পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্রয়-বিক্রয়ের শর্তসমূহ
২৮৭৭-[৩] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন বারীরাহ্ (রাঃ) আমার নিকট এসে বলল, আমি আমার মালিকের সাথে প্রতি বছর এক উক্বিয়্যাহ্ [৪০ দিরহাম] হিসাবে নয় বছরে নয় উক্বিয়্যাহ্ [৩৩৬ দিরহাম] দেয়ার শর্তে লিখিত চুক্তিনামা সম্পাদনা করেছি, এজন্য আপনি আমাকে সাহায্য করুন। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেন, তোমার মালিক যদি ইচ্ছাপোষণ করে (আর তোমার যদি সম্মতি থাকে) যে, উল্লেখিত দিরহাম একসাথে আদায় করে আমি তোমাকে মুক্ত করে দিব এবং মুক্তিদান সূত্রে আমি তোমার উত্তরাধিকার তথা স্বত্বের অধিকারিণী বলে গণ্য হবো।
বারীরাহ্ (রাঃ) তার মালিকের কাছে গিয়ে এ কথা ব্যক্ত করলে তারা তা প্রত্যাখ্যান করল এবং বলল, উক্ত উত্তরাধিকার-স্বত্ব আমাদের থাকবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম [’আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে] বললেন, তুমি তাকে কিনে নাও এবং মুক্ত করে দাও। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকেদেরকে খুৎবা দিতে গিয়ে আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করলেন। অতঃপর বললেন, একশ্রেণীর লোকের এই স্বভাব কেন যে, তারা এরূপ শর্তারোপ করে, যা আল্লাহর কিতাবে নেই? আর আল্লাহর কিতাবে নেই, এমন সকল প্রকার শর্তই বাতিল বলে সাব্যস্ত হবে। এভাবে যদি একশ’ শর্তও করে, তবুও আল্লাহ তা’আলার শারী’আতই (বিধানই) অগ্রগণ্য এবং আল্লাহ তা’আলার দেয়া শর্তই সর্বাধিক সুদৃঢ়। তাই উত্তরাধিকার-স্বত্ব একমাত্র মুক্তকারীর বলে গণ্য হবে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابٌ فِى الْبَيْعِ الْمَشْرُوْطِ
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: جَاءَتْ بَرِيرَةُ فَقَالَتْ: إِنِّي كَاتَبْتُ عَلَى تِسْعِ أَوَاقٍ فِي كُلِّ عَامٍ وُقِيَّةٌ فَأَعِينِينِي فَقَالَتْ عَائِشَةُ: إِنْ أَحَبَّ أَهْلُكِ أَنْ أَعُدَّهَا لَهُمْ عُدَّةً وَاحِدَةً وَأُعْتِقَكِ فَعَلْتُ وَيَكُونُ وَلَاؤُكِ لِي فَذَهَبَتْ إِلَى أَهْلِهَا فَأَبَوْا إِلَّا أَنْ يَكُونَ الْوَلَاءُ لَهُمْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خُذِيهَا وَأَعْتِقِيهَا» ثُمَّ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي النَّاسَ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ: «أَمَّا أبعد فَمَا بَالُ رِجَالٍ يَشْتَرِطُونَ شُرُوطًا لَيْسَتَ فِي كِتَابِ اللَّهِ مَا كَانَ مِنْ شَرْطٍ لَيْسَ فِي كِتَابِ اللَّهِ فَهُوَ بَاطِلٌ وَإِنْ كَانَ مِائَةَ شَرْطٍ فَقَضَاءُ اللَّهِ أَحَقُّ وَشَرْطُ اللَّهِ أَوْثَقُ وَإِنَّمَا الْوَلَاءُ لِمَنْ أَعْتَقَ»
ব্যাখ্যা: একদল ‘উলামার মতে (اِشْتَرْطٰى) আলোচ্য أمر ইবাহাত বা বৈধতার জন্য। আর ‘আমর-এর উল্লেখ হয়েছে সতর্ক করার জন্য এ মর্মে যে, শর্ত করা বা করাতে কোনো ফায়িদাহ্ নেই। আর সম্ভবত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটাই বলতে চেয়েছেন।
(اشترطى أو لا تشترطى لا يغيرهم) অর্থাৎ শর্ত করা না করা, এতে তাদের কোনো উপকার হবে না। আর এ ব্যাখ্যাটাই অধিক শক্তিশালী ও মজবুত। যা আয়মান-এর বর্ণনায় প্রমাণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে বললেন, তুমি শর্তারোপ কর ও তাদেরকেও করতে দাও। তারাও তাদের ইচ্ছানুযায়ী শর্ত করবে। আলোচ্য হাদীসে এটারও বৈধতা রয়েছে যে, লেনদেনের সম্পদ কম হোক বা বেশী হোক তা লিপিবদ্ধ করে রাখা বৈধ। আর ঋণের ক্ষেত্রে তা পরিশোধের বিষয়ে প্রতিমাসের কিস্তিতে মাসের প্রথম, মধ্য উল্লেখ করা ছাড়াই পূর্ণ মাসের সময় নির্ধারণ করা বৈধ। ইবনুল বার এমনটাই বলেছেন। (ফাতহুল বারী ৫ম খন্ড, হাঃ ২৫৬৩)