পরিচ্ছেদঃ ১০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার এবং তাদের প্রত্যেকের (স্বামী-স্ত্রীর) পারস্পরিক হক ও অধিকার সংক্রান্ত
৩২৭৩-[৩৬] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যাকে চারটি নি’আমাত দান করা হয়েছে, তাকে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ দান করা হয়েছে- ১- শুকরগুজার অন্তর, ২- জিকির-আযকারে রত জিহবা, ৩- বিপদাপদে ধৈর্যশীল শরীর, ৪- নিজের (ইজ্জত-আব্রু) ও স্বামীর ধন-সম্পদে আমানতদারিতায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ স্ত্রী। (বায়হাক্বী- শু’আবুল ঈমান)[1]
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ: أَربع من أعطيهن فقد أعطي خير الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ: قَلْبٌ شَاكِرٌ وَلِسَانٌ ذَاكِرٌ وَبَدَنٌ عَلَى الْبَلَاءِ صَابِرٌ وَزَوْجَةٌ لَا تَبْغِيهِ خَوْنًا فِي نَفسهَا وَلَا مَاله . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي شعب الْإِيمَان
ব্যাখ্যা: আমাদের জীবন ধারণের জন্য যা কিছু ব্যবহার করি সবকিছুই আল্লাহর নি‘আমাত। মানুষ যদি এ নি‘আমাতসমূহ ব্যবহার করে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে পারে এবং বিপদে ধৈর্য ধারণ করতে পারে তবে উভয় জগতেই সে সার্থক। এসব নি‘আমাতরাজির মধ্যে ঐ নি‘আমাত আরো শ্রেষ্ঠ নি‘আমাত যার বিনিময়ে আখিরাতে সে আল্লাহর নৈকট্য লাভে ধন্য হবে। এ জাতীয় নি‘আমাতের মধ্যে এখানে চারটি নি‘আমাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
(১) কৃতজ্ঞ অন্তরঃ অর্থাৎ আল্লাহর নি‘আমাত পেয়ে যে হৃদয় তাঁর শুকরিয়া আদায় করতে পারে এমন হৃদয় আল্লাহ যাকে দান করেছেন সে দুই জগতেরই মহা কল্যাণ লাভ করেছে।
(২) জিকিরকারী জিহবাঃ অর্থাৎ আল্লাহ যাকে তার জিকির আদায়কারী রসনা দান করেছেন সে প্রকাশ্যে গোপনে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং যিক্রের মাধ্যমে সে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে ধন্য হয়, এমন ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতের প্রকৃত কল্যাণ হাসিল করেছেন।
(৩) বিপদে ধৈর্যশীল শরীরঃ এর অর্থ আল্লাহ তা‘আলা যাকে এমন শরীর দান করেছেন যে শরীর সাংসারিক কষ্ট-ক্লেশের পরও ‘ইবাদাতে ধৈর্যশীল থাকে, রোগ-ব্যাধি, শোক, বিপদ-মুসীবাত ইত্যাদি ধৈর্যের সাথে সহ্য করে এবং তাতে আল্লাহকে ভুলে যায় না।
(৪) এমন স্ত্রী, যে নিজের ব্যাপারে এবং স্বামীর ধন-সম্পদের ব্যাপারে খিয়ানাতের চেষ্টা করে না। অর্থাৎ নিজের ইজ্জত-আব্রু এবং স্বামীর মাল-সম্পদ হিফাযাতে সে সংকল্পবদ্ধ।
এই চারটি নি‘আমাত আল্লাহ যাকে দান করেছেন তাকে দুনিয়া আখিরাতের শ্রেষ্ঠ নি‘আমাত দান করেছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)