২৯৫০

পরিচ্ছেদঃ ১১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারো সম্পদে অন্যায় হস্তক্ষেপ, ঋণ ও ক্ষতিপূরণ

২৯৫০-[১৩] উক্ত রাবী [সামুরাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি যা বুঝে নিয়েছে সে তার জন্য দায়ী হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তা সে প্রাপককে বুঝিয়ে দিবে। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «عَلَى الْيَدِ مَا أَخَذَتْ حَتَّى تُؤَدِّيَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه

وعنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «على اليد ما اخذت حتى تودي» . رواه الترمذي وابو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: (عَلَى الْيَدِ مَا أَخَذَتْ) অর্থাৎ- হাতের উপর আবশ্যক সে যা গ্রহণ করেছে তা ফেরত দেয়া। ত্বীবী বলেন, অর্থাৎ- হাত যা গ্রহণ করেছে তা হাতওয়ালার উপর যিম্মাদারী স্বরূপ। অধিকতার দিকে লক্ষ্য করে বিষয়টিকে হাতের দিকে সম্বন্ধ করা হয়েছে, কেননা অধিকাংশ ক্ষেত্রে হাত দ্বারাই সম্পদ লেন-দেন হয়ে থাকে।

(حَتّٰى تُؤَدِّىَ) অর্থাৎ- হাত যতক্ষণ পর্যন্ত সে সম্পদ তার মালিকের কাছে ফেরত না দিবে, সুতরাং ছিনতাইয়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তির সম্পদ ব্যক্তিকে ফেরত দেয়া আবশ্যক, যদিও ব্যক্তি তার সম্পদ তার কাছ থেকে অনুসন্ধান না করে। আর আরিয়ার ক্ষেত্রে কোনো ফলদার বৃক্ষ নির্দিষ্ট সময় ফেরত দেয়া যখন তার নির্দিষ্ট সময় শেষ হয়ে যায় যদিও তার মালিক তার কাছ থেকে তা অনুসন্ধান না করে। আর আমানত রাখা সম্পদের ক্ষেত্রে একমাত্র ঐ সময় তা ফেরত দেয়া আবশ্যক হবে যখন মালিক তা অনুসন্ধান করবে। এ মত ইবনুল মালিক বর্ণনা করেন। কারী বলেনঃ এটা একটি সুন্দর বিশ্লেষণ, অর্থাৎ- যে ব্যক্তি কারো সম্পদ ছিনতাই, আরিয়া আমানত হিসেবে গ্রহণ করবে, ঐ ব্যক্তির তা ফেরত দেয়া আবশ্যক হয়ে যাবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

নায়নুল আওত্বারের লেখক বলেনঃ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ), আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ), ‘আত্বা, শাফি‘ঈ, আহমাদ ও ইসহক বলেন, আর ফাত্হ-এর ভাষ্যকার একে জুমহূরের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন, ধারে নেয়া বস্তু যখন ধারগ্রহণকারীর হাতে ধ্বংস হয়ে যাবে। তখন সে তার জন্য দায়ী থাকবে। তারা সামুরার উল্লেখিত হাদীস দ্বারা ও আল্লাহ তা‘আলার অর্থাৎ- إِنَّ اللّٰهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تُؤَدُّوا الْأَمَانَاتِ إِلٰى أَهْلِهَا ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ আমানতকে তার হকদারের কাছে আদায় করে দিতে তোমাদেরকে নির্দেশ দেন’’- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ৫৮) এ বাণীর মাধ্যমে দলীল উপস্থাপন করেন। আর এটা অজানা নয় যে, আমানত রাখা বস্তু যখন আমানতদারের হাতে ধ্বংস হয়ে যাবে তখন সে তার জন্য দায়ী হবে না। (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবী এবং অন্যান্যদের থেকে কতিপয় বিদ্বান বলেন, আরিয়া গ্রহণকারীর ওপর যিম্মাদারিত্ব আবশ্যক নয়, তবে মালিকের অনুমোদনহীন কাজে ব্যবহার করে থাকলে আলাদা কথা। এটা সাওরী ও কুফাবাসীর উক্তি, ইসহকও এ মত পোষণ করেন।) তারা ‘আমর বিন শু‘আয়ব-এর হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহণ করেছে, তিনি তার পিতা হতে, তাঁর পিতা তার দাদা হতে বর্ণনা করেন, নিশ্চয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, (لا ضَمَانَ عَلٰى مُؤْتَمَنٍ) অর্থাৎ- আমানতদারের ওপর কোনো যিম্মাদারিত্ব নেই।

শাওকানী (রহঃ) বলেনঃ নিশ্চয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বর্ণিত উক্তিতে ঐ ব্যাপারে প্রমাণ আছে যে, যে ব্যক্তি কোনো বস্তুর ব্যাপারে আমানত গ্রহণ করবে তার ওপর কোনো যিম্মাদারী নেই; যেমন সংরক্ষণকারী, আরিয়া গ্রহণকারী, তবে সংরক্ষণকারীর কোনো যিম্মাদারী লাগবে না। এটা সকলের ঐকমত্যে বলা হয়েছে- তবে বস্তু সংরক্ষণের ব্যাপারে অবহেলা করার অপরাধ ঘটে থাকলে আলাদা কথা। অপরাধের কারণে তার যিম্মাদারিত্বের দিক হলো- অপরাধের কারণে ব্যক্তি খিয়ানাতকারীতে পরিণত হয়। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (وَلَا عَلَى الْمُسْتَوْدَعِ غَيْرِ الْمُغِلِّ ضَمَانٌ) অর্থাৎ- ‘‘সংরক্ষণকারী আত্মসাৎকারী না হলে তার ওপর যিম্মাদারিত্ব নেই’’- এ উক্তির কারণে খিয়ানাতকারী যিম্মাদার, আর আত্মসাৎকারী খিয়ানাতকারী। এভাবে বস্তু সংরক্ষণকারী হতে যখন বস্তু সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটি সৃষ্টি হবে তখন সে দায়ী থাকবে। কেননা এটা খিয়ানাতের একটি ধরণ। পক্ষান্তরে ধার নেয়ার ক্ষেত্রে হানাফী এবং মালিকীগণ ঐ দিকে গিয়েছেন যে, তা ধারগ্রহণকারীর ওপর দায়িত্ব বর্তাবে না, আর এটা ঐ সময় যখন ধারগ্রহণকারী হতে ত্রুটি-বিচ্যুতি প্রকাশ না পাবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ১২৬৬)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع)