৩৭৬১

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - বিচারকার্য এবং সাক্ষ্যদান

৩৭৬১-[৪] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তো একজন মানুষ মাত্র। তোমরা বিভিন্ন বিবাদ-মীমাংসা নিয়ে আমার নিকট আসো। আর সম্ভবত তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ সাক্ষী-প্রমাণ উপস্থাপনের ক্ষেত্রে অন্যের চেয়ে বেশি সচেতন ও পারদর্শী। অতঃপর আমি তোমাদের বিষয়াদি শুনার সময় যা উপলব্ধি করি তদানুযায়ী বিচার-ফায়সালা করি। অতএব আমি কোনো ব্যক্তির জন্য তার মুসলিম ভাইয়ের হক থেকে কোনো কিছু (ভুলক্রমে) ফায়সালা দিয়ে দেই, তাহলে সে যেন তা গ্রহণ না করে। কেননা আমি তার জন্য একখন্ড আগুনের টুকরাই ফায়সালা করলাম। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْأَقْضِيَةِ وَالشَّهَادَاتِ

وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ وَإِنَّكُمْ تَخْتَصِمُونَ إِلَيَّ وَلَعَلَّ بَعْضَكُمْ أَنْ يَكُونَ أَلْحَنَ بِحُجَّتِهِ مِنْ بَعْضٍ فَأَقْضِي لَهُ عَلَى نَحْوِ مَا أَسْمَعُ مِنْهُ فَمَنْ قَضَيْتُ لَهُ بِشَيْءٍ مِنْ حَقِّ أَخِيهِ فَلَا يَأْخُذَنَّهُ فَإِنَّمَا أَقْطَعُ لَهُ قِطْعَةً مِنَ النَّار»

وعن ام سلمة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال انما انا بشر وانكم تختصمون الي ولعل بعضكم ان يكون الحن بحجته من بعض فاقضي له على نحو ما اسمع منه فمن قضيت له بشيء من حق اخيه فلا ياخذنه فانما اقطع له قطعة من النار

ব্যাখ্যা: অত্র হাদীস থেকে বুঝা যায়-

(ক) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মতই মানুষ। মহান আল্লাহ সূরা কাহফ-এর ১১০ নং আয়াতে বলেন, অর্থাৎ ‘‘হে নাবী! আপনি বলে দিন আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ (পার্থক্য এটুকু যে,) আমার নিকট আল্লাহর নিকট থেকে ওয়াহী আসে তোমাদের আসে না।’’

খ) নাবী-রসূলগণও মা’সূম নন তবে তাদের ভুল হলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ সংশোধন করিয়ে দিতেন।

গ) কুরআন ও হাদীস থেকে তারাই হিদায়াত পায় যাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় আছে।

ঘ) বিচারকার্যে বাদী-বিবাদীর মধ্যে একে অপরের চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশী যুক্তি উপস্থাপনকারী, ভাষায় দক্ষ হতে পারে, মিথ্যা কথার ফুলঝুড়ি দিয়ে অপরের সম্পদ গ্রহণ কোনোভবেই বৈধ নয়।

ঙ) বিচারকের জন্য অবধারিত যে, তিনি বাদী-বিবাদী উভয়ের কথা শুনেই বিচার করবেন। একপক্ষের কথা শুনে বিচারের রায় প্রদান কোনভাবে গ্রহণীয় নয়।

এক্ষেত্রে একটি হাদীস খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত যেখানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হাকিম যদি ন্যায়বিচারের চেষ্টা করে সফল হয় তাহলে তার দ্বিগুণ সাওয়াব আর যদি সফল না হয় তাহলে এক সাওয়াব, তাই সকল বিচারপতিদের উচিত ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হওয়া।

অত্র হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী (রহঃ) বলেছেনঃ অত্র হাদীস থেকে বুঝা যায়, মানুষের বাস্তবিক অবস্থা আরো বুঝা যায় সে গায়েব জানে না, তাই বাহ্যিক দলীলাদি দেখেই তাকে ফায়সালা দিতে হয়।

(ফাতহুল বারী ১২শ খন্ড, হাঃ ৬৯৬৭; শারহে মুসলিম ১২শ খন্ড, হাঃ ১৭১৩; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৩৩৯; ‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৫৮০; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু সালামাহ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৮: প্রশাসন ও বিচারকার্য (كتاب الإمارة والقضاء)