৪০৭৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪০৭৯-[১৬] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ভোরে আমি ’আবদুল্লাহ ইবনু আবূ ত্বলহাহ্-কে মিষ্টিমুখ করানোর জন্য রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে নিয়ে এলাম। তখন আমি তাঁকে এমন অবস্থায় পেলাম যে, তাঁর হাতে ছিল একখানা দাগ লাগানোর যন্ত্র। তা দ্বারা তিনি সাদাকা-যাকাতের উটগুলো দাগাচ্ছেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَن أنس قَالَ: غَدَوْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ لِيُحَنِّكَهُ فَوَافَيْتُهُ فِي يَدِهِ الْمِيسَمُ يَسِمُ إِبِلَ الصَّدَقَة

وعن انس قال: غدوت الى رسول الله صلى الله عليه وسلم بعبد الله بن ابي طلحة ليحنكه فوافيته في يده الميسم يسم ابل الصدقة

ব্যাখ্যাঃ মুহাল্লিব (রহিমাহুল্লাহ) ও অন্যান্যরা বলেনঃ অত্র হাদীস থেকে প্রমাণিত যে, রাষ্ট্রপ্রধান কেবলমাত্র দাগ দেয়ার যন্ত্রটি ধরতে পারবে অন্য কোন মানুষ তার মতো ধরতে পারবে না এবং সেটা আংটি বা সিল মোহরের ন্যায়।

এটা প্রমাণিত যে, রাষ্ট্রপ্রধান যাকাতের মালগুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখবে এবং নিজেও দেখাশুনার দায়িত্ব নিবে। এছাড়াও মুসলিমদের সার্বিক বিষয়েও খেয়াল রাখবে।

আর এটাও প্রমাণিত যে, প্রয়োজনে প্রাণীকে ব্যথা বা কষ্ট দেয়া বৈধ।

এবং এটাও প্রমাণিত যে, নবজাতক শিশুকে বারাকাত হাসিলের জন্য সৎ ব্যক্তিদের নিকটে নিয়ে যাওয়া।

এবং এটাও প্রমাণিত যে, বণ্টনের ক্ষেত্রে বিলম্ব করা জায়িয। কেননা যদি বণ্টন দ্রুত করা হয় তাহলে প্রাণীগুলো দাগ দেয়া থেকে অমুখাপেক্ষী হয়ে যাচ্ছে।

এবং এটাও প্রমাণিত যে, পেশাগত কাজ সরাসরি নিজেই করা অন্যকে দিয়ে না করা, অধিক সাওয়াবের আশায় এবং অহংকার-অহমিকা দূর করতে। (ফাতহুল বারী ৩য় খন্ড, হাঃ ১৫০২)

ব্যাখ্যাকার বলেনঃ মানুষকে দাগ দেয়া হারাম।

পক্ষান্তরে মানুষ ব্যতীত অন্য প্রাণীর ক্ষেত্রে চেহারায় দাগ দেয়া নিষেধ। আর যাকাত ও জিয্ইয়ার উটের ক্ষেত্রে চেহারা ব্যতীত দাগ দেয়া মুস্তাহাব। আর অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রে জায়িয।

যদি দাগ দিতে হয় তাহলে বকরীর কানে দাগ দেয়া মুস্তাহাব। আর উট ও গরুর উরুর মূলে, কেননা সেটি শক্ত জায়গা। তাই সেখানে কষ্ট কম হবে এবং চুল হালকা থাকে। আর দাগ প্রকাশ পাবে।

* দাগ দেয়ার উপকারিতা : কতিপয় প্রাণীকে কতিপয় প্রাণী থেকে পার্থক্য করা।

আর জিয্ইয়ার প্রাণীর ক্ষেত্রে جِزْيَةٌ (জিয্ইয়াহ্) অথবা صَغَارٌ (অপমান) লেখা মুস্তাহাব। আর যাকাতের প্রাণীর ক্ষেত্রে زَكَاةٌ (যাকাত) অথবা صَدَقَةٌ (সাদাকা) লেখা মুস্তাহাব।

ইমাম শাফি‘ঈ (রহিমাহুল্লাহ) ও তার অনুসারীরা বলেনঃ বকরীর দাগ দেয়ার যন্ত্রটি গরুর দাগ দেয়ার যন্ত্রটির চেয়ে হালকা হওয়া মুস্তাহাব। আর গরুর দাগ দেয়ার যন্ত্রটি উটের দাগ দেয়ার যন্ত্রটির চেয়ে হালকা হওয়া মুস্তাহাব। (শারহুন নাবাবী ১৪ খন্ড, হাঃ ২১১৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২০: শিকার ও যাবাহ প্রসঙ্গে (كتاب الصيد والذبائح)