৩৩১৫

পরিচ্ছেদঃ ১৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - লি‘আন

৩৩১৫-[১২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের পিতৃ-পরিচয়কে অস্বীকৃতি জানিও না। যে স্বীয় পিতৃ-পরিচয়ে অস্বীকার করল, সে কুফরী করল। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

এখানে ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে আছে, যা প্রথমে উল্লেখ হয়েছে, আল্লাহ অপেক্ষা অধিক কেউ আত্মমর্যাদাসম্পন্ন নয়- সালাতুল খুসূফ (সূর্যগ্রহণের সালাত) অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে।

بَابُ اللِّعَانِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَرْغَبُوا عَنْ آبَائِكُمْ فَمَنْ رَغِبَ عَنْ أَبِيهِ فقد كفر»
وَذُكِرَ حَدِيثُ عَائِشَةَ «مَا مِنْ أَحَدٍ أَغْيَرُ من الله» فِي «بَاب صَلَاة الخسوف»

وعن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا ترغبوا عن اباىكم فمن رغب عن ابيه فقد كفر» وذكر حديث عاىشة «ما من احد اغير من الله» في «باب صلاة الخسوف»

ব্যাখ্যা: ‘‘আপন পিতার দিকে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে অনীহা পোষণ করো না। যে ব্যক্তি নিজ পিতা থেকে বিমুখ হয়ে অন্যের দিকে নিজেকে সম্পৃক্ত করে সে কাফির হয়ে গেছে।’’

হাদীসদ্বয়ের উদ্দেশ্য হলো, যে জেনে বুঝে স্বেচ্ছায় নিজ বংশের পরিবর্তন ঘটাতে নিজেকে আপন পিতা বাদ দিয়ে অন্যের দিকে সম্পৃক্ত করে। জাহিলিয়্যাহ্ বা অন্ধকার যুগে কেউ অন্যের ছেলেকে তার বানিয়ে নেয়াকে আপত্তি করা হতো না। এই পুত্রই তখন তার দিকে সম্পৃক্ত হত যে তাকে পুত্র বানিয়েছে, এমনকি আয়াত নাযিল হয়, ‘‘তোমরা তাদেরকে তাদের পিতৃ-পরিচয়ে ডাক। এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায়সঙ্গত।’’ (সূরা আল আহযাব ৩৩ : ৫)

আরো নাযিল হয়, ‘‘এবং আল্লাহ তোমাদের পোষ্যপুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি।’’ (সূরা আল আহযাব ৩৩ : ৪)

আয়াতদ্বয় নাযিল হলে সবাই নিজেকে প্রকৃত পিতার দিকে সম্পৃক্ত করে ডাকতে থাকেন এবং যে তাকে পালকপুত্র বানিয়েছে তার দিকে সম্পৃক্ত করা ছেড়ে দেন। তবে কেউ কেউ যারা অন্যের দিকে সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে প্রসিদ্ধ হয়ে যান, পরিচিতি লাভের জন্য তাদেরকে ঐভাবেই ডাকা হয়। তবে তা বংশ সম্পৃক্তের উদ্দেশে ছিল না। যেমন মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ এর প্রকৃত পিতা হলেন ‘আমর ইবনু সা‘লাবাহ্। আসওয়াদ তারা বন্ধু হওয়ায় তিনি তাকে পুত্র বানিয়ে নিয়েছিলেন।

হাদীসে ‘কাফির হয়ে গেছে’ বলতে কুফরী কর্ম করে কুফরীর নিকট পৌঁছে যাওয়া উদ্দেশ্য; কেননা গুনাহ কবীরা করলে কাফির হয় না বলে আমরা জেনে এসেছি। তাই কুফরী বলতে এমন কুফরী উদ্দেশ্য নয় যা তাকে চিরস্থায়ী জাহান্নামী করে দেয়। তবে পূর্বের মতো এখানেও যদি সে এমন কর্মকে বৈধ মনে করে তবে কাফির হয়ে যাবে। ধমকীর স্বরে এই ধরনের কথা বলারও অবকাশ থাকে। আবার এ অর্থও হতে পারে যে, তার কুফরীর আশঙ্কা রয়েছে।

কোনো কোনো ব্যাখ্যাকার বলেন, এখানে কুফরী শব্দের প্রয়োগটি করার কারণ হলো, সে এমন কর্ম করে আল্লাহ তা‘আলার ওপর মিথ্যারোপ করেছে। সে যেন বলছে, আল্লাহ আমাকে অমুকের পানি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, অথচ আল্লাহ তাকে ঐ ব্যক্তির পানি দিয়ে সৃষ্টি করেননি। (ফাতহুল বারী ১২শ খন্ড, হাঃ ৬৭৬৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح)