পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীর খোরপোষ ও দাস-দাসীর অধিকার
৩৩৫০-[৯] জারীর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে দাস পালিয়ে যায়, তার সালাত গৃহীত হয় না।
অপর বর্ণনায় আছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ পলাতক দাসের ওপর (ইসলামের) কোনো দায়ভার নেই। অপর বর্ণনায় আছে যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে গোলাম স্বীয় মালিক হতে পালিয়ে যায়, সে অবশ্যই কুফরী করে যতক্ষণ পর্যন্ত না মালিকের নিকট ফিরে আসে। (মুসলিম)[1]
بَابُ النَّفَقَاتِ وَحَقِّ الْمَمْلُوْكِ
وَعَنْ جَرِيرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا أَبَقَ الْعَبْدُ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلَاةٌ» . وَفِي رِوَايَةٍ عَنْهُ قَالَ: «أَيّمَا عبد أبق فقد بَرِئت مِنْهُ الذِّمَّةُ» . وَفِي رِوَايَةٍ عَنْهُ قَالَ: «أَيُّمَا عَبْدٍ أَبَقَ مِنْ مَوَالِيهِ فَقَدْ كَفَرَ حَتَّى يَرْجِعَ إِلَيْهِم» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: গোলামের জন্য মুনীবের আনুগত্য করা জরুরী এবং মুনীবের কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়া হারাম। আনুগত্যের মাঝে যেমন তার মর্যাদা রয়েছে, তদ্রূপ এর বিপরীত পলায়নের মাঝে তার জন্য অনেক ধমকি রয়েছে। গোলামের পলায়ন কোন্ ধরনের অপরাধ, তা এ হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে। পলায়নের অপরাধ সংক্রান্ত তিনটি বর্ণনা এখানে একত্র করা হয়েছে। এক হাদীসে বলা হয়েছে, ‘‘যখন গোলাম পলায়ন করে তার কোনো সালাত কবুল হয় না’’। সালাত কবুল হয় না অর্থাৎ সে এই সালাতের কোনো সাওয়াব পায় না। যদিও সালাতের সমস্ত শর্ত এবং রুকন পাওয়ার কারণে তার সালাত শুদ্ধ হয়ে যাবে এবং সে ফরয আদায় করেছে বলা যাবে। কিন্তু এর দ্বারা সে কোনো সাওয়াব পাবে না। তাই হাদীস ‘সালাত শুদ্ধ হবে না’ এ কথা বলা হয়নি, বরং বলা হয়েছে সালাত কবুল হবে না।
আরেক বর্ণনায় এসেছে, (فقد برئت منه الذمة) অর্থাৎ তার ওপর থেকে যিম্মাহ্ উঠে যাবে, অর্থাৎ তার কোনো যিম্মাহ্ নেই। যিম্মাহ্ অর্থ নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি। অর্থাৎ নিরাপত্তার যে প্রতিশ্রুতি সে পেয়েছিল তা নষ্ট হয়ে যাবে। যেমন কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে, (ذمة الله تعالى وذمة رسول الله ﷺ) অর্থাৎ আল্লাহ এবং রসূলের যিম্মাহ্। এভাবে গোলাম তার মুনীবের আওতায় থাকলেও মুনীবের শাস্তি থেকে সে রক্ষেত ছিল। অর্থাৎ তাকে শাস্তি দেয়ার অধিকার মুনীবের ছিল না। পলায়নের কারণে তার এ অধিকার নষ্ট হয়ে গেছে। (শারহে মুসলিম ১/২ খন্ড, হাঃ ৭০; ১১/১২ খন্ড, হাঃ ৬৯)
সর্বশেষ বর্ণনায় পলায়নের সবচেয়ে বড় অপরাধের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ যে পলায়ন করলো সে কুফরী করলো। কুরআন হাদীসের আলোকে আহলুস্ সুন্নাহ্ ওয়াল জামা‘আতের ‘আকীদা মতে কেউ কবীরা গুনাহ করলেই কাফির হয়ে যায় না। তাই কুফরী করলো বলতে, কুফরীর নিকবর্তী হয়ে গেল অথবা তার কাফির হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে অথবা সে এমন কাজ করেছে যা মূলত কাফিরের কাজ। ঈমান পরিত্যাগ না করলে সে কাফির হয়ে গেছে, এ কথা বলা যাবে না। তবে সে যদি পলায়নকে বৈধ মনে করে তখন প্রকৃতপক্ষেই কাফির হয়ে যাবে। কেননা হারামকে হালাল বিশ্বাস করা কুফরী কর্ম। (মিরকাতুল মাফাতীহ)