৪৪৯২

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - ছবি সম্পর্কে বর্ণনা

৪৪৯২-[৪] উক্ত রাবী [’আয়িশাহ্ সিদ্দিকা (রাঃ)] হতে বর্ণিত। একদিন তিনি একটি গদি (আসন) ক্রয় করলেন। তাতে প্রাণীর অনেকগুলো ছবি ছিল। যখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা দেখলেন, দরজায় দাঁড়িয়ে গেলেন, ঘরে প্রবেশ করলেন না। আমি তাঁর চেহারায় ঘৃণার ভাব দেখতে পেলাম। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, তখন আমি বললামঃ হে আল্লাহর রসূল! আমি (আমার গুনাহের জন্য) আল্লাহ ও তাঁর রসূল-এর কাছে তওবা্ করছি। বলুন তো, আমি কি অপরাধ করেছি? তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ গদিটি কেন? আমি বললামঃ আপনার বসার এবং বিছানা হিসেবে ব্যবহার করার জন্য আমি কিনেছি। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সমস্ত ছবি যারা তৈরি করেছে, কিয়ামতের দিন তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে এবং তাদেরকে বলা হবে, যা তোমরা বানিয়েছ তাতে জীবন দান করো, অতঃপর বললেন, মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) কখনো এমন ঘরে প্রবেশ করেন না, যে ঘরে (প্রাণীর) ছবি থাকে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ التَّصَاوِيرِ

وَعَنْهَا أَنَّهَا اشْتَرَتْ نُمْرُقَةً فِيهَا تَصَاوِيرُ فَلَمَّا رَآهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَامَ عَلَى الْبَابِ فَلَمْ يَدْخُلْ فَعَرَفْتُ فِي وَجْهِهِ الْكَرَاهِيَةَ قَالَتْ: فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أتوبُ إِلى الله وإِلى رَسُوله مَا أذنبتُ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا بَالُ هَذِهِ النُّمْرُقَةِ؟» قُلْتُ: اشْتَرَيْتُهَا لَكَ لِتَقْعُدَ عَلَيْهَا وَتَوَسَّدَهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ أَصْحَابَ هَذِهِ الصُّوَرِ يُعَذَّبُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيُقَالُ لَهُمْ: أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ . وَقَالَ: «إِنَّ الْبَيْتَ الَّذِي فِيهِ الصُّورَةُ لَا تدخله الْمَلَائِكَة»

وعنها انها اشترت نمرقة فيها تصاوير فلما راها رسول الله صلى الله عليه وسلم قام على الباب فلم يدخل فعرفت في وجهه الكراهية قالت: فقلت: يا رسول الله اتوب الى الله والى رسوله ما اذنبت؟ فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ما بال هذه النمرقة؟» قلت: اشتريتها لك لتقعد عليها وتوسدها فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ان اصحاب هذه الصور يعذبون يوم القيامة ويقال لهم: احيوا ما خلقتم . وقال: «ان البيت الذي فيه الصورة لا تدخله الملاىكة»

ব্যাখ্যাঃ ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, তিনি ছোট একটি গদি ক্রয় করেছিলেন যাতে প্রাণীর ছবি অংকিত ছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাড়ীতে প্রবেশকালে যখন তা দেখতে পেলেন। তিনি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে গেলেন প্রবেশ করলেন না।

(فَعَرَفْتُ فِي وَجْهِهِ الْكَرَاهِيَةَ) আমি তার চেহারায় অপছন্দের ছাপ (রাগ) দেখতে পেলাম। অতঃপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি তাওবাহ্ করছি এবং আল্লাহ ও তার রসূলের সন্তুষ্টি কামনা করছি। ইমাম ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এতে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর উত্তম শিষ্টাচারের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে, ফলে অপরাধ বুঝার আগেই তাওবাহ্ করে ফেলেছেন।

(مَا أذنبتُ) আমি বুঝতে পারিনি যে, কিসে গুনাহের কাজ হল? তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ চাদরটি এখানে কেন? আমি বললাম, এটা আপনার জন্য ক্রয় করেছি যাতে আপনি তাতে বসতে পারেন এবং বালিশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। (‘আয়িশাহ্ (রাঃ) তখনো অপছন্দের সঠিক কারণ জানতে পারেননি, তিনি ধারণা করেছেন সম্ভবত তা বাড়ীর কারুকাজ বর্ধিত করেছে সেজন্য তিনি অপছন্দ করেছেন। মূলত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছবির কারণে রাগ করেছিলেন।’’

(فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: "إِنَّ أَصْحَابَ هٰذِهِ الصُّوَرِ يُعَذَّبُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيُقَالُ لَهُمْ: أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ") অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ নিশ্চয় এ ছবি অঙ্কনকারীদেরকে কিয়ামতের দিন শাস্তি প্রদান করা হবে এবং বলা হবে, তোমরা যা তৈরি করেছ তাকে জীবন দান কর। কেননা তারা ছবি তৈরির মাধ্যমে আল্লাহর সৃষ্টির সামঞ্জস্য বিধান করেছে। ফলে তাদের অক্ষমতা প্রমাণ করতেই আল্লাহ জীবিত করার আদেশ করবেন।

এ হাদীস থেকে বুঝা যায়, ছবি অঙ্কন করা হারাম এবং তা ব্যবহার করাও নিষিদ্ধ। কেননা তাতে কঠিন শাস্তিত রয়েছে এবং দুনিয়ার সাজসজ্জা রয়েছে।

(وَقَالَ: إِنَّ الْبَيْتَ الَّذِىْ فِيهِ الصُّورَةُ) এবং তিনি আরো বলেন, যে বাড়ীতে/ঘরে ছবি থাকে সেই বাড়ীতে/ঘরে মালাক (ফেরেশতা) প্রবেশ করে না। হাদীস থেকে আরো জানা যায় যে, বাড়ীতে যে কোন ধরনের ছবি (যার রূহ আছে এবং যার রূহ নেই) এবং যে কোন স্থানে (প্রবেশদ্বারে বা চলালের রাস্তায় বা ঘরে) সাজিয়ে রাখা নিষেধ। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس )