৩৩৫৯

পরিচ্ছেদঃ ১৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার

৩৩৫৯-[১৮] রাফি’ ইবনু মাকীস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অধীনস্থ দাস-দাসীদের সাথে সদ্ব্যবহার করা কল্যাণকর ও বরকতময় এবং অসদাচরণকারী কল্যাণ ও বারাকাতের প্রতিবন্ধক। (আবূ দাঊদ)[1]

মিশকাত গ্রন্থকার বলেন, মাসাবীহ গ্রন্থ ছাড়া অন্য কোনো হাদীসের এ অতিরিক্ত বর্ণনাটুকু আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি, ’দান-সাদাকা অপমৃত্যু দূরীভূত করে এবং সৎকাজ আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করে’।

وَعَنْ رَافِعِ بْنِ مَكِيثٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «حُسْنُ الْمَلَكَةِ يُمْنٌ وَسُوءُ الْخُلُقِ شُؤْمٌ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَلَمْ أَرَ فِي غَيْرِ الْمَصَابِيحِ مَا زَادَ عَلَيْهِ فيهِ منْ قولِهِ: «والصَّدَقةُ تمنَعُ مِيتةَ السُّوءِ والبِرُّ زيادةٌ فِي العُمُرِ»

وعن رافع بن مكيث ان النبي صلى الله عليه وسلم قال: «حسن الملكة يمن وسوء الخلق شوم» . رواه ابو داود ولم ار في غير المصابيح ما زاد عليه فيه من قوله: «والصدقة تمنع ميتة السوء والبر زيادة في العمر»

ব্যাখ্যা: (حُسْنُ الْمَلَكَةِ يُمْنٌ) ‘‘দাস-দাসীর সাথে ভালো আচরণ বরকত।’’ অর্থাৎ দাস দাসীর মন্দ আচরণ যেমন ধ্বংস ও অশুভের কারণ ঠিক এর বিপরীত তাদের সাথে ভালো আচরণ করা কল্যাণ ও বারাকাতের কারণ। যখন কেউ তার দাস-দাসীর ভালো আচরণ করবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে কল্যাণ ও বরকত দান করবেন। এছাড়া মালিক যখন তার অধীনস্থের সাথে ভালো আচরণ করবে তখন তারা তাদের মালিকের সাথে ভালো আচরণ এবং মালিকের হক পুরো আদায় করবে। তখন মালিকের মনে অনাবিল শান্তি বয়ে আনবে। কল্যাণ ও বরকত বলতে এটাও হতে পারে।

(وَسُوْءُ الْخُلُقِ شُؤْمٌ) ‘‘মন্দ আচরণ অশুভের কারণ।’’ (يمن)-এর বিপরীত হলো (شؤم) অর্থাৎ ভালো আচরণ যেমন বরকত ও কল্যাণ নিয়ে আসে, এর বিপরীত মন্দ আচরণ অকল্যাণ ও অনিষ্টতা নিয়ে আসে। কেননা অধিনস্থের সাথে মন্দ আচরণ পরস্পর হিংসা, ঘৃণা, জিদ, ঝগড়া ও হঠকারিতা সৃষ্টি করে যার প্রভাব মালিকের জান ও মাল উভয়ে পড়বে। তখন কেবল ক্ষতি হতে থাকা তার মনে অশান্তির কারণ হবে। এটা হলো তার অকল্যাণ ও অশুভ পরিণাম। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৫১৫৪)

(وَالصَّدَقةُ تَمْنَعُ مِيْتَةَ السُّوْءِ) ‘‘সাদাকা মন্দ মৃত্যুকে বাধা দেয়।’’ মন্দ মৃত্যু বলতে দুর্ঘটনার কবলে হঠাৎ মৃত্যুকে বুঝানো হয়ে থাকে। কেননা মানুষের জীবনের দৈনন্দিন কোনো না কোনোভাবে গুনাহ সংঘটিত হয়ে যায়। মৃত্যু কাছে দেখলে, অসুস্থ হয়ে পড়লে মানুষ সাধারণত তার গুনাহ থেকে সকাতরে আল্লাহ তা‘আলার কাছে ক্ষমা চায়। এই তাওবাহ্ তার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া হতে পারে। কিন্তু হঠাৎ করে মারা গেলে সে তাওবাহ্ করার সুযোগ পায় না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
তাই হঠাৎ মৃত্যুকে মন্দ মৃত্যু বলা হয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হঠাৎ মৃত্যু থেকে রক্ষা করুন। আমীন।

(وَالْبِرُّ زِيَادَةٌ فِى الْعُمُرِ) ‘‘কল্যাণকর্ম বয়স বৃদ্ধির কারণ।’’ কল্যাণ কর্ম করলে আল্লাহর ‘ইবাদাত অথবা তার সৃষ্টির প্রতি দয়া ও ভালো আচরণ হতে পারে। কুরআন ও হাদীস দ্বারা এ কথাটি অকাট্যভাবে প্রমাণিত একটি বিষয় হলো, সবার বয়স নির্ধারিত। নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে কারো মৃত্যু হবে না। তাই এ জাতীয় হাদীসের অর্থা ‘উলামায়ে কিরাম এই নেন যে, বয়স বৃদ্ধি বলতে তার বয়সের মাঝে বরকত দেয়া বুঝানো হয়েছে। যে ব্যক্তি সৎকর্ম করবে আল্লাহ তা‘আলা তার বয়সকে বরকতময় করে তুলবেন। আল্লাহ অধিক ভালো জানেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح)