পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৫৩-[৬৬] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণের উদ্দেশে বললেন, তোমাদের ভাইয়েরা যখন উহুদের যুদ্ধে শহীদ হয়, তখন আল্লাহ তা’আলা তাদের রূহগুলোকে (জান্নাতের) সবুজ পাখির অভ্যন্তরে স্থাপন করেন। আর এ পাখিগুলো জান্নাতের নহরসমূহে বিচরণ করে, জান্নাতের ফল-ফলাদি খায় এবং ’আরশের ছায়ায় স্বর্ণের ফানুসে ঝুলন্তরূপে অবস্থান করে। অতঃপর তারা যখন এরূপ সুমিষ্ট পানীয়, সুস্বাদু খাদ্য ও আরামদায়ক মনোমুগ্ধকর বিশ্রামাগার লাভ করবে, তখন তারা স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে বলে উঠবে, এমন কে আছে যে আমাদেরকে ভাইদের নিকট সুসংবাদ পৌঁছিয়ে দেবে, আমরা যে জান্নাতে জীবিত অবস্থান করছি তারা যাতে জান্নাত লাভে অবহেলিত না হয় এবং জিহাদের মাঠে পৃষ্ঠপ্রদর্শন না করে। এমতাবস্থায় তাদের এ আকাঙ্ক্ষার উত্তরে আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমি তোমাদের পক্ষ হতে তাদের নিকট সুসংবাদ পৌঁছিয়ে দেব। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেন, ’’যারা আল্লাহর পথে শহীদ হয়েছে তাদেরকে তোমরা মৃত মনে করো না; বরং তারা তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে রিযকপ্রাপ্ত হয়’’- (সূরা আ-লি ’ইমরান ৩ : ১৬৯)। (আবূ দাঊদ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ لِأَصْحَابِهِ: إِنَّهُ لَمَّا أُصِيبَ إِخْوَانُكُمْ يَوْمَ أُحُدٍ جَعَلَ اللَّهُ أَرْوَاحَهُمْ فِي جَوْفِ طَيْرٍ خُضْرٍ تَرِدُ أَنْهَارَ الْجَنَّةِ تَأْكُلُ مِنْ ثِمَارِهَا وَتَأْوِي إِلَى قَنَادِيلَ مِنْ ذَهَبٍ مُعَلَّقَةٍ فِي ظلِّ العرْشِ فلمَّا وجَدوا طِيبَ مأكَلِهِم ومشرَبِهمْ ومَقِيلهِم قَالُوا: مَنْ يُبلِّغُ إِخْوانَنا عنَا أَنَّنا أَحْيَاءٌ فِي الْجَنَّةِ لِئَلَّا يَزْهَدُوا فِي الْجَنَّةِ وَلَا يَنكُلوا عندَ الحربِ فَقَالَ اللَّهُ تَعَالَى: أَنا أبلغكم عَنْكُمْ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى: (وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاءٌ)
إِلَى أخر الْآيَات)
رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে উহুদ যুদ্ধে শহীদদের আত্মার অবস্থা বর্ণনা করে সকল মুসলিমদের জিহাদের প্রতি এবং শাহাদাতের কামনা করার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।
(إِنَّه لَمَّا أُصِيْبَ إِخْوَانُكُمْ يَوْمَ أُحُدٍ) এ বাক্যে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতে চেয়েছেন যে, যখন তোমাদের মুসলিম ভাইয়েরা উহুদের যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেছিল। এ বাক্যের অর্থ হলো, তারা যখন শাহাদাতের সৌভাগ্য লাভ করেছিল। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৫১৭)
(جَعَلَ اللّٰهُ أَرْوَاحَهُمْ فِىْ جَوْفِ طَيْرٍ خُضْرٍ) অর্থাৎ- সবুজ রঙের পাখীর পেটের ভিতর তাদের অন্তরসমূহ স্থাপন করা হয়েছে, ফলে তা সজিবতা ফিরে পেয়েছে এবং জান্নাতে এদিক ওদিক ঘুরাফেরার সক্ষমতা লাভ করেছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
(فَلَمَّا وَجَدُوْا طِيْبَ مأكَلِهِمْ وَمَشْرَبِهِمْ ومَقِيْلِهِمْ) তথা যখন তারা তাদের উত্তম পানাহারের ব্যবস্থা এবং উৎকৃষ্ট আবাসস্থল পেয়ে গেল তখন তারা দুনিয়ায় জীবিত ভাইদের কাছে এ সংবাদ পাঠানোর আকাঙ্ক্ষা করল যে, তারা জান্নাতে জীবিত অবস্থায় রয়েছে। যাতে করে অন্যরা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে উৎসাহিত হয়। ‘মাক্বীল’ শব্দের অর্থ হলো ঐ জায়গা যেখানে দ্বিপ্রহরের সময় বিশ্রাম নেয়া হয়।
(وَلَا يَنْكُلُوْا عِنْدَ الْحَرْبِ) এর অর্থ হলো, তারা যেন আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ বা জিহাদ করার ক্ষেত্রে কাপুরুষতা প্রদর্শন না করে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৫১৭)