পরিচ্ছেদঃ ১৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার
৩৩৫৫-[১৪] উক্ত রাবী (’আমর ইবনু শু’আয়ব) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, আমি একজন হতদরিদ্র মানুষ, আমার সহায়-সম্বল নেই, কিন্তু আমার তত্ত্বাবধানে একজন (সম্পদশালী) ইয়াতীম আছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি অপব্যয়ী না হয়ে, মিতব্যয়ী হয়ে, পুঁজি না করে তোমার প্রতিপালিত ইয়াতীমের ধন-সম্পদ হতে খেতে পার। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ)[1]
وَعنهُ وَعَن أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ: أَنَّ رَجُلًا أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: إِنِّي فَقِيرٌ لَيْسَ لِي شَيْءٌ وَلِي يَتِيمٌ فَقَالَ: «كُلْ مِنْ مَالِ يَتِيمِكَ غَيْرَ مُسْرِفٍ وَلَا مُبَادِرٍ وَلَا مُتَأَثِّلٍ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَه
ব্যাখ্যা: ইয়াতীম হলো যে নাবালক শিশুর পিতা নেই। ইয়াতীম বাচ্চার লালন পালন যদি এমন কারো দায়িত্বে আসে যে নিজে দরিদ্র, তবে সে তার দেখাশুনা করছে হিসেবে ইয়াতীমের মাল থেকে ভক্ষণ করতে পারবে। তবে এই ব্যক্তির জন্য ইয়াতীমের মাল থেকে ভক্ষণ করতে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখার নির্দেশ দেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
এক. (غَيْرَ مُسْرِفٍ) অপচয় করবে না অর্থাৎ প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবে না, বরং দরিদ্র ব্যক্তি সাধারণত যে খাবার খায় সেই খাবার খাবে।
দুই. (وَلَا مُبَادِرٍ) অর্থাৎ খেতে দ্রুত করবে না। খেতে দ্রুত করার দু’টি অর্থ উল্লেখ করা হয়।
এক. প্রয়োজনের আগে আগে খাওয়া। অর্থাৎ দরিদ্রের ইয়াতীমের মাল থেকে খাওয়ার বৈধতা হচ্ছে একান্ত প্রয়োজন পড়লে। তাই প্রয়োজন পড়ার আগেই খেয়ে নেয়া ঠিক নয়। আরেকটি অর্থ হলো: ইয়াতীম বালেগ হওয়ার পূর্বেই তার মাল তড়িঘড়ি করে খেয়ে শেষ করে দেয়া, যাতে করে বালেগ হয়ে সে আর কোনো মালের দাবী করতে না পারে। কুরআনের আলোকে এই অর্থটি অগ্রগণ্য। যেহেতু কুরআনে বলা হয়েছে- ‘‘ইয়াতীমের মাল প্রয়োজনাতিরিক্ত খরচ করো না বা তারা বড় হয়ে যাবে মনে করে তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলো না।’’ (সূরা আন্ নিসা ৪ : ৬)
তিন. (وَلَا مُتَأَثِّلٍ) এই বাক্যেরও দু’টি অর্থ উল্লেখ করা হয়েছে।
[এক] ইয়াতীমের মাল কাজে না লাগিয়ে তার মূল মাল খেয়ে নেয়া। [দুই] ইয়াতীমের মালকে নিজের মালের সাথে মিশিয়ে এটাকে ব্যবসার মূলধন বানিয়ে ব্যবসা করা, যাতে ইয়াতীম বড় হলে এই মাল চাইতে না পারে। দ্বিতীয় অর্থটা অনেকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। কারণ কুরআনে ইয়াতীমের মাল ভক্ষণের দু’টি শর্ত দেয়া হয়েছে। তাই দ্বিতীয় অর্থ গ্রহণ করলে দুই শর্তই থাকে এবং এটি কুরআনের আয়াতের তাফসীরের ন্যায় হয়ে যায়। প্রথম অর্থটির কথা কুরআনে উল্লেখ নেই। (মিরকাতুল মাফাতীহ)