৩৭৮১

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিচারকার্য এবং সাক্ষ্যদান

৩৭৮১-[২৪] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঐ সকল লোকেদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। যথা- ১. খিয়ানাতকারী পুরুষ ও খিয়ানাতকারিণী নারী, ২. শারী’আতের বিধান অনুযায়ী দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি, ৩. শত্রু, যদিও তার মুসলিম ভাই হয়, ৪. সে গোলাম, যে তার মুক্তকারীকে অস্বীকার করে, ৫. বংশ পরিবর্তনকারী, যে স্বীয় বংশসূত্র গোপন করে অন্য বংশের দাবী করে, ৬. পরিবারভুক্ত গোলাম বা চাকর, যে ঐ পরিবারের উপর নির্ভরশীল। (তিরমিযী; আর তিনি বলেন, হাদীসটি গরীব। আর এ হাদীসের অপর রাবী ইয়াযীদ ইবনু যিয়াদ আদ্ দিমাশক্বী মুনকারুল হাদীস)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَجُوزُ شَهَادَةُ خَائِنٍ وَلَا خَائِنَةٍ وَلَا مَجْلُودٍ حَدًّا وَلَا ذِي غِمْرٍ عَلَى أَخِيهِ وَلَا ظَنِينٍ فِي وَلَاءٍ وَلَا قَرَابَةٍ وَلَا الْقَانِعِ مَعَ أَهْلِ الْبَيْتِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حديثٌ غريبٌ ويزيدُ بن زيادٍ الدِّمَشْقِي الرَّاوِي مُنكر الحَدِيث

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا تجوز شهادة خاىن ولا خاىنة ولا مجلود حدا ولا ذي غمر على اخيه ولا ظنين في ولاء ولا قرابة ولا القانع مع اهل البيت» . رواه الترمذي وقال: هذا حديث غريب ويزيد بن زياد الدمشقي الراوي منكر الحديث

ব্যাখ্যা: অত্র হাদীসটিতে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে তাদের কথা যাদের সাক্ষী গ্রহণীয় নয় তারা হলো আমানাতের খিয়ানাতকারী পুরুষ অথবা মহিলা এবং যাকে যিনার হাদ্দ লাগানো হয়েছে এবং এমন জনের সাক্ষী যে, তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিচ্ছে যার সাথে তার আগে থেকেই শত্রুতা চলে আসছে ; আর ঐ সমস্ত লোকের সাক্ষী গ্রহণ করা হবে না, যারা সমাজে খিয়ানাতকারী হিসেবে চিহ্নিত। এক্ষেত্রে কেউ কেউ বলেছেন, যদি দীনের হুকুম-আহকামে কিছু একটা ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে থাকে তাহলে কোনো অসুবিধা নেই; তবে মানুষের মাল-সম্পদে খিয়ানাত করলে তার সাক্ষী গ্রহণ করা হবে না ; তবে সামগ্রিকভাবে বিবেচনা করে ‘উলামায়ে কিরাম বলেছেন যে, কোনো খিয়ানাতকারীরই সাক্ষী গ্রহণীয় নয়।

মহান আল্লাহ বলেছেনঃ ‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের খিয়ানাত করো না এবং তোমাদের পরস্পরের আমানতও খিয়ানাত করো না।’’ (সূরা আল আনফাল ৮ : ২৭)

(وَلَا مَجْلُوْدٍ) এর ব্যাখ্যায় ‘উলামায়ে কিরাম বলেন, যেমন ইমাম ইবনুল মালিক বলেনঃ এ ব্যক্তি হলো সে যে তার স্ত্রীর প্রতি যিনার অপবাদ দিয়েছে এবং ৪ জন সাক্ষী উপস্থিত করতে পারেনি। তার সাক্ষীও গ্রহণীয় নয়। ইমাম ইবনুল মালিক-এর সাথে একমত হয়ে ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-ও একই কথা বলেছেন বরং ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) আরো একটু বেশী করে বললেন, সে তাওবাহ্ করলেও তার সাক্ষী গ্রহণ করা হবে না। মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘‘আর যারা সত্বী সাধী নারীকে যিনার অপবাদ দিল, অতঃপর চারজন সাক্ষী আনতে ব্যর্থ হলে তাদের ৮০ বেত্রাঘাত কর এবং তাদের সাক্ষী কখনোই গ্রহণ করিও না।’’ (সূরা আন্ নূর ২৪ : ৪)

তাই অত্র আয়াত থেকেও বুঝা যায়, তার সাক্ষী কখনোই গ্রহণ করা যাবে না যদিও তাওবাহ্ করে। তবে এর ব্যতিক্রম মতামত ও ‘উলামায়ে কিরাম পোষণ করেছেন এবং তারা বলেছেন, তাওবাহ্ করলে তার সাক্ষী গ্রহণ করা হবে। যেহেতু সূরা আন্ নূর-এর ৫ নং আয়াতেই তা উল্লেখ আছে, মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘‘তবে যারা তাওবাহ্ করলো তারা ব্যতীত। (সূরা আন্ নূর ২৪ : ৫)

সাক্ষী দিতে গিয়ে কোনো প্রকার স্বজন-প্রীতির আশ্রয় নেয়া বৈধ হবে না। কোনো কোনো রিওয়ায়াতে এমনও আছে যারা অধিক ভুল করে তাদেরও সাক্ষী গ্রহণ হবে না। [আল্লাহই ভালো জানেন] (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২২৯৮; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৮: প্রশাসন ও বিচারকার্য (كتاب الإمارة والقضاء)