৪৩৪৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩৪৪-[৪১] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে লক্ষ্য করে বললেনঃ হে ’আয়িশাহ্! যদি তুমি (ইহকাল ও পরকালে) আমার সান্নিধ্য লাভের ইচ্ছা রাখো, তবে দুনিয়ার সম্পদ থেকে এ পরিমাণই নিজের জন্য যথেষ্ট মনে করো, যে পরিমাণ একজন মুসাফিরের পাথেয় হিসেবে যথেষ্ট হয় এবং ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সাহচর্য হতে বেঁচে থাকো, আর তালি না লাগানো পর্যন্ত কোন কাপড়কে পুরাতন (ব্যবহারে অনুপযোগী) ধারণা করো না। (তিরমিযী)[1]

ইমাম তিরমিযী বলেছেনঃ এ হাদীসটি গরীব। কেননা আমরা হাদীসটি সালিহ ইবনু হাসসান ব্যতীত অন্য কোন সূত্রে অবহিত হইনি। আর মুহাম্মাদ ইবনু ইসমা’ঈল (বুখারী) বলেছেনঃ সালিহ ইবনু হাসসান মুনকারুল হাদীস।

الْفَصْلُ الثَّانِي

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا عَائِشَةُ إِذَا أَرَدْتِ اللُّحُوقَ بِي فَلْيَكْفِكِ مِنَ الدُّنْيَا كَزَادِ الرَّاكِبِ وَإِيَّاكِ وَمُجَالَسَةَ الْأَغْنِيَاءِ وَلَا تَسْتَخْلِقِي ثَوْبًا حَتَّى تُرَقِّعِيهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لَا نَعْرِفُهُ إِلَّا مِنْ حَدِيثِ صَالِحِ بْنِ حَسَّانَ قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ: صَالِحُ بْنُ حَسَّانَ مُنكر الحَدِيث

وعن عاىشة قالت قال لي رسول الله صلى الله عليه وسلم: «يا عاىشة اذا اردت اللحوق بي فليكفك من الدنيا كزاد الراكب واياك ومجالسة الاغنياء ولا تستخلقي ثوبا حتى ترقعيه» . رواه الترمذي وقال: هذا حديث غريب لا نعرفه الا من حديث صالح بن حسان قال محمد بن اسماعيل: صالح بن حسان منكر الحديث

ব্যাখ্যাঃ ইমাম তিরমিযী নিজেই তাঁর জামি‘ কিতাবে এ হাদীসটি উল্লেখ করে হাদীসটির একটি অংশ (وَإِيَّاكِ وَمُجَالَسَةَ الْأَغْنِيَاءِ) এর ব্যাখ্যায় সহীহ মুসলিমের একটি হাদীস উল্লেখ করেছেন। হাদীসটি হলো : আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ

إِذَا نَظَرَ أَحَدُكُمْ إِلٰى مَنْ فُضِّلَ عَلَيْهِ فِى الْمَالِ وَالْخَلْقِ فَلْيَنْظُرْ إِلٰى مَنْ هُوَ أَسْفَلَ مِنْهُ مِمَّنْ فُضِّلَ عَلَيْهِ

‘‘তোমাদের কারো দৃষ্টি যদি এমন ব্যক্তির ওপর নিপতিত হয়, যাকে সম্পদে ও দৈহিক গঠনে বেশি মর্যাদা দেয়া হয়েছে তাহলে সে যেন তার চেয়ে অধিক সম্পদশালীকে বাদ দিয়ে এমন ব্যক্তির দিকে তাকায়, যে তার চেয়ে হীন অবস্থায় রয়েছে।’’ (সহীহ মুসলিম হাঃ ৭৬১৭)

জামি‘ আত্ তিরমিযীতে হাদীসটি উল্লেখের পর ‘আওন ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহিমাহুল্লাহ)-এর উক্তি উল্লেখ করেছেন, ‘আওন ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উতবাহ্  বলেন,

صَحِبْتُ الأَغْنِيَاءَ فَلَمْ أَرَ أَحَدًا أَكْثَرَ هَمًّا مِنِّي أَرٰى دَابَّةً خَيْرًا مِنْ دَابَّتِي وَثَوْبًا خَيْرًا مِنْ ثَوْبِي وَصَحِبْتُ الْفُقَرَاءَ فَاسْتَرَحْتُ

‘‘আমি ধনীদের সাথে উঠা-বসা করেছি। আমি নিজের চেয়ে বেশী বিষণ্ণ অন্য কাউকে অনুভব করি না। (আমার ভারাক্রান্ত হৃদয় হওয়ার কারণ এই যে,) আমি তাদের বাহনকে আমার বাহনের চেয়ে উত্তম দেখতে পাই এবং তাদের কাপড়কে আমার কাপড়ের চেয়ে উত্তম দেখতে পাই। আর আমি গরীব লোকেদের সাথে মেলামেশা করে অনেক বেশী শান্তি অনুভব করেছি।’’

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার প্রিয়তমা স্ত্রী ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে উদ্দেশ্য করে বলেন, হে ‘আয়িশাহ্! তুমি যদি জান্নাতে আমার সাথে আমার মর্যাদার স্তরে থাকতে চাও তাহলে দুনিয়ায় সহজ-সরল বিষয় নিয়েই সন্তুষ্ট থাকো। কারণ নিশ্চয় তুমি শেষ পরিণতির দিকে চলতে থাকা একজন পথিক মাত্র। আর তুমি ধনীরা যেখানে থাকে, উঠাবসা করে সেখান থেকে দূরে থাকবে অর্থাৎ তাদের সাহচার্য থেকে সতর্ক থাকবে। আর তোমার কোন পরিধেয় কাপড় পুরাতন হলে সাথে সাথে ফেলে দিবে না। বরং সেটি সেলাই করে পরিধান করবে।

শারহুস্ সুন্নাহতে বর্ণিত হয়েছে, আনাস ইবনু মালিক  বলেন,

رَأَيْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ ؓ وَهُوَ يَوْمَئِذٍ أَمِيرُ الْمُؤْمِنِينَ وَقَدْ رَقَعَ ثَوْبَهُ بِرِقَاعٍ ثَلَاثٍ لَبَّدَ بَعْضَهَا فَوْقَ بَعْضٍ وَقِيلَ خَطَبَ عُمَرُ ؓ وَهُوَ خَلِيفَةٌ وَعَلَيْهِ إِزَارٌ فِيهِ اثْنَا عَشْرَة رُقْعَةً انْتَهٰى.

আমি ‘উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ)-কে দেখলাম, তিনি আমীরুল মু’মিনীন থাকাকালীন তাঁর কাপড়ে তিনটি তালি লাগিয়ে পরিধান করতে দেখেছি। তালিগুলোর কতিপয় তালি অন্যটির লাগানো হয়েছিল। আর এও বলা হয়েছে যে, একদিন খলীফাহ্ ‘উমার (রাঃ) খুত্ববাহ্ দিচ্ছিলেন, এমতাবস্থায় তাঁর কাপড়ে বারোটি তালি ছিল।  (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৭৮১)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২২: পোশাক-পরিচ্ছদ (كتاب اللباس )