পরিচ্ছেদঃ
১২২০। মদকে তার আসলের কারণে কম ও বেশী সম্পূর্ণকেই হারাম করা হয়েছে এবং মাদকতা নিয়ে আসে (এরূপ) প্রত্যেক পানীয় বস্তুকে হারাম করা হয়েছে।
হাদীসটি দুর্বল।
হাদীসটি ওকায়লী "আয-যুয়াফা" গ্রন্থে (৪/১২৪) দুটি সূত্রে আবু ইসহাক আস-সুবায়’ঈ হতে, তিনি হারেস হতে, তিনি আলী (রাঃ) হতে মারফু হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
এ হারেস হচ্ছেন ইবনু আবদিল্লাহ হামাদানী আল-আ’ওয়ার। উক্ত আবু ইসহাক সুবায়’ঈ, শা’বী ও ইবনুল মাদীনী তাকে (হারেসকে) মিথ্যুক আখ্যা দিয়েছেন।
হ্যাঁ, হাদীসটি ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে মারফু এবং মওকুফ দু’ভাবেই বর্ণিত হয়েছে। মওকুফ হিসেবে ইমাম নাসাঈ (২/৩৩২), ত্বহাবী (২/৩২৪), আহমাদ (৫৯/১০৯), ত্ববারানী (১০৮৩৭, ১০৮৪১, ১২৩৮৯, ১২৬৩৩) ও আবু নুয়াইম "আল-হিলইয়াহ" গ্রন্থে (৭/২২৪) বর্ণনা করেছেন, এর সনদটি সহীহ। আর মারফুটিকে মুয়াল্লাক হিসেবে আবু নুয়াইম বর্ণনা করেছেন। এ মারফু বর্ণনাটি শায, মওকুফ হিসেবে সম্মিলিতভাবে বর্ণনাকারীদের বর্ণনার বিরোধী।
কিন্তু ত্ববারানী ইবনুল মুসাইয়্যাব সূত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে মারফু হিসেবে বর্ণনা করেছেন যেমনটি যায়লাঈ "নাসবুর রায়া" গ্রন্থে (৪/৩০৭) উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তিনি এর সনদ সম্পর্কে কোন আলোচনা করেননি।
এ হাদীসটি সম্পর্কে ইমাম যায়লাঈর গবেষণার ফল এই যে, সঠিক সিদ্ধান্ত হচ্ছে যে হাদীসটি ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে মওকুফ হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে।
এ হাদীস দ্বারা হানাফী আলেমগণ এ মর্মে দলীল গ্রহণ করেছেন যে, আঙ্গুরের রস থেকে যে মদ তৈরি করা হয় শুধুমাত্র সেটিই মদ। এর কম এবং বেশী পরিমাণ উভয়টিই হারাম। এছাড়া অন্য যে সব বস্তু মাদকতা নিয়ে আসে যেমন গম, জব, মধু ও চিনা হতে যে মাদক তৈরি করা হয় সেগুলো হালাল। তবে এগুলো থেকে সে পরিমাণ পান করা হারাম শুধুমাত্র যে পরিমাণ পান করলে মাদকতা নিয়ে আসে।
কিন্তু এ মাযহাব বা মতটি বাতিল, সুস্পষ্ট অকাট্য বহু দলীল বিরোধী হওয়ার কারণে। যেমন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “প্রত্যেক বস্তু যা মাদকতা নিয়ে আসে সেটিই মদ আর সর্ব প্রকার মদ হারাম।” এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (২০০৩), আবু দাউদ (৩৬৭৯) ও তিরমিযী (১৮৬১) ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। এটির বহু শাহেদও রয়েছে, যেগুলোকে ইমাম যায়লাঈ হানাফী প্রমুখ বর্ণনা করেছেন। এ কারণেই শাইখ আলী আল-কারী হানাকী "শারহু মুসনাদিল ইমামে আবী হানীফা" গ্রন্থে (পৃঃ ৫৯) বলেনঃ এটি মুতাওয়াতির বর্ণনার নিকটবর্তী। অতঃপর তিনি বলেনঃ হেদায়্যাহ গ্রন্থের লেখকের নিম্নোক্ত কথার দ্বারা ধোঁকায় পড়া যাবে না : তিনি বলেছেনঃ ইয়াহইয়া ইবনু মাঈন এ (সহীহ) হাদীসটির সমালোচনা করেছেন। কারণ ইয়াহইয়া ইবনু মাঈন হতে এরূপ কথার কোন ভিত্তি নেই। যেমনটি সে ব্যাপারে ইমাম যায়লাঈ (৪/২৯৫) ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। এরূপ হাদীসের সহীহ হওয়ার বিষয়টি ইবনু মাঈন এর নিকট লুক্কায়িতই রয়ে যাবে, তিনি এরূপ দোষমুক্ত।
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার আরেক বাণীতে বলেনঃ “যে বস্তুর বেশী পরিমাণ (পান বা ভক্ষণ করলে) মাদকতা নিয়ে আসে সে বস্তুর সামান্য পরিমাণও (পান বা ভক্ষণ করা) হারাম।” হাদীসটি আবু দাউদ (৩৬৮১), তিরমিযী (১৮৬৫), নাসাঈ (৫৬০৭), ইবনু মাজাহ (৩৩৯২, ৩৩৯৩, ৩৩৯৪) ও আহমাদ (১৪২৯৩) বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি সহীহ, আটজন সাহাবী হতে সাব্যস্ত হওয়া বিভিন্ন সনদ দ্বারা বর্ণিত হয়েছে। সেগুলোকে ইমাম যায়লাঈ হানাফী “নাসবুর রায়া” গ্রন্থে (৪/৩০১৩০৬) উল্লেখ করেছেন।
সতর্কবাণীঃ হানাফী মাযহাব হিসেবে একটু পূর্বে যা উল্লেখ করেছি, তা ইমাম ত্বহাবী ইমাম আবু হানীফা ও তার দু’ সাথী আবু ইউসুফ এবং মুহাম্মাদের উদ্ধৃতিতে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া ইমাম মুহাম্মাদ "আল-আসার" গ্রন্থে (পৃঃ ১৪৮) আবু হানীফা হতে তা উল্লেখ করে নিজেও তার মতকে সমর্থন করেছেন।
কিন্তু আল্লামাহ আবুল হাসানাত লাখবুবী "আত-তা’লীকুল মুমজিদ আল মুওয়াত্তা মুহাম্মাদ" গ্রন্থে (পৃঃ ৩১১) বলেনঃ ইমাম মুহাম্মাদ বলেনঃ প্রত্যেক মাদক জাতীয় বস্তুর কম পরিমাণ এবং বেশী পরিমাণ পান করা হারাম মাতলামি নিয়ে আসুক অথবা না নিয়ে আসুক। তার মত জামহুর ওলামার মতের মতই।
সম্ভবত ইমাম মুহাম্মাদ হতে এ মাসআলার ক্ষেত্রে দুটি মত বর্ণিত হয়েছে। তার দ্বিতীয় মতটিই সঠিক সহীহ হাদীসের সাথে মিলে যাওয়ার কারণে।
[অতএব আঙ্গুর থেকে মদ তৈরি করা হোক অথবা অন্য যে কোন বস্তু থেকেই মদ তৈরি করা হোক না কেন, সেগুলোর বেশী পরিমাণ পান বা ভক্ষণ করলে যদি মাতলামি আসে তা হলে তার সামান্য পরিমাণও হারাম।]
حرمت الخمر لعينها قليلها وكثيرها، والسكر من كل شراب
ضعيف
-
أخرجه العقيلي في " الضعفاء " (4/124) من طريقين عن أبي إسحاق السبيعي عن الحارث عن علي مرفوعا
والحارث هذا هو ابن عبد الله الهمداني الأعور وقد كذبه أبو إسحاق السبيعي هذا والشعبي وابن المديني
نعم ورد هذا الحديث عن ابن عباس مرفوعا وموقوفا، والموقوف رواه النسائي (2/332) والطحاوي (2/324) وأحمد في " الأشربة " (59/109) والطبراني (10837 و10839 - 10841 و12389 و12633) وأبو نعيم في " الحلية " (7/224)
وإسناده صحيح، والمرفوع علقه أبو نعيم، وهي رواية شاذة مخالفة لرواية الجماعة الموقوفة
لكن رواه الطبراني من طريق ابن المسيب عن ابن عباس مرفوعا كما ذكره الزيلعي في " نصب الراية " (4/307) ولم يتكلم على إسناده ن ولم يسقه الحافظ الهيثمي في " المجمع " (5/53) مع أنه ساق الموقوف وعزاه للطبراني
على أن نهاية بحث الزيلعي في هذا الحديث يدل على أن الصواب فيه أنه موقوف على
ابن عباس. والله أعلم
وهذا الحديث استدلت به الحنفية على أن الخمر إنما هو ما كان من عصير العنب
فهذا يحرم منه قليله وكثيره، وأن المسكر من الأشربة الأخرى التي تتخذ من
الحنطة والشعير والعسل والذرة فهي حلال، والمحرم منها القدر المسكر فقط
وهذا مذهب باطل لمخالفته النصوص الصحيحة الصريحة القاطعة بخلافه مثل قوله
صلى الله عليه وسلم: " كل مسكر خمر، وكل خمر حرام " رواه مسلم وغيره عن ابن عباس . وقوله صلى الله عليه وسلم: " ما أسكر كثيره فقليله حرام " وهو حديث صحيح ورد عن نحوثمانية من الصحابة بأسانيد ثابتة قد أوردها الزيلعي في
نصب الراية " (4/301 - 306) وخرجت طائفة منها في " الإرواء " (2375 و2376)، وقد روى بعضها النسائي في " سننه " (2/327) ثم قال
" وفي هذا دليل على تحريم السكر قليله وكثيره، وليس كما يقول المخادعون
لأنفسهم بتحريمهم آخر الشربة، وتحليلهم ما تقدمها الذي يسري في العروق قبلها، ولا خلاف بين أهل العلم أن السكر بكليته لا يحدث على الشربة الآخرة دون
الأولى والثانية بعدها، وبالله التوفيق
تنبيه : ما حكيناه عن الحنفية آنفا هو الذي حكاه الطحاوي عن أبي حنيفة
وصاحبيه رحمهم الله، ورواه الإمام محمد في " الآثار " (ص 148) عن أبي
حنيفة وأقره. لكن ذكر العلامة أبو الحسنات اللكنوي في " التعليق الممجد على
موطأ محمد " (ص 311) أن الإمام محمد يقول بتحريم شرب قليل كل مسكر وكثيره
أسكر أولم يسكر، كما هو مذهب الجمهور، فلعل الإمام محمدا له في المسألة
قولان. ولكن القول الثاني هو الصواب لموافقته للأحاديث الصحيحة التي سبقت
الإشارة إليها وذكرنا بعضها
ومن الآثار السيئة لهذا الحديث أنه يلزم من القول به إباحة المسكرات المتخذة
من غير العنب على ما سبق بيانه، وإسقاط الحد عن شاربها ولوسكر! وهذا ما
ذهب إليه أبو حنيفة وأبو يوسف كما في " الهداية " (8/160) لكنه قال بعد ذلك
: إن الأصح أنه يحد بناء على قول الإمام محمد به. وهو منسجم مع قوله الآخر
الموافق لمذهب الجمهور في تحريم كل مسكر
واستدل الحنفية أيضا أيضا بالحديث على أن تحريم الخمر ليس معللا بعلة فقالوا
لما كانت حرمتها لعينها لا يصح التعليل، لأن التعليل حينئذ يكون مخالفا للنص
يعني هذا الحديث
والجواب أن يقال: أثبت العرش ثم انقش. فالحديث غير ثابت كما سبق، ثم هو
معارض بمثل الحديث المتقدم: " كل مسكر خمر، وكل خمر حرام " فإنه صريح في
تحريم كل مسكر بجامع الاشتراك مع خمر العنب علة الإسكار
وقد قلد الحنفية في هذه المسألة بل زاد عليهم حزب التحرير الذي كان يرأسه
الشيخ تقي الدين النبهاني رحمه الله فاستدل به على أن العبادات لا تعلل فقال في
" مفاهيم حزب التحرير " (ص 24) : " فالحكام الشرعية المتعلقة بالعبادات والأخلاق والمطعومات والملبوسات لا تعلل، قال عليه الصلاة والسلام: حرمت الخمرة لعينها
وهذا يدل على جهل بالغ بالسنة، فالحديث غير صحيح ومعارض للحديث الصحيح كما علمت، ثم هو لوصح خاص بالخمر ولا عموم فيه فكيف يصح الاستدلال به على أن جميع العبادات وما ذكر معها لا تعلل؟ اللهم هداك