পরিচ্ছেদঃ ৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - চুল আঁচড়ানো
৪৪৮৪-[৬৬] হাজ্জাজ ইবনু হাসসান (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা (শিশুকালে) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-এর নিকট গেলাম। আমার ভগ্নি মুগীরাহ্ সেদিনকার ঘটনাটি আমাকে (এভাবে) বর্ণনা করেছেন যে, তুমি তখন ছোট বাচ্চা ছিলে। তোমার চুলের দু’টি বেণি অথবা দু’টি গুচ্ছ ছিল। তখন আনাস (রাঃ) তোমার মাথার উপরে হাত ফিরিয়ে তোমার জন্য বারাকাতের দু’আ করলেন এবং বললেনঃ তার এ বেণি দু’টি কেটে ফেলো অথবা বলেছেনঃ মুড়িয়ে ফেলো। কেননা এটা ইয়াহূদীদের আচরণ। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَن الحجاح بْنِ حَسَّانَ قَالَ دَخَلْنَا عَلَى أَنَسِ بْنِ مَالك فَحَدَّثَتْنِي أُخْتِي الْمُغِيرَةُ قَالَتْ: وَأَنْتَ يَوْمَئِذٍ غُلَامٌ وَلَكَ قَرْنَانِ أَوْ قُصَّتَانِ فَمَسَحَ رَأْسَكَ وَبَرَّكَ عَلَيْكَ وَقَالَ: «احْلِقُوا هَذَيْنِ أَوْ قُصُّوهُمَا فَإِنَّ هَذَا زِيُّ الْيَهُود» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
য‘ঈফ হওয়ার কারণ, এর সনদে মুগীরাহ্ বিনতু হাস্সান (حسّن) নামে একজন বর্ণনাকারী আছে, যে মাকবূলাহ্ (مقبولة)। তার ব্যাপারে ইমাম মুনযিরী (রহিমাহুল্লাহ) চুপ থেকেছেন। আলবানী (রহিমাহুল্লাহ) সিলসিলাতুয্ য‘ঈফাতে ৯০০ নং-এ বলেছেনঃ সানাদ য‘ঈফ। হাফিয ইবনু হাজার আল ‘আসকালানী (রহিমাহুল্লাহ) ‘‘আত্ তাকরীবে’’ তাকে মাকবূলাহ্ বলেছেন।
ব্যাখ্যাঃ (دَخَلْنَا) আমি ও আমার পরিবার প্রবেশ করলাম। (فَحَدَّثَتْنِي أُخْتِي الْمُغِيرَةُ) অতঃপর আমাকে বোন মুগীরাহ্ হাদীস বর্ণনা করলেন। (وَأَنْتَ يَوْمَئِذٍ) যখন তুমি আনাস (রাঃ)-এর নিকট গিয়েছিলেন। (غُلَامٌ) ছোট ছেলে। (وَلَكَ قَرْنَانِ) তখন তোমার মাথায় চুলের দু’টি বেনী ছিল। (أَوْ قُصَّتَانِ) অথবা কপালের উপর চুলের দু’টি বেনী ছিল। কোন কোন বর্ণনাকারী (أَوْ) ‘আও’ বলে সন্দেহ পোষণ করেছেন। (فَمَسَحَ) অতঃপর আনাস ইবনু মালিক মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।
এক্ষেত্রে ‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী (রহিমাহুল্লাহ) ভুল করে ضمير-কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দিকে ফিরিয়েছেন। এটা তার স্পষ্ট ভুল ধারণ। (وَبَرَّكَ عَلَيْكَ থ والله اعلم) তোমার বারাকাতের জন্য দু‘আ করলেন এবং বললেন, তোমার চুলের এই বেনী দু’টিকে চেছে ফেল অথবা কেটে ফেল, কেননা এটা ইয়াহূদীদের নিদর্শন এবং তাদের সন্তানদের মাথায় চুল রাখার অভ্যাস। সুতরাং এর বৈপরীত্য আনয়ন কর।
শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ্ (রহিমাহুল্লাহ) ‘সিরাতুল মুসতাকিম’ গ্রন্থে বলেনঃ চুল বেনী করে শিং তৈরি করা নিষেধ হওয়ার কারণ হলো এটা ইয়াহূদীদের একটা নিদর্শন। অতএব এ কারণে ইসলাম এটাকে অপছন্দ করেছে। আর এ থেকে এটাও জানা যায় যে, ইয়াহূদীদের সকল কাজের বিরোধিতা করা উচিত। এমনকি চুল রাখার ক্ষেত্রেও। তবে কপালের উপরিভাগে যদি একগুচ্ছ চুল রাখা হয় এটাতে কোন সমস্যা নেই। কেননা এটাতে ইয়াহূদীদের সামঞ্জস্যতা নেই। এছাড়া হাদীস থেকে আরো জানা যাচ্ছে যে, মাথার চুল রঙ করা ইয়াহূদীদের কাজ, ইসলামের সুন্নাত নয়। অতএব বাচ্চাদেরকে এ থেকে বিরত রাখা এবং তাদের মাথা মুণ্ডন করা উচিত। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪১৯৩)