৩৬৬১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

الإمارة শব্দটির অর্থ আমিরের পদ গ্রহণ করা বা চিহ্ন ইত্যাদি। القضاء দ্বারা এখানে উদ্দেশ্য শার্’ঈ আদালত।


৩৬৬১-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করল, সে আল্লাহ তা’আলার আনুগত্য করল। আর যে আমার অবাধ্যতা করল, সে আল্লাহ তা’আলার অবাধ্যতা করল। আর যে আমীরের (নেতার) আনুগত্য করল, সে আমারই আনুগত্য করল। যে আমীরের অবাধ্যতা করল, সে আমারই অবাধ্যতা করল। প্রকৃতপক্ষে ইমাম (নেতা) হলেন ঢাল স্বরূপ। তার পিছন থেকে যুদ্ধ করা হয়, তার দ্বারা (শত্রুদের কবল থেকে) নিরাপত্তা পাওয়া যায়। সুতরাং শাসক যদি আল্লাহর প্রতি ভয়প্রদর্শন পূর্বক প্রশাসন চালায় এবং ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠা করে, তাহলে এর বিনিময়ে সে সাওয়াব (প্রতিদান) পাবে। কিন্তু সে যদি এর বিপরীত কর্ম সম্পাদন করে, তাহলে তার গুনাহও তার ওপর কার্যকর হবে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَطَاعَنِي فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ وَمَنْ عَصَانِي فَقَدْ عَصَى اللَّهَ وَمَنْ يُطِعِ الْأَمِيرَ فَقَدْ أَطَاعَنِي وَمَنْ يَعْصِ الْأَمِيرَ فَقَدْ عَصَانِي وَإِنَّمَا الْإِمَامُ جُنَّةٌ يُقَاتَلُ مِنْ وَرَائِهِ وَيُتَّقَى بِهِ فَإِنْ أَمَرَ بِتَقْوَى اللَّهِ وَعَدَلَ فَإِنَّ لَهُ بِذَلِكَ أَجْرًا وَإِنْ قالَ بغَيرِه فَإِن عَلَيْهِ مِنْهُ»

عن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من اطاعني فقد اطاع الله ومن عصاني فقد عصى الله ومن يطع الامير فقد اطاعني ومن يعص الامير فقد عصاني وانما الامام جنة يقاتل من وراىه ويتقى به فان امر بتقوى الله وعدل فان له بذلك اجرا وان قال بغيره فان عليه منه»

ব্যাখ্যা: (مَنْ أَطَاعَنِىْ فَقَدْ أَطَاعَ اللّٰهَ) এর ব্যাখ্যায় কুরআনের সূরা আন্ নিসায় ৮০নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে, আয়াতের অর্থ: ‘‘যে ব্যক্তি রসূলের হুকুম মান্য করবে সে আল্লাহর হুকুম মান্য করবে।’’

(وَمَنْ عَصَانِىْ فَقَدْ عَصَى اللّٰهَ) অত্র হাদীস প্রমাণ করে নেতৃত্ব ও প্রতিনিধিত্বের উপর। বলা হয় : ‘আরবের কুরায়শ এবং ঐ সময়ের লোকজনের নেতৃত্ব সম্পর্কে জানা ছিল না। তাদের গোত্রের নেতাদের দীন ছিল না। অতঃপর যখন ইসলাম আগমন করে তাদের মাঝে (নেতা বা খলীফা) নিযুক্ত করা হয়, তাদের মাঝের লোকেরা অস্বীকার করে। কেউ কেউ হুকুম মান্য করতে অস্বীকার করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বললেনঃ নিশ্চয় তাদের আনুগত্য করা আবশ্যক তারা যেন আনুগত্য করে যে ব্যক্তিকে তাদের শাসক বানানো হয়।

‘‘ইমাম হলেন ঢাল স্বরূপ।’’ ইমাম নববী (রহঃ) বলেছেনঃ যুদ্ধক্ষেত্রে ঢালের মাধ্যমে দুশমনদের আক্রমণ থেকে মুসলিমদের কষ্ট থেকে রক্ষা করবেন। মানুষকে নিষেধ করবেন কতককে কতকের সাথে যুদ্ধ করা থেকে। ইসলামের ভিতরের অংশকে রক্ষা করবে। ইমামুল মুসলিমীন জনগণকে কাফিরদের সাথে লড়াই করা, ক্রোধ, হিংসা, বিশৃঙ্খলা, হামলা, আক্রমণ থেকে রক্ষা করবেন।

ইবনু তীন (রহঃ) বলেছেনঃ নিশ্চয় তিনি খত্ত্বাবী (রহঃ)-এর কথা গ্রহণ করেছেন: ইবনু ‘উমার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের একটি দলকে বলেছেনঃ তোমরা কি জান না? নিশ্চয় যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করল, সে আল্লাহর আনুগত্য করল। আর আল্লাহর আনুগত্য করাই আমার আনুগত্য করা। তারা বলেছেনঃ হ্যাঁ, আমরা সাক্ষ্য প্রদান করি। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার অনুসরণ করবে সে যেন শাসকগণেরও অনুসরণ করে।

ইমাম নববী (রহঃ) বলেছেনঃ অত্র হাদীসে সকল অবস্থায় শ্রবণ করা ও আনুগত্য করার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে ইসলাম এবং মুসলিমদের কালিমাকে একত্রিত করার জন্য। কেননা এর বিপরীত হলো দীন ও দুনিয়ায় তাদের অবস্থার বিশৃঙ্খলা ঘটানো। সকল ক্ষেত্রে অবাধ্যতার আনুগত্য থেকে নিষেধ করা হয়েছে। (ফাতহুল বারী ১৩ খন্ড, হাঃ ৩৬৬১)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৮: প্রশাসন ও বিচারকার্য (كتاب الإمارة والقضاء)