৩৪১০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৩৪১০-[৫] সাবিত ইবনুয্ যহহাক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো ধর্মের নামে শপথ করে, তাহলে সে যেন তদ্রূপ হয়ে যায় যা সে বলেছে। কোনো আদম সন্তানের পক্ষে ঐরূপ মানৎ পূর্ণ করা ওয়াজিব নয়, যার সে সত্তা নয়। যে ব্যক্তি কোনো জিনিস দ্বারা দুনিয়াতে আত্মহত্যা করল, কিয়ামত দিবসে তাকে ঐ জিনিসের মাধ্যমেই শাস্তি দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি কোনো মু’মিনকে লা’নাত (অভিসম্পাত) করল, সে যেন তাকে হত্যাই করল। আর যে কোনো মু’মিনকে কাফির বলে অপবাদ দিল, সে যেন তার হত্যাযজ্ঞের শামিল। যে ব্যক্তি ধন-সম্পদ বৃদ্ধির উদ্দেশে মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে, আল্লাহ তা’আলা তার ধন-সম্পদ বৃদ্ধির পরিবর্তে বরং কমিয়ে দেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

وَعَنْ ثَابِتِ بْنِ الضَّحَّاكِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ حَلَفَ عَلَى مِلَّةٍ غَيْرِ الْإِسْلَامِ كَاذِبًا فَهُوَ كَمَا قَالَ وَلَيْسَ عَلَى ابْنِ آدَمَ فِيمَا لَا يَمْلِكُ وَمَنْ قَتَلَ نَفْسَهُ بِشَيْءٍ فِي الدُّنْيَا عُذِّبَ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَمَنْ لَعَنَ مُؤْمِنًا فَهُوَ كَقَتْلِهِ وَمَنْ قَذَفَ مُؤْمِنًا بِكُفْرٍ فَهُوَ كَقَتْلِهِ وَمَنِ ادَّعَى دَعْوَى كَاذِبَةً لِيَتَكَثَّرَ بِهَا لَمْ يَزِدْهُ اللَّهُ إِلَّا قِلَّةً»

وعن ثابت بن الضحاك قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من حلف على ملة غير الاسلام كاذبا فهو كما قال وليس على ابن ادم فيما لا يملك ومن قتل نفسه بشيء في الدنيا عذب به يوم القيامة ومن لعن مومنا فهو كقتله ومن قذف مومنا بكفر فهو كقتله ومن ادعى دعوى كاذبة ليتكثر بها لم يزده الله الا قلة»

ব্যাখ্যা: কাযী বলেনঃ ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্মের নামে শপথ করার অর্থ হলো সে তার ইসলামকে নষ্ট করল, এ ধরনের শপথের মাধ্যমে সে যেরূপ বলল তদ্রূপই হলো আর সম্ভাবনা রয়েছে এটাকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে শপথ ভঙ্গের মাধ্যমে। যেমন বর্ণিত হয়েছে,

مَنْ قَالَ إِنِّي بَرِيءٌ مِنَ الْإِسْلَامِ فَإِنْ كَانَ كَاذِبًا فَهُوَ كَمَا قَالَ، وَإِنْ كَانَ صَادِقًا فَلَنْ يَرْجِعَ إِلَى الْإِسْلَامِ سَالِمًا

বুরায়দাহ্ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে বলে আমি ইসলাম হতে মুক্ত যদি সে মিথ্যাবাদী হয় তাহলে সে যেরূপ বলেছে সে তদ্রূপই হবে আর যদি সত্যবাদী হয় তাহলে সে ইসলামে অবশ্যই সহীহভাবে ফিরবে না।

কারও মতে, মূলত উদ্দেশ্য তা নয় বরং ভীতিপ্রদর্শনেই উদ্দেশ্য। সে প্রকৃত ইয়াহূদী হুকুমের মধ্যে পড়েনি এবং ইসলাম হতে মুক্তও হয়নি, মনে হয় সে ইয়াহূদীদের মতো শাস্তির হকদার হয়েছে। আর এর সাদৃশ্য হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণীঃ مَنْ تَرَكَ صَلَاةً فَقَدْ كَفَرَ ‘‘যে সালাত ছেড়ে দিল সে কাফির হলো।’’ এখানে ধমকি স্বরূপ বলা হয়েছে।

ইমাম আবূ হানীফাহ্সহ অধিকাংশ যেমন ইমাম নাখ‘ঈ, আওযা‘ঈ, সাওরী এবং আহমাদ-এর মতে এরূপ কথা বললে তা কসমে পরিণত হবে এবং ভাঙ্গলে কাফফারা ওয়াজিব হবে। কিন্তু ইমাম মালিক, শাফি‘ঈসহ মদীনার ‘উলামাগণ বলেন, তা শপথ নয়। সুতরাং কাফফারা ওয়াজিব হবে না, তবে এমন উক্তিকারী গুনাহগার হবে তাতে সত্য বলুক আর মিথ্যা বলুক।

(وَلَيْسَ عَلَى ابْنِ اٰدَمَ فِيمَا لَا يَمْلِكُ) কোনো আদাম সন্তান যে জিনিসের মালিক নয় এমন জিনিসের মানৎ করলে তাতে কিছুই হয় না। ইবনু মালিক বলেনঃ যদি কেউ বলে যদি আল্লাহ আমাকে সুস্থ করেন তাহলে অমুক গোলাম স্বাধীন অথচ সে তার মালিকাধীন না।

ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ এর ভাবার্থ হলো কেউ যদি মানৎ করে দাস আযাদ করে দিবে অথচ সে দাস তার মালিকাধীনে নেই অথবা ছাগল বা অন্য কিছু কুরবানী করবে আর তা তার অধীনে নেই তা পুরা করা ওয়াজিব হবে না যদি তা পারে তা মালিকাধীনে আসে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৫: কসম ও মানৎ (كتاب الأيمان والنذور)