ্গা লাগানো অনেক উপকারী চিকিৎসা। এতে অনেক রোগ হতে আরোগ্য লাভ হয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)