৪০৮৯

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৪০৮৯-[২৬] ’ইরবায ইবনু সারিয়াহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের দিন সর্বপ্রকার তীক্ষ্ণ দন্তধারী হিংস্র জন্তু, নখ ও থাবা দ্বারা শিকারী পাখি, গৃহপালিত গাধার মাংস এবং মুজাস্সামাহ্ ও খলীসাহ্ খেতে নিষেধ করেছেন। আর তিনি গর্ভবতী (দাসী)-এর সাথে তার গর্ভ খালাস হওয়া পর্যন্ত সঙ্গম করতেও নিষেধ করেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াহ্ইয়া বলেন : আবূ ’আসিমকে জিজ্ঞেস করা হলো, ’মুজাস্সামাহ্’ কি? তিনি বললেন, পাখি অথবা অন্য কোন প্রাণীকে বেঁধে তার প্রতি তীর নিক্ষেপ করা। আর খলীসাহ্ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, বাঘ অথবা হিংস্র পশু হতে যে ধৃত জন্তু কোন ব্যক্তি ছিনিয়ে নেয়; কিন্তু যাবাহ করার পূর্বেই তা তার হাতের মধ্যে মারা যায়। (তিরমিযী)[1]

الْفَصْلُ الثَّانِي

وَعَنِ الْعِرْبَاضِ بْنِ سَارِيَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى يَوْمَ خَيْبَرَ عَنْ كُلِّ ذِي نَابٍ مِنَ السِّبَاعِ وَعَنْ كُلِّ ذِي مِخْلَبٍ مِنَ الطَّيْرِ وَعَنْ لُحُومِ الْحُمُرِ الْأَهْلِيَّةِ وَعَنِ الْمُجَثَّمَةِ وَعَنِ الْخَلِيسَةِ وَأَنْ تُوطَأَ الْحَبَالَى حَتَّى يَضَعْنَ مَا فِي بُطُونِهِنَّ قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى: سُئِلَ أَبُو عَاصِمٍ عَنِ الْمُجَثَّمَةِ فَقَالَ: أَنْ يُنْصَبَ الطَّيْرُ أَوِ الشَّيْءُ فَيُرْمَى وَسُئِلَ عَنِ الْخَلِيسَةِ فَقَالَ: الذِّئْبُ أَوِ السَّبُعُ يُدْرِكُهُ الرَّجُلُ فَيَأْخُذُ مِنْهُ فَيَمُوتُ فِي يَدِهِ قَبْلَ أَنْ يذكيها. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن العرباض بن سارية ان رسول الله صلى الله عليه وسلم نهى يوم خيبر عن كل ذي ناب من السباع وعن كل ذي مخلب من الطير وعن لحوم الحمر الاهلية وعن المجثمة وعن الخليسة وان توطا الحبالى حتى يضعن ما في بطونهن قال محمد بن يحيى: سىل ابو عاصم عن المجثمة فقال: ان ينصب الطير او الشيء فيرمى وسىل عن الخليسة فقال: الذىب او السبع يدركه الرجل فياخذ منه فيموت في يده قبل ان يذكيها. رواه الترمذي

ব্যাখ্যাঃ হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে (نَهٰى يَوْمَ خَيْبَرَ) অর্থাৎ খায়বারের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন। খায়বারের দিন বলতে তিনটি উদ্দেশ্য হতে পারে,

১. যে বছর খায়বার বিজয় হয়েছে সেই বছর। ২. খায়বার বিজয় হওয়ার সময়। ৩. খায়বার যুদ্ধ চলাকালীন কোন একদিন।

(عَنْ كُلِّ ذِي نَابٍ مِنَ السِّبَاعِ) বলে চতুষ্পদ হিংস্র প্রাণী খাওয়া হতে নিষেধ করা হয়েছে। সেগুলো হলো যেমন, সিংহ, বাঘ, চিতাবাঘ, ভল্লুক, বানর, শুকর ইত্যাদি।

শারহুস্ সুন্নাহ গ্রন্থে বলা হয়েছে (ذِي نَابٍ) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো যেসব প্রাণীকে দাঁতওয়ালা হিসেবে গণ্য করা হয় এবং যেগুলো মানুষ ও তাদের ধন-সম্পদের উপর দাঁত দিয়ে আক্রমণ করতে পারে, যেমন- নেকড়ে বাঘ, কুকুর ইত্যাদি। আর (ذِي مِخْلَبٍ) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো যেসব প্রাণী নখ দিয়ে কেটে ছিড়ে খায়। যেমন- ঈগল, বাজপাখি, শুকর ইত্যাদি।

(الْخَلِيسَةِ) হলো হিংস্র প্রাণীর মুখ থেকে কেড়ে নেয়া শিকার। যেটা যাবাহ করার আগেই মারা যায়।

(أَنْ تُوطَأَ الْحَبَالَى حَتّٰى يَضَعْنَ مَا فِي بُطُونِهِنَّ) এ অংশের মাধ্যমে গর্ভবর্তী মহিলা গর্ভপাত না করা পর্যন্ত তার সাথে সহবাস করা থেকে নিষেধ করা হয়েছে। এর দ্বারা আপন স্ত্রী উদ্দেশ্য নয় বরং এর উদ্দেশ্য ভিন্ন। আর তা হলো যেমন কেউ গর্ভবতী দাসী পেল তাহলে সেই দাসী গর্ভপাত না করা পর্যন্ত তার সাথে সেই ব্যক্তি সহবাস করতে পারবে না। অনুরূপভাবে যদি কোন মহিলা যিনা করার কারণে গর্ভধারণ করে আর সেই গর্ভাবস্থায় যদি কোন ব্যক্তি তাকে বিবাহ করে তাহলে গর্ভপাত না হওয়া পর্যন্ত তার সাথে সহবাস করতে পারবে না।

আহনাফের কতিপয় ‘আলিম বলেনঃ যদি কোন ব্যক্তি যুদ্ধে বন্দি হিসেবে গর্ভবতী দাসী পায় তাহলে তার জন্য সেই দাসীর সাথে সহবাস করা বৈধ হবে না। যতক্ষণ না সেই দাসী গর্ভপাত করে। আর যদি গর্ভবতী না হয় তাহলে সেই দাসীর হায়য হওয়ার পর যখন রক্ত বন্ধ হবে তখন থেকে তার সাথে সহবাস করতে পারবে। তিবি বলেন, (الْخَلِيسَةُ) হলো যে প্রাণীকে নেকড়ে অথবা কোন হিংস্র প্রাণীর মুখ থেকে নেয়া হয়েছে এবং তাকে যাবাহ করার আগেই মারা গেছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৪৭৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২০: শিকার ও যাবাহ প্রসঙ্গে (كتاب الصيد والذبائح)