পরিচ্ছেদঃ ১১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারো সম্পদে অন্যায় হস্তক্ষেপ, ঋণ ও ক্ষতিপূরণ
২৯৪৪-[৭] সা’ঈদ ইবনু যায়দ (রাঃ) হতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি পতিত ভূমি চাষাবাদের উপযোগী করে সেটা তার (হক)। অন্যায় দলখকারীর মেহনতের কোনো হক নেই। (আহমাদ, তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1]
عَن سعيد بْنِ زَيْدٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «من أحيى أَرْضًا مَيْتَةً فَهِيَ لَهُ وَلَيْسَ لِعِرْقٍ ظَالِمٍ حق» . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: (مَنْ أَحْيٰى أَرْضًا مَيْتَةً) মৃত জমিন বলতে ঐ জমিন যা আবাদ করা হয়নি, জমিন আবাদ করাকে জীবিতের সাথে সাদৃশ্য দেয়া হয়েছে এবং আবাদ না করে জমিন শূন্য রাখাকে মৃতের সাথে সাদৃশ্য দেয়া হচ্ছে।
‘ইরাক্বী বলেনঃ الموات، الميتة এবং الموتان অর্থাৎ- ঐ জমিনকে বলা হয় যা আবাদ করা হয়নি, অনাবাদী জমিনকে এ নামে নামকরণ করা হয়েছে মৃতের সাথে এর সাদৃশ্য থাকার কারণে, আর তা হলো মৃতের মাধ্যমে যেমন উপকৃত হওয়া যায় না, তেমনি জমিতে শস্য রোপণ, নির্মাণ অথবা অনুরূপ কিছু বর্জনের মাধ্যমে উপকৃত হওয়া যায় না।
(فَهِىَ لَه) অর্থাৎ- ঐ জমিন ঐ ব্যক্তির মালিকানায় পরিণত হবে চাই সে জমিন বসতির নিকটবর্তী থাকুক অথবা দূরত্বে থাকুক, চাই ইমাম ঐ ব্যাপারে অনুমতি দিক অথবা অনুমতি না দিক এটা জুমহূরের উক্তি।
আর আবূ হানীফার মতে মুতলাকভাবে ইমামের অনুমতি আবশ্যক। আর মালিক (রহঃ)-এর মতে যার বসতির নিকটে হবে সে জমির ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে। আর নিকটবর্তীতার আরও সীমা হলো বসতির অধিকারীরা যা দেখা-শোনা করার মুখাপেক্ষী। আর ত্বহাবী সমুদ্র ও নদীর পানির উপর এবং পাখি ও প্রাণী হতে যা শিকার করা হয় তার উপর ক্বিয়াস করার মাধ্যমে এ অধ্যায়ের হাদীস দ্বারা জুমহূরের পক্ষ সমর্থন করেছেন। কেননা তারা ঐ কথার উপর একমত হয়েছেন যে, যে তা গ্রহণ করবে অথবা শিকার করবে সেই তার মালিক হবে চাই নিকটে থাকুক অথবা দূরে থাকুক, চাই ইমাম অনুমতি দিক অথবা অনুমতি না দিক, ফাত্হুল বারীতেও অনুরূপ আছে। আমি বলব, আবূ হানীফার দু’ সাথী জুমহূরের উক্তির মাধ্যমে আবূ হানীফার বিরোধিতা করেছেন। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৩৭৮)
খত্ত্বাবী বলেনঃ মৃত ভূখণ্ডকে জীবিত করা, অর্থাৎ জমিন খনন করা, তাকে ফসলীতে পরিণত করা, সেখানে পানি প্রবাহিত করা এবং আবাদের ধরণসমূহ থেকে অনুরূপ কিছু করা। যে এ ধরনের কাজ করবে, সে এর মাধ্যমে জমিনের মালিক হয়ে যাবে। চাই তা বাদশাহর অনুমতিতে হোক অথবা অনুমতি ছাড়া হোক আর তা এ কারণে যে, এটা শর্ত ও জাযার ব্যাখ্যা, এটা কোনো ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে কোনো ব্যক্তির ওপর কোনো সময়কে বাদ দিয়ে কোনো সময়ের উপর সীমাবদ্ধ নয়। অধিকাংশ বিদ্বানগণ এ দিকে গিয়েছেন।
(لَيْسَ لِعِرْقٍ ظَالِمٍ حَقٌّ) খত্ত্বাবী বলেনঃ ব্যক্তি নিজ জমিন ছাড়া অন্যের জমিনে মালিকের অনুমতি ছাড়া কোনো কিছু রোপণ করা অথবা মালিকের অনুমতি ছাড়া অন্যের জমিতে কোনো কিছু নির্মাণ করা, এমন ক্ষেত্রে রোপণকারী বা নির্মাণকারীকে তা উপড়িয়ে ফেলার ব্যাপারে নির্দেশ করা হবে। তবে জমির মালিক তা বর্জনের ব্যাপারে সন্তুষ্ট থাকলে আলাদা কথা।
নিহায়াহ্ গ্রন্থে আছে- কোনো ব্যক্তির এমন কোনো জমিনে আসা যে জমিনকে তার পূর্বে অন্য কোনো লোক জীবিত করেছে আবাদ করেছে, অতঃপর সে জমিন নিজের জন্য সাব্যস্ত করতে দখল স্বরূপ তাতে কোনো কিছু রোপণ করা। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ৩০৭১)