পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়
২৮৪৭-[১৪] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ [১] যারা বাজারে বিক্রি করার জন্য বাহির হতে খাদ্য-দ্রব্য নিয়ে আসে, তাদের খাদ্য-দ্রব্য ক্রয়ের জন্য বাজারে পৌছার আগেই এগিয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে মিলিত হবে না। [২] আর ক্রয়-বিক্রয়ের কথা চলার সময় একজনের সাথে অন্য কেউ এ বিষয়ে কথা বলবে না। [৩] ক্রয়-বিক্রয়ের বিষয়ে দালালী করবে না। [৪] গ্রামের লোকের পণ্য-সামগ্রী শহরের লোকজন বিক্রি করে দেবার জন্য চাপ প্রয়োগ করবে না। [৫] উট, ছাগলের (বিক্রয় করার আগে তার) স্তনে দু’ তিন দিনের দুধ জমা রেখে স্তনকে ফুলিয়ে রাখবে না। যদি কেউ এরূপ করে তখন ক্রয়কারীর জন্য দুধ দোহনের পর সুযোগ থাকবে, ইচ্ছা করলে সে ক্রয়-বিক্রয় ঠিক রাখবে, আর ইচ্ছা করলে ক্রয়-বিক্রয় ভঙ্গ করে তা ফেরত দিবে। তবে যদি ভঙ্গ করে (দুধ পানের জন্য) তাকে এক সা’ খুরমা সাথে দিয়ে দিবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]
মুসলিম-এর এক বর্ণনায় আছে, যে লোক স্তন ফুলানো বকরী ক্রয় করবে, তার জন্য তিনদিনের সুযোগ থাকবে। সে বকরী ফেরত দেয়, তবে এর সাথে এক সা’ খাদ্যদ্রব্য ফেরত দিবে, অর্থাৎ- উত্তম গম দিতে সে বাধ্য নয়।
بَابُ الْمَنْهِىِّ عَنْهَا مِنَ الْبُيُوْعِ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا تَلَقُّوُا الرُّكْبَانَ لِبَيْعٍ وَلَا يَبِعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ وَلَا تَنَاجَشُوا وَلَا يَبِعْ حَاضِرٌ لِبَادٍ وَلَا تُصَرُّوا الْإِبِلَ وَالْغَنَمَ فَمِنِ ابْتَاعَهَا بَعْدَ ذَلِكَ فَهُوَ بِخَيْرِ النَّظِرَيْنِ بَعْدَ أَنْ يحلبَها: إِنْ رَضِيَهَا أَمْسَكَهَا وَإِنْ سَخِطَهَا رَدَّهَا وَصَاعًا مِنْ تمر
وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ: مَنِ اشْتَرَى شَاةً مُصَرَّاةً فَهُوَ بِالْخِيَارِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ: فَإِنْ رَدَّهَا رَدَّ مَعهَا صَاعا من طَعَام لَا سمراء
ব্যাখ্যা: ‘উলামাগণ এ মর্মে একমত হয়েছেন যে, কেউ কারো ক্রয়ের উপর ক্রয় এবং বিক্রয়ের উপর বিক্রয় এবং কারো দর করার উপর অন্য কারো দর করা নিষিদ্ধ। তবে যদি কেউ এমনটা করে এবং কেনা-বেচায় চুক্তিবদ্ধ হয় তাহলে সে নাফরমান বা সীমালঙ্ঘনকারী হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সেই সাথে কেনা-বেচা সংঘটিত হয়ে যাবে। আর এটাই শাফি‘ঈ, হানাফীসহ অন্যান্যদের মত। কিন্তু দাঊদ (রহঃ)-এর মতে কেনা-বেচা সংঘটিত হবে না। মালিক (রহঃ) হতে দু’টি বর্ণনা রয়েছে, তাদের অধিকাংশই এ মত দিয়েছেন যে, একে অন্যের উপর কেনা-বেচা করা বৈধ তার ক্ষেত্রেই হবে, যে মূল্য বেশী দিবে। ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) এটার ক্ষেত্রে কতিপয় সালাফগণ অনীহা প্রকাশ করেছেন।
আর (وَلَا تَنَاجَشُوْا) অর্থাৎ- (النجش) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো কোনো দ্রব্যের মূল্য বেশী বলা, এটা দ্রব্য কেনার প্রতি আগ্রহী হয়ে নয়, বরং অন্যকে ধোঁকা দেয়ার জন্য করা হয়। যাতে উক্ত দ্রব্য বেশী মূল্যে ক্রেতা ক্রয় করে নেয়। এটা হারাম। দালালের ধোঁকার মধ্যে দিয়ে যদি ক্রয়-বিক্রয় হয় আর এটা সম্পর্কে যদি বিক্রেতা অবগত না থাকে, তবে এ ধরনের কেনা-বেচা বৈধ। পাপ সম্পূর্ণ কর্তার ওপর বর্তাবে। আর এটা যদি বিক্রেতার তরফ থেকে না হয়ে থাকে তবে ক্রেতার কোনো ঐচ্ছিকতা থাকবে না।
(وَلَا تُصَرُّوا الْإِبِلَ) অর্থাৎ- উটনীর স্তন থেকে ২/৩ দিন যাবৎ দুধ দোহন না করে স্তন বড় করা যাতে ক্রেতার মনে এ ধারণা জন্মে যে, অধিক পরিমাণে দুধ দেয়াই এ উটনীর স্বভাব। এমনটা করা হারাম। (শারহে মুসলিম ১০ম খন্ড, হাঃ ১৫১৫)