৩২২৪

পরিচ্ছেদঃ ৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ওয়ালীমাহ্ (বৌভাত)

৩২২৪-[১৫] ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রথম দিনের খাবারের আয়োজন আবশ্যকীয়, দ্বিতীয় দিনের আয়োজন সুন্নাত, তৃতীয় দিনের আয়োজন লোকদেখানো। আর যে লোক দেখানো আয়োজন করে, আল্লাহ তা’আলাও তাকে সর্বসাধারণের সামনে (কিয়ামতের দিন) রিয়াকারী বলেই ঘোষণা করবেন। (তিরযিমী)[1]

وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ
قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «طَعَامُ أَوَّلِ يَوْمٍ حق وَطَعَام يَوْم الثَّانِي سنة وَطَعَام يَوْم الثَّالِثِ سُمْعَةٌ وَمَنْ سَمَّعَ سَمَّعَ اللَّهُ بِهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن ابن مسعود قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «طعام اول يوم حق وطعام يوم الثاني سنة وطعام يوم الثالث سمعة ومن سمع سمع الله به» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: বিবাহ উৎসবে তিনদিন খানা-পিনা অনুষ্ঠানাদি চলে থাকে। এ ক্ষেত্রে বরপক্ষ মানুষকে দা‘ওয়াত করে থাকে, অন্যদের কবুল করার আবশ্যকতা কতটুক অত্র হাদীসে তা বিধৃত হয়েছে। হাদীসে এসেছে, প্রথম দিনের খানা আবশ্যক বা ওয়াজিব। এটা তাদের পক্ষে দলীল যারা ওয়ালীমাহ্ করাকে ওয়াজিব অথবা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ্ মনে করেন। ওয়াজিবের ভিত্তিতেই তা বর্জনকারী গুনাহগার হয়ে থাকে এবং শাস্তি ও ভৎর্সনার উপযোগী হয়।

দ্বিতীয় দিনের খানা সুন্নাত, হতে পারে প্রথম ও দ্বিতীয় উভয় দিনই ‘আক্দের পরে আবার প্রথম দিন আক্দের পূর্বে এবং দ্বিতীয় দিন আক্দের পরে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আর তৃতীয় দিনের খানা (খ্যাতি বা সুনামের জন্য ) সুনাম সুখ্যাতি এবং রিয়া বা লৌকিকতার জন্য হয়ে থাকে। যেন লোকে তা শোনে এবং দেখে, তবে তাতে রিয়া বা লৌকিকতার চেয়েও সুনাম-সুখ্যাতি অথবা ব্যক্তির স্বাবলম্বীতাই প্রাধান্য পেয়ে থাকে, যা পরিত্যাজ্য। কেননা যে ব্যক্তি অহংকারবশত বা লৌকিকতা প্রদর্শন করতঃ নিজেকে বদান্যতা, মহানুভবতা বা উদারতার গুণে প্রসিদ্ধ করার প্রয়াস চালায়, আল্লাহ তা‘আলা তাকে কিয়ামতের দিবসে ‘‘আহলুল আরাসাত’’ বা ফাঁকা জায়গার অধিবাসীর মাঝে একজন চরম মিথ্যাবাদী হিসেবে প্রসিদ্ধি করাবেন।

তথায় আল্লাহ তা‘আলা বিয়াকারী ব্যক্তির রিয়া (লৈাকিকতা) এবং সুম্‘আহ্ (সুনাম-সুখ্যাতি) সৃষ্টিকূলের কর্ণকুহরে পৌঁছিয়ে দিবেন, ফলে রিয়াকারী লোকটি জনসম্মুখে অপমানিত হবে।

‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ যখন আল্লাহ তা‘আলা কোনো ব্যক্তিকে নি‘আমাত দিয়ে থাকেন তখন ঐ ব্যক্তির উচিত নি‘আমাতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। ফলে প্রথম দিনের ওয়ালীমাহ্ আদায়ে ভুল-ত্রুটি শুদ্ধ করার লক্ষ্যক্ষ দ্বিতীয় দিনে ওয়ালীমাহ্ অনুষ্ঠান করা মুস্তাহাব। কেননা সুন্নাত পালন ওয়াজিবের পরিপূরক। আর তৃতীয় দিবসের ওয়ালীমাহ্ রিয়া এবং সুম্‘আহ্ ছাড়া আর কিছু নয়। তাই প্রথম দিবসের ওয়ালীমার দা‘ওয়াত গ্রহণ করা আবশ্যক, দ্বিতীয় দিবসের দা‘ওয়াত গ্রহণ করা মুস্তাহাব, আর তৃতীয় দিবসের দা‘ওয়াত গ্রহণ করা মাকরূহ তাহরীম তথা হারাম। এতে ইমাম মালিক-এর সাথীদের মতের প্রত্যুত্তর দেয়া হলো। কেননা তারা সাতদিন পর্যন্ত ওয়ালীমার দা‘ওয়াত গ্রহণ করা মুস্তাহাব বলেন।

ইমাম ত্ববারানী ইবনু ‘আব্বাস থেকে বর্ণনা করেন যে, প্রথম দিবসে ওয়ালীমার খাবার সুন্নাত, দুই দিনের খাবার মর্যাদাপূর্ণ কাজ এবং তিন দিনের খাবার রিয়া ও সুম্‘আহ্। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৩য় খন্ড, হাঃ ১০৯৭; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح)