৩৫৬৫

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৩৫৬৫-[১১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মা’ইয আল আসলামী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন, তিনি যিনা করেছেন। এটা শুনে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তখন তিনি সেদিকে যেয়ে বললেন, তিনি যিনা করেছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবারও তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তখন তিনি পুনরায় সেদিকে গিয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি যিনা করেছি। পরিশেষে চতুর্থবার (স্বীকারেক্তিতে) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে ’রজমের’ নির্দেশ দিলেন। অতঃপর তাকে ’হাররাহ্’ নামক এলাকায় নিয়ে তাকে রজম করা হলো। কিন্তু যখন তার শরীরে পাথর নিক্ষেপ করছিল তখন (অসহ্য যন্ত্রণায়) তিনি দৌড়িয়ে পালিয়ে গেলেন এবং এমন এক ব্যক্তির নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন যার হাতে উটের চোয়ালের হাড্ডি ছিল। তিনি তা দিয়ে তাকে আঘাত করল এবং অন্য লোকের আঘাতে সে মৃত্যুবরণ করল। অতঃপর লোকেরা ঘটনাটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বলল যে, তিনি পাথরের আঘাতে মৃত্যু ভয়ে পালাচ্ছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা তাকে কেন ছেড়ে দিলে না? (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ)[1]

অন্য এক বর্ণনায় আছে, তোমরা কেন তাকে ছেড়ে ছিলে না? হতে পারে সে তওবা্ করত আর আল্লাহ তা’আলা তার তওবা্ কবুল করতেন।

اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: جَاءَ مَاعِزٌ الْأَسْلَمِيُّ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: إِنَّه قدْ زَنى فأعرضَ عَنهُ ثمَّ جَاءَ مِنْ شِقِّهِ الْآخَرِ فَقَالَ: إِنَّهُ قَدْ زنى فَأَعْرض عَنهُ ثمَّ جَاءَ من شقَّه الْآخَرِ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهُ قَدْ زَنى فَأَمَرَ بِهِ فِي الرَّابِعَةِ فَأُخْرِجَ إِلَى الْحَرَّةِ فَرُجِمَ بِالْحِجَارَةِ فَلَمَّا وَجَدَ مَسَّ الْحِجَارَةِ فَرَّ يَشْتَدُّ حَتَّى مَرَّ بِرَجُلٍ مَعَهُ لَحْيُ جَمَلٍ فَضَرَبَهُ بِهِ وَضَرَبَهُ النَّاسُ حَتَّى مَاتَ. فَذَكَرُوا ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنه فرحين وَجَدَ مَسَّ الْحِجَارَةِ وَمَسَّ الْمَوْتِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَلَّا تَرَكْتُمُوهُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَفِي رِوَايَةٍ: «هَلَّا تَرَكْتُمُوهُ لَعَلَّه أَن يَتُوب الله عَلَيْهِ»

عن ابي هريرة قال جاء ماعز الاسلمي الى رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال انه قد زنى فاعرض عنه ثم جاء من شقه الاخر فقال انه قد زنى فاعرض عنه ثم جاء من شقه الاخر فقال يا رسول الله انه قد زنى فامر به في الرابعة فاخرج الى الحرة فرجم بالحجارة فلما وجد مس الحجارة فر يشتد حتى مر برجل معه لحي جمل فضربه به وضربه الناس حتى مات فذكروا ذلك لرسول الله صلى الله عليه وسلم انه فرحين وجد مس الحجارة ومس الموت فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم هلا تركتموه رواه الترمذي وابن ماجه وفي رواية هلا تركتموه لعله ان يتوب الله عليه

ব্যাখ্যা: ইবনুল মালিক বলেনঃ যে লোক যিনার স্বীকারোক্তি করেছে যদি সে পরে এই কথা বলে যে, আমি পূর্বে মিথ্যা বলেছি বা আমি যিনা করিনি তখন তার ওপর থেকে ‘‘হাদ্দ’’ রহিত হয়ে যাবে। আর যদি শাস্তি দেয়ার সময় অস্বীকার করে তখন তার অবশিষ্ট শাস্তি দেয়া যাবে না। কিছু কিছু সংখ্যক ‘উলামাহ্ বলেন, ‘‘হাদ্দ’’ রহিত হবে না, অন্যথায় মা‘ইয সম্বন্ধে এ কথা বলতে হবে যে, তার পলায়নের পরেও তাকে হত্যা করাটা (قتل خطاء) তথা ভুলবশত হয়েছে যাতে হত্যাকারীদের আত্মীয়দের ওপর দিয়াত (রক্তমূল্য) ওয়াজিব হয়। এর উত্তর এই যে, এ ক্ষেত্রে সে তার স্বীকারোক্তি থেকে ফিরে গেছে বলে প্রকাশ পায়নি বরং পাথরের আঘাত অসহ্য হওয়ায় পলায়ন করেছে এবং হাদ্দ প্রয়োগের সময় পলায়ন করলে অবশিষ্ট হাদ্দ রহিত হয় না।

«هَلَّا تَرَكْتُمُوهُ» তোমরা তাকে ছেড়ে দিলে না কেন? মূলত এর রূপক অর্থ হলো: যে তার বিষয়টি লক্ষ্য করতো যে, সে পাথরের আঘাতে পলায়ন করছে না তার যিনার স্বীকারোক্তি থেকে ফিরে আসছে।

শারহুস্ সুন্নাহয় এসেছে: হাদীসে দলীল সাব্যস্ত হয় যে, যে ব্যক্তি যিনা করার স্বীকৃতি দেয় নিজের ওপর, অতঃপর হাদ্দ প্রয়োগের সময় স্বীকারোক্তি থেকে ফিরে আসে আর সে বলে আমি মিথ্যা বলেছি, আমি যিনা করিনি, তাহলে অবশিষ্ট হাদ্দ রহিত হয়ে যাবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৪২৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৭: দণ্ডবিধি (كتاب الحدود)