পরিচ্ছেদঃ ৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - পানীয় দ্রব্যের বর্ণনা
৪২৭১-[৯] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রৌপ্য পাত্রে পান করে, বস্তুত সে যেন তার পেটের মধ্যে জাহান্নামের আগুনের ঢোক গিলে নেয়। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
আর মুসলিম-এর রিওয়ায়াতে আছে, যে ব্যক্তি রৌপ্য ও স্বর্ণের পাত্রে পানাহার করে.....।
بَابُ الْأَشْرِبَةِ
وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الَّذِي يَشْرَبُ فِي آنِيَةِ الْفِضَّةِ إِنَّمَا يُجَرْجِرُ فِي بَطْنِهِ نَارَ جَهَنَّمَ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ: «إِنَّ الَّذِي يَأْكُلُ وَيَشْرَبُ فِي آنِية الْفضة وَالذَّهَب»
ব্যাখ্যাঃ (الَّذِىْ يَشْرَبُ فِىْ آنِيَةِ الْفِضَّةِ) যে ব্যক্তি রৌপ্য পাত্রে পান করে। অন্য বর্ণনায় এসেছে, مَنْ شَرِبَ فِي إِنَاءٍ مِنْ ذَهَبٍ، أَوْ فِضَّةٍ যে পান করে স্বর্ণ রৌপ্যে পাত্রে। (সহীহ মুসলিম হাঃ ২-[২০৬৫])
(إِنَّمَا يُجَرْجِرُ) এটা এমন একটি আওয়াজ যা উট পুনারাবৃত্তি করে যাবাহের সময়।
অনুরূপ আওয়াজ ঘোড়ার চোয়ালে লাগাম লাগানোর সময় যা করে। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৫৬৩৪)
আর পানীয়কে আগুন নামকরণের কারণ হলো কেননা তা সে দিকে প্রত্যাবর্তিত হয়। যেমন আল্লাহ বলেনঃ
إِنَّ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ أَمْوَالَ الْيَتَامٰى ظُلْمًا إِنَّمَا يَأْكُلُونَ فِىْ بُطُونِهِمْ نَارًا
‘‘যারা ইয়াতীমদের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে খায়, তারা নিজেদের পেটে আগুনই ভর্তি করেছে...।’’ (সূরাহ্ আন্ নিসা ৪ : ১০)।
কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ হাদীসের মর্মার্থের বিষয়ে মতানৈক্য হলো কারও মতে এটা কাফিরদের জন্য সংবাদ। চাই তারা অনারবী রাষ্ট্রে হোক বা অন্য কোন রাষ্ট্রে হোক যারা অভ্যাসগতভাবে এমনটি করে থাকে। যেমন অন্য হাদীসে এসেছে, هِيَ لَهُمْ فِي الدُّنْيَا وَلَكُمْ فِي الْآخِرَةِ এটা কাফিরদের জন্য দুনিয়াতে আর তোমাদের জন্য আখিরাতে অনুরূপ রেশমী কাপড়ের ব্যাপারে। এটা কাফিররা দুনিয়াতে পরিধান করবে আখিরাতে তাদের জন্য হবে না।
আবার কারও মতে : এ নিষেধাজ্ঞা মুসলিমদের জন্য আর এই নিষেধাজ্ঞা শাস্তিকে ওয়াজিব করে, আল্লাহ তা ক্ষমাও করতে পারেন। এটা কাযীর ভাষ্য। সঠিক হলো এই নিষেধাজ্ঞা সকলের জন্য চাই মুসলিম হোক আর কাফির হোক। আর বাস্তব হলো শারী‘আতের শাখা-প্রশাখার বিষয়ে কাফিরদের জন্যও প্রযোজ্য।
আর সকল মুসলিম ঐকমত্য পোষণ করেছেন স্বর্ণ ও রৌপ্যের পাত্রে খাওয়া ও পান করা হারাম। চাই পুরুষ হোক আর নারী হোক। এ ব্যাপারে কেউ মতানৈক্য করেনি, তবে ‘ইরাকীরা বলেনঃ শাফি‘ঈদের পুরাতন বক্তব্য হলো তা অপছন্দ তথা ঘৃণিত, হারাম না। আর দাঊদ জাহিরী হতে বর্ণনা করেন, পানীয় হারাম। খাওয়া বৈধ আর সকল কার্যক্রম বৈধ। তবে এ দু’ বর্ণিত বক্তব্য বাতিল তথা অগ্রহণযোগ্য। (শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২০৬৫)