৩৭৫২

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিচারকদের (সহকর্মীদের) বেতন ও হাদিয়া গ্রহণ করা

৩৭৫২-[৮] ’আদী ইবনু ’উমায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ হে মানব সকল! তোমাদের কাউকে যদি আমাদের কোনো কাজে নিযুক্ত করা হয়। অতঃপর সে যদি তা থেকে একটি সুঁই পরিমাণ অথবা তার চেয়ে অধিক কিছু লুক্কায়িত রাখে, তাহলে সে খিয়ানাতকারী বলে সাব্যস্ত হবে। কিয়ামতের দিনে সে তা বহন করে উত্থিত হবে। তখন জনৈক আনসারী দাঁড়িয়ে বলে উঠলেনঃ হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমার ওপর যে কাজ অর্পণ করেছেন, তা অনুগ্রহপূর্বক প্রত্যাহার করে নিন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ কেন এটা বলছ? লোকটি বলল, আমি শুনেছি যে, আপনি এরূপ এরূপ (ভীতিকর) কথা বলেছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ, আমি আবারও বলছি, যাকে আমরা কোনো কাজে নিযুক্ত করি, তখন সে যেন তার কম ও বেশি যাই হোক (সবকিছু) আমাদের কাছে বুঝিয়ে দেয়। অতঃপর তাকে যা কিছু দেয়া হবে, শুধু তাই গ্রহণ করবে। আর যা থেকে নিষেধ করা হবে, তা থেকে সর্বদা বিরত থাকে। (মুসলিম ও আবূ দাঊদ; তবে শব্দবিন্যাস আবূ দাঊদ-এর)[1]

وَعَن عَدِيِّ بنِ عَمِيرةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَنْ عُمِّلَ مِنْكُمْ لَنَا عَلَى عَمَلٍ فَكَتَمَنَا مِنْهُ مِخْيَطًا فَمَا فَوْقَهُ فَهُوَ غَالٌّ يَأْتِي بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ» . فَقَامَ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ اقْبَلْ عَنِّي عَمَلَكَ. قَالَ: «وَمَا ذَاكَ؟» قَالَ: سَمِعْتُكَ تَقُولُ: كَذَا وَكَذَا قَالَ: «وَأَنَا أَقُولُ ذَلِكَ مَنِ اسْتَعْمَلْنَاهُ عَلَى عَمَلٍ فَلْيَأْتِ بِقَلِيلِهِ وَكَثِيرِهِ فَمَا أُوتِيَ مِنْهُ أَخَذَهُ وَمَا نُهِيَ عَنْهُ انْتَهَى» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ وَأَبُو دَاوُد وَاللَّفْظ لَهُ

وعن عدي بن عميرة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «يا ايها الناس من عمل منكم لنا على عمل فكتمنا منه مخيطا فما فوقه فهو غال ياتي به يوم القيامة» . فقام رجل من الانصار فقال: يا رسول الله اقبل عني عملك. قال: «وما ذاك؟» قال: سمعتك تقول: كذا وكذا قال: «وانا اقول ذلك من استعملناه على عمل فليات بقليله وكثيره فما اوتي منه اخذه وما نهي عنه انتهى» . رواه مسلم وابو داود واللفظ له

ব্যাখ্যা: এ হাদীসটি রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পেয়ে তাতে খিয়ানাত সম্পর্কে কঠোর হুশিয়ারী স্বরূপ। হাফিয ইবনু হাজার আস্ক্বালানী (রহঃ) বলেছেনঃ ‘উমায়রাহ্ নামে আসমায়ে রিজালে কোনো রাবী নেই বরং ‘আমীরাহ্ আছে, তবে নাসায়ীতে ‘উমায়রাহ্ ও ‘আমিরাহ্ দু’টিই ব্যবহৃত হয়েছে। এমনটাই বর্ণনা এসেছে সহীহ মুসলিম-এর ব্যাখ্যায়। কেউ কেউ বলেন, তিনি হলেন আল্ কিনদী আল্ হাযরামী কূফায় বসবাস করতেন, অতঃপর সেখান থেকে জাযিরায় স্থানান্তরিত হন, সেখানে বসবাস করতে থাকেন, পরে সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।

অত্র হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বললেন, আমরা যাকে দায়িত্ব দিলাম তারপর সে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের একটি সুতাও যদি গোপনে নিয়ে নেয় তাহলে এর জন্য সে কিয়ামতে খিয়ানাতকারীর কাতারে দাঁড়াবে। রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এহেন ভীতসন্ত্রস্ত বক্তব্য শুনে তিনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিতে চাইলেন। এ থেকে বুঝা যায়, দায়িত্ব শুধু নিলেই হবে না তা যথাযথ পালন না করতে পারলে অব্যাহতি নেয়াই শ্রেয়। (শারহে মুসলিম ১২শ খন্ড, হাঃ ১৮৩৩; ‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৫৭৮; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৮: প্রশাসন ও বিচারকার্য (كتاب الإمارة والقضاء)