৪৫২১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৫২১-[৮] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, আমার ভাইয়ের ডায়রিয়া হয়েছে। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। সে মধু পান করাল। সে আবার এসে বলল : আমি তাকে মধু পান করিয়েছি, এতে তার ডায়রিয়া আরো বেড়ে গেছে। এভাবে তিনি তাঁকে তিনবার বললেন (অর্থাৎ- ডায়রিয়া ক্রমশ বেড়ে যাওয়ার কথা জানালো)। অতঃপর সে চতুর্থবার এসে অভিযোগ করল। এবারও তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। সে বলল : আমি অবশ্যই তাকে মধু পান করিয়েছি, কিন্তু তার ডায়রিয়া আরো বেড়ে গিয়েছে। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ (তাঁর কালামে) যা বলেছেন, তা সত্য, তোমার ভাইয়ের পেট মিথ্যা (অর্থাৎ- পেটে দূষিত কোন কিছু রয়েছে।) অতঃপর আবার তাকে মধু পান করাল এবং সে আরোগ্য লাভ করল। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: أَخِي اسْتَطْلَقَ بَطْنُهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اسقيه عسَلاً» فَسَقَاهُ ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ: سَقَيْتُهُ فَلَمْ يَزِدْهُ إِلَّا اسْتِطْلَاقًا فَقَالَ لَهُ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ. ثُمَّ جَاءَ الرَّابِعَةَ فَقَالَ: «اسْقِهِ عَسَلًا» . فَقَالَ: لَقَدْ سَقَيْتُهُ فَلَمْ يَزِدْهُ إِلَّا اسْتِطْلَاقًا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صَدَقَ اللَّهُ وَكَذَبَ بَطْنُ أَخِيكَ» . فَسَقَاهُ فَبَرَأَ

وعن ابي سعيد الخدري قال: جاء رجل الى النبي صلى الله عليه وسلم فقال: اخي استطلق بطنه فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اسقيه عسلا» فسقاه ثم جاء فقال: سقيته فلم يزده الا استطلاقا فقال له ثلاث مرات. ثم جاء الرابعة فقال: «اسقه عسلا» . فقال: لقد سقيته فلم يزده الا استطلاقا فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «صدق الله وكذب بطن اخيك» . فسقاه فبرا

ব্যাখ্যাঃ আলোচ্য হাদীসে ডায়রিয়া বা পেটের পীড়ায় মধুর ব্যবহার সম্পর্কে স্পষ্ট বর্ণনা এবং উপকারিতার প্রমাণ বর্ণিত হয়েছে। কোন বর্ণনায় তিনবার মধু সেবন, আবার অন্য বর্ণনায় চারবারের কথাও বর্ণিত হয়েছে। কোন কোন বর্ণনায় আবার রোগের অবস্থা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। সহীহ মুসলিমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেটের পীড়ার অভিযোগকারী ব্যক্তিকে তিনবার মধু ব্যবহার করার নির্দেশনা দেয়ার পর সে আবার এসে একই অভিযোগ পেশ করলে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনরায় তাকে মধু সেবনের নির্দেশ প্রদান করেন। অতঃপর সে আরোগ্য লাভ করে। আলোচ্য হাদীসের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, কখনও পথ্য সেবনের পর রোগ বৃদ্ধি পেতে পারে। অতএব এতে শংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই।

নাস্তিকদের কেউ কেউ এ হাদীসের ব্যাপারে সমালোচনা করেছেন এই বলে যে, মধু লঘুপাক জাতীয় পানীয়। অতএব ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীকে কিভাবে এটি পথ্য হিসেবে সেবনের পরামর্শ দেয়া হলো? এর উত্তরে মুহাদ্দিসীনে কিরাম বলেনঃ তারা এমন বিষয়ে অভিযোগ উত্থাপন করেছে যে বিষয়টি সম্পর্কে তাদের কোন ধারণাই নেই। আল্লাহ তা‘আলা আল কুরআনে উল্লেখ করেছেন : ‘‘তারা সে বিষয়টিকে মিথ্যা বলেছে যে সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা নেই’’- (সূরাহ্ ইউনুস ১০ : ৩৯)।

চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, বয়স, প্রকৃতি, সময়, খাবার ও পরিবেশভেদে একই রোগের ভিন্ন ভিন্ন চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। হাদীসে উল্লেখিত ব্যক্তির অবস্থা ছিল যে, কোন ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার দরুন তার ডায়রিয়ার সূচনা হয়েছিল। মধু সেবনের কারণে সেই ভাইরাসগুলো পেটের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে এবং পেটের ক্ষতিকর সকল উপাদানগুলোকে বের করে দেয়। সে কারণেই তার ডায়রিয়ার পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। পরিশেষে সকল ক্ষতিকর উপাদান নির্গমনের পর তা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। ইমাম খত্ত্বাবী-এর মতে, চিকিৎসা পদ্ধতি দু’ ধরনের, একটি হচ্ছে গ্রীক, যা অনুমান নির্ভর। দ্বিতীয়টি হচ্ছে অভিজ্ঞতা নির্ভর। এটি হচ্ছে ‘আরব ও হিন্দ দেশীয় পদ্ধতি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আরবীয় চিকিৎসা পদ্ধতির অনুসরণেই বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপত্র প্রদান করতেন। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৫৭১৬)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৩: চিকিৎসা ও ঝাড়-ফুঁক (كتاب الطب والرقى)