৩৩১৭

পরিচ্ছেদঃ ১৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - লি‘আন

৩৩১৭-[১৪] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে অভিযোগ করল যে, আমার স্ত্রী কাউকেই প্রত্যাহার করে না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তবে তাকে তালাক দাও। সে বলল, আমি তার প্রতি অত্যন্ত দুর্বল (তথা ভালোবাসী)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাহলে তাকে (নাসীহাত করে) সংযত রাখ। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]

ইমাম নাসায়ী (রহঃ) বলেন, কোনো কোনো রাবী ইবনু ’আব্বাস পর্যন্ত এর সানাদ বর্ণনা করেছেন, আবার কেউ করেননি। তিনি আরো বলেন, সুতরাং হাদীসটি মুত্তাসিল নয়।

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: إِن لِي امْرَأَةً لَا تَرُدُّ يَدَ لَامِسٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «طَلِّقْهَا» قَالَ: إِنِّي أُحِبُّها قَالَ: «فأمسِكْهَا إِذا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَقَالَ النَّسَائِيُّ: رَفَعَهُ أَحَدُ الرُّوَاةِ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ وَأَحَدُهُمْ لَمْ يرفعهُ قَالَ: وَهَذَا الحَدِيث لَيْسَ بِثَابِت

وعن ابن عباس قال: جاء رجل الى النبي صلى الله عليه وسلم فقال: ان لي امراة لا ترد يد لامس فقال النبي صلى الله عليه وسلم: «طلقها» قال: اني احبها قال: «فامسكها اذا» . رواه ابو داود والنساىي وقال النساىي: رفعه احد الرواة الى ابن عباس واحدهم لم يرفعه قال: وهذا الحديث ليس بثابت

ব্যাখ্যা: (لَا تَرُدُّ يَدَ لَامِسٍ) কোনো কোনো বর্ণনায় (لا تمنع يد لامس) স্পর্শকারীর হাত প্রতিহত করে না। মর্ম হলো, কেউ তার সাথে অশ্লীলতা করলে সে কোনো আপত্তি করে না অথবা তার স্বামীর সম্পদে কেউ হাত দিলে সে বাধা দেয় না।

(طَلِّقْهَا) তুমি তাকে তালাক দিয়ে দাও। কোনো কোনো বর্ণনায় (غَرِّبْها) অর্থাৎ তাকে দূরে সরিয়ে দাও। এর মর্মও তাকে তালাক দিয়ে দাও। হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ) তালখীসে বলেন, ‘উলামায়ে কিরাম হাদীসের বাক্য (لَا تَرُدُّ يَدَ لَامِسٍ) নিয়ে মতানৈক্য পোষণ করেন। কারো কারো মতে এর অর্থ অশ্লীলতা। অর্থাৎ যে তার সাথে অশ্লীলতার আবেদন করত সে প্রত্যাখ্যান করত না বরং সুযোগ দিত। কারো কারো মতে এখানে উদ্দেশ্য হলো, অপচয় করা। অর্থাৎ কেউ তার স্বামীর সম্পদ থেকে কিছু নিতে চাইলে বা নিয়ে নিলে সে বারণ করত না।

(فَأَمْسِكْهَا إِذَنْ) অর্থাৎ তুমি যখন তাকে ভালোবাস তবে তাকে অশ্লীলতা থেকে বা সম্পদের অপচয় থেকে আটকে রাখো, হয় তাকে চোখের সামনে রেখে অথবা সম্পদের হিফাযাত বা তার সাথে বেশি বেশি সহবাস করে।

হাদীসের উভয় মর্মের মাঝে কাযী আবুত্ তাইয়িব প্রথম মর্মকে অগ্রাধিকার দেন; কেননা কেউ মাল চাইলে তা দেয়া বদান্যতার পরিচয়। আর বদান্যতা ভালো কাজ। অতএব তা ত্বলাকের কারণ হতে পারে না। এছাড়া অপচয় যদি তার নিজের সম্পদ থেকে হয় এখানে সে স্বাধীন। আর স্বামীর সম্পদ থেকে হলে স্বামী তার মালের হিফাযাত করে নিবে। অতএব এর কোনটাই ত্বলাকের কারণ নয়।

‘আল্লামা মুহাম্মাদ বিন ইসমা‘ঈল সুবুলুস্ সালামে উভয় মর্ম উল্লেখের পর লিখেন, প্রথম মর্ম নেয়া কঠিন, এমনকি আয়াতের আলোকে তা বিশুদ্ধ নয়; কেননা এ ধরনের অশ্লীল নারীকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ঘরে রেখে দেয়ার অনুমোদন দিতে পারেন না। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাউকে দাইয়ূস হওয়ার নির্দেশ দিতে পারেন না। অতএব হাদীসের এই মর্ম নেয়া ঠিক নয়। আবার দ্বিতীয় মর্ম নেয়াও দূরবর্তী। কেননা অপচয় তার নিজের মালের ক্ষেত্রে হোক বা স্বামীর মালের ক্ষেত্রে তাকে বাধা দেয় সম্ভব। এটা তালাককে ওয়াজিব করতে পারে না। এছাড়া ‘‘অমুক স্পর্শকারীর হাত প্রতিহত করে না’’ বলে বদান্যতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয় না। অতএব হাদীসের নিকটতম উদ্দেশ্য হলো, সে নরম চরিত্রের অধিকারী। তার মাঝে অপরিচিতদের প্রতি ঘৃণাবোধ বা সংকোচবোধ নেই। এমন নয় যে, সে তাদের সাথে অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়ে যায়। পুরুষ মহিলার অনেকেই এ ধরনের রয়েছে যদিও তারা অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকে। যদি তার ইচ্ছা হত যে, সে নিজেকে যিনা থেকে বারণ করে না তবে স্ত্রীর ওপর অপবাদদানকারী হত। (‘আওনুল মা‘বূদ ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২০৪৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح)