৩২৬১

পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার এবং তাদের প্রত্যেকের (স্বামী-স্ত্রীর) পারস্পরিক হক ও অধিকার সংক্রান্ত

৩২৬১-[২৪] আয়াস ইবনু ’আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আল্লাহ তা’আলার বান্দীগণকে (স্ত্রীগণকে ক্রীতদাসীর ন্যায়) মেরো না। অতঃপর ’উমার এসে বললেন, (আপনার নিষেধাজ্ঞার দরুন) স্বামীদের ওপর রমণীদের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে (প্রয়োজনসাপেক্ষে) মারার অনুমতি দিলেন। এমতাবস্থায় রমণীগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণীগণের নিকট পুনঃপুন এসে স্বামীদের (অত্যাচারের) ব্যাপারে অভিযোগ করতে লাগল। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, শুনে রাখ! আমার পরিবার-পরিজনের নিকট স্ত্রীগণ স্বামীদের অভিযোগ নিয়ে পুনঃপুন আসছে যে, তোমাদের মধ্যে (যারা স্ত্রীদেরকে এরূপে কষ্ট দেয়) তারা কোনক্রমেই ভালো মানুষ নয়। (আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ ও দারিমী)[1]

وَعَنْ إِيَاسِ بْنِ عَبْدُ اللَّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «لَا تَضْرِبُوا إِمَاءِ اللَّهِ» فَجَاءَ عُمَرُ إِلَى رَسُولِ الله فَقَالَ: ذَئِرْنَ النِّسَاءُ عَلَى أَزْوَاجِهِنَّ فَرَخَّصَ فِي ضَرْبِهِنَّ فَأَطَافَ بَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نِسَاءٌ كَثِيرٌ يَشْكُونَ أَزْوَاجَهُنَّ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَقَدْ طَافَ بِآلِ مُحَمَّدٍ نِسَاءٌ كَثِيرٌ يَشْكُونَ أَزْوَاجَهُنَّ لَيْسَ أُولَئِكَ بِخِيَارِكُمْ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَه والدارمي

وعن اياس بن عبد الله قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا تضربوا اماء الله» فجاء عمر الى رسول الله فقال: ذىرن النساء على ازواجهن فرخص في ضربهن فاطاف بال رسول الله صلى الله عليه وسلم نساء كثير يشكون ازواجهن فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لقد طاف بال محمد نساء كثير يشكون ازواجهن ليس اولىك بخياركم» . رواه ابو داود وابن ماجه والدارمي

ব্যাখ্যা: জাহিলী যুগের নারীদেরকে তাদের স্বামীরা অমানসিকভাবে প্রহার করতো। ইসলাম এসে এই কর্ম বন্ধ করে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছে। ইতিপূর্বে আলোচনা করা হয়েছে স্ত্রীকে প্রহার করতেই হলে তা যৎসামান্য, এরপরও বলা হয়েছে এটা কোনো ভদ্রচিত কাজ নয়।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘তোমরা আল্লাহর বান্দীদের অর্থাৎ তোমাদের স্ত্রীদের প্রহার করো না।’’ তোমরা যেমন আল্লাহর বান্দা তারাও তেমনি আল্লাহর বান্দি। উভয়ের আদি পিতা আদম (আঃ) ও আদি মাতা হাওয়া (আঃ)। সুতরাং তাদের প্রতি সদাচারী হও। এতে নারীরা আস্কারা পেয়ে কিছুটা বাড়াবাড়ি শুরু করলে ‘উমার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে অভিযোগ করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনার নিষেধাজ্ঞায় স্ত্রীদের স্পর্ধা বেড়ে গেছে, তখন তিনি আবার প্রয়োজনে তাদের প্রহারের অনুমতি প্রদান করলেন। কয়েক দিনের মধ্যে নারীরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের নিকট এসে অভিযোগ দিতে শুরু করলেন যে, তাদের স্বামীরা তাদের প্রহার করে। ফলে আল্লাহর রসূল এক যুগান্তকারী কথা বলে দিলেন যে, ‘‘যারা স্ত্রীকে প্রহার করে তারা কখনো ভালো মানুষ নয়।’’ অর্থাৎ ভদ্র ও সম্ভ্রান্ত মানুষের স্বভাব ও চরিত্র এটা নয় যে, কথায় কথায় স্ত্রীকে ধরে প্রহার করবে।

এটা অতীব ঘৃণিত ও ছোট লোকের কাজ। ইতিপূর্বে আলোচনা হয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীদের প্রহারের যে অনুমতি দিয়েছিলেন সেটাও কুরআনের নির্দেশক্রমেই। কিন্তু মানুষ প্রয়োজনে জায়িয বিষয় নিয়ে অতীব বাড়াবাড়ি করে থাকে। এ হাদীস দ্বারা বুঝা যায়, স্ত্রীকে মারা বৈধ কিন্তু তা কোনো ক্রমেই ভদ্রচিত কাজ নয়, সুতরাং তাকে না মেরে তার খারাপ আচরণ চরিত্রের উপর ধৈর্যধারণ করা এবং তাকে ক্ষমা করাই সবচেয়ে উত্তম এবং অধিকতর সুন্দর। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৭২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح)