৪০৬৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪০৬৬-[৩] আবূ সা’লাবাহ্ আল খুশানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি জিজ্ঞেস করলামঃ হে আল্লাহর নবী! আমরা আহলে কিতাবের (অর্থাৎ- ইয়াহূদী-নাসারাদের) এলাকায় বাস করি। সুতরাং আমরা কি তাদের পাত্রে খেতে পারি এবং এমন ভূমিতে বাস করি যেখানে শিকার পাওয়া যায়। আমি আমার তীর-ধনুক দ্বারা এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দ্বারাও শিকার করি। অতএব আমার জন্যে কোনটি (খাওয়া) সঠিক হবে? তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আহলে কিতাবের পাত্র সম্পর্কে তুমি যা বললে, যদি তোমরা তাদের পাত্র ছাড়া অন্য পাত্র পাও, তখন আর তাতে খেয়ো না। আর যদি না পাও, তখন তাকে ধুয়ে নাও, তারপর তাতে খাও। আর তুমি তীর-ধনুক দ্বারা যা শিকার করবে, যদি ছাড়ার সময় ’’বিসমিল্লা-হ’’ পড়ে থাকো, তবে তা খেতে পার। আর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দ্বারা যা শিকার করবে, যদি ’’বিসমিল্লা-হ’’ পড়ে ছেড়ে থাক তবে তা খাও। কিন্তু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয় এমন কুকুর দ্বারা যা শিকার করবে, যদি যাবাহ করার সুযোগ পাও, তখন তাকে (যাবাহ করে) খাও। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَن أبي ثَعْلَبَة الْخُشَنِي قَالَ: قُلْتُ: يَا نَبِيَّ اللَّهِ إِنَّا بِأَرْضِ قوم أهل كتاب أَفَنَأْكَلُ فِي آنِيَتِهِمْ وَبِأَرْضِ صَيْدٍ أَصِيدُ بِقَوْسِي وَبِكَلْبِي الَّذِي لَيْسَ بِمُعَلَّمٍ وَبِكَلْبِي الْمُعَلَّمِ فَمَا يصلح؟ قَالَ: «أما ذَكَرْتَ مِنْ آنِيَةِ أَهْلِ الْكِتَابِ فَإِنْ وَجَدْتُمْ غَيْرَهَا فَلَا تَأْكُلُوا فِيهَا وَإِنْ لَمْ تَجِدُوا فاغسلوها وَكُلُوا فِيهَا وَمَا صِدْتَ بِقَوْسِكَ فَذَكَرْتَ اسْمَ اللَّهِ فَكُلْ وَمَا صِدْتَ بِكَلْبِكَ الْمُعَلَّمِ فَذَكَرْتَ اسْمَ اللَّهِ فَكُلْ وَمَا صِدْتَ بِكَلْبِكَ غَيْرِ معلم فأدركت ذَكَاته فَكل»

وعن ابي ثعلبة الخشني قال: قلت: يا نبي الله انا بارض قوم اهل كتاب افناكل في انيتهم وبارض صيد اصيد بقوسي وبكلبي الذي ليس بمعلم وبكلبي المعلم فما يصلح؟ قال: «اما ذكرت من انية اهل الكتاب فان وجدتم غيرها فلا تاكلوا فيها وان لم تجدوا فاغسلوها وكلوا فيها وما صدت بقوسك فذكرت اسم الله فكل وما صدت بكلبك المعلم فذكرت اسم الله فكل وما صدت بكلبك غير معلم فادركت ذكاته فكل»

ব্যাখ্যাঃ ‘আল্লামা নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ সা‘লাবাহ্ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে উল্লেখিত পাত্র দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, যে পাত্রে শুকরের গোশত পাকানো হয় এবং মদ প্রস্তুত করা হয়।

যেমন আবূ দাঊদ-এর বর্ণনায় রয়েছে, আমরা আহলে কিতাবদের মাঝে থাকি আর তারা তাদের পাতিলে শুকরের গোশত রান্না করত এবং তাদের পাত্রে মদ তৈরি করত। ‘আল্লামা ইবনু হাযম (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ দু’টি শর্ত ছাড়া আহলে কিতাবদের পাত্র ব্যবহার করা বৈধ নয়।

১. তাদের পাত্র ছাড়া অন্য কোনও পাত্র না পাওয়া। ২. পাত্র ধৌত করা।

এ দু’টি শর্ত পালনের সাথে আহলে কিতাবদের পাত্র ব্যবহার করা যাবে।

কেউ কেউ বলেছেন উল্লেখিত হাদীসটি ফকীহদের বক্তব্যের বিপরীত। তাদের বক্তব্য হলো : মুশরিকদের পাত্র ধৌত করার পর তা ব্যবহার করা বৈধ, এতে কোন অপছন্দনীয়তার কিছু নেই, উক্ত পাত্র ছাড়া অন্য কোন পাত্র থাকুক বা না থাকুক। পক্ষান্তরে এ হাদীসটি মুশরিকদের পাত্র ব্যতীত অন্য পাত্র পাওয়া গেলে মুশরিকদের পাত্র ব্যবহার করাটা মাকরূহ প্রমাণ করে এবং এ অপছন্দনীয়তা দূর করার জন্য পাত্র ধৌত করাও যথেষ্ট নয়। তাদের পাত্র ধৌত করে ব্যবহার করা তখনই বৈধ হবে যখন অন্য কোন পাত্র না পাওয়া যাবে। এখানে ফিকাহবিদদের কথার উদ্দেশ্য হলো কাফিরদের ব্যবহৃত সেই পাত্র যা কোন নাপাকীর কাজে ব্যবহার হয়নি, এমন পাত্র ধৌত করার পূর্বে ব্যবহার করা মাকরূহ। যদি ধৌত করে ব্যবহার করা হয় তাতে অপছন্দনীয়তার কিছুই থাকবে না। (ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫৪৭৮; শারহুন নাবাবী ১৩শ খন্ড, হাঃ [১৯৩০]-৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২০: শিকার ও যাবাহ প্রসঙ্গে (كتاب الصيد والذبائح)