৩৭৩৮

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - প্রশাসনিক কর্মস্থলে কাজ করা এবং তা গ্রহণের দায়িত্বে ভয় করা

৩৭৩৮-[৮] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে শাসক নিযুক্ত করে যখন ইয়ামানে পাঠালেন, তখন আমি জিজ্ঞেস করলামঃ হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমাকে পাঠাচ্ছেন অথচ আমি একজন যুবক, আর বিচারকার্য বা শাসনভার পরিচালনায় আমি অনভিজ্ঞ। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা তোমার অন্তরকে শীঘ্রই সৎপথ দেখাবেন এবং তোমার জবানকেও হিফাযাত করবেন। যদি দু’ ব্যক্তি তাদের মুকদ্দামা নিয়ে তোমার নিকট উপস্থিত হয়, তখন অপর পক্ষের কথা না শুনা পর্যন্ত প্রথম ব্যক্তির পক্ষে কোনো ফায়সালা দিও না। কেননা প্রতিপক্ষের বর্ণনা থেকে মুকদ্দামার ফায়সালা দিতে তোমার সহজসাধ্য হবে। তিনি [’আলী (রাঃ)] বলেনঃ অতঃপর আমি আর কোনো মুকদ্দামায় দ্বিধাগ্রস্ত হইনি। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ্)[1]

গ্রন্থকার বলেনঃ ’’আকযিয়াহ্ ও শাহাদাত’’ (সাক্ষী ও ফায়সালা প্রদান) অধ্যায়ে আমরা উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত اِنَّمَا اَقْضِىْ بَيْنَكُمْ رَائِىْ হাদীসটি বর্ণনা করব ইনশা-আল্লা-হু তা’আলা।

عَن عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: بَعَثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْيَمَنِ قَاضِيًا فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ تُرْسِلُنِي وَأَنَا حَدِيثُ السِّنِّ وَلَا عِلْمَ لِي بِالْقَضَاءِ؟ فَقَالَ: «إِنَّ اللَّهَ سَيَهْدِي قَلْبَكَ وَيُثَبِّتُ لِسَانَكَ إِذَا تَقَاضَى إِلَيْكَ رَجُلَانِ فَلَا تَقْضِ لِلْأَوَّلِ حَتَّى تَسْمَعَ كَلَامَ الْآخَرِ فَإِنَّهُ أَحْرَى أَنْ يَتَبَيَّنَ لَكَ الْقَضَاءُ» . قَالَ: فَمَا شَكَكْتُ فِي قَضَاءٍ بَعْدُ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ
وَسَنَذْكُرُ حَدِيثَ أُمِّ سَلَمَةَ: «إِنَّمَا أَقْضِي بَيْنَكُمْ برأيي» فِي بَابِ «الْأَقْضِيَةِ وَالشَّهَادَاتِ» إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى

عن علي رضي الله عنه قال: بعثني رسول الله صلى الله عليه وسلم الى اليمن قاضيا فقلت: يا رسول الله ترسلني وانا حديث السن ولا علم لي بالقضاء؟ فقال: «ان الله سيهدي قلبك ويثبت لسانك اذا تقاضى اليك رجلان فلا تقض للاول حتى تسمع كلام الاخر فانه احرى ان يتبين لك القضاء» . قال: فما شككت في قضاء بعد. رواه الترمذي وابو داود وابن ماجه وسنذكر حديث ام سلمة: «انما اقضي بينكم برايي» في باب «الاقضية والشهادات» ان شاء الله تعالى

ব্যাখ্যা: অত্র হাদীসে বলা হয়েছে, ‘আলী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন, নাবীজী! আপনি আমাকে বিচারপতি হিসেবে পাঠাচ্ছেন অথচ আমি অল্পবয়সী এবং বিচার ফায়সালা সম্পর্কে আমার কোনো জ্ঞান নেই। এখানে ‘আলী -এর কথাগুলো একটু ব্যাখ্যা করতে হবে এভাবে যে, জ্ঞান নেই অর্থ পূর্ণ জ্ঞান নেই আর অল্পবয়সী অর্থ অনভিজ্ঞ। এ রকম ভাষা দেখতে পাওয়া যায় মূসা ও হারূন (আঃ)-এর ঘটনায় যেখানে আল্লাহ বললেন, ‘‘তোমরা ফির্‘আওনের নিকট যাও নিশ্চয় সে সীমালঙ্ঘন করেছে’’- (সূরা ত্ব-হা ২০ : ৪৩)। আল্লাহ তা‘আলার এ নির্দেশ শুনে তারা বললেন, হে আমাদের রব! নিশ্চয় আমরা ভয় করছি আমাদের প্রতি তারা জুলুম করবে অথবা সীমালঙ্ঘন করবে। আল্লাহ বললেন, তোমরা ভয় পেও না আমি তোমাদের সাথে আছি, শুনছি ও দেখছি।

অত্র হাদীসে ‘আলী -এর বিনয় প্রকাশমান যে, তিনি সব উঁচু নেতৃত্বের চেয়ে আল্লাহ এবং তার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহচর্যকে বেশী গুরুত্বারোপ করেছেন। এ বিনয়ের কারণেই সুলতান মাহমূদ যখন তার বিশেষ দূতকে তার সমস্ত মসনদ দিতে চেয়েছিলেন তখন বিশেষ দূত তা প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ লোকেদের সাহচর্যকে পছন্দ করলেন। আল মুযহির বলেন, এখানে ‘‘ইলম নেই’’ অর্থ হলো অনভিজ্ঞ, অর্থাৎ দু’জনের মধ্যে বাদানুবাদ হলে তা শান্ত করার পর্যাপ্ত জ্ঞান আমার নেই। (‘আওনূল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৫৭৯; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৩৩১; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৮: প্রশাসন ও বিচারকার্য (كتاب الإمارة والقضاء)