পরিচ্ছেদঃ মার্জনা করা এবং মূর্খদেরকে এড়িয়ে চলার বিবরণ
আল্লাহ তাআলা বলেন,
خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الْـجَاهِلِيْنَ
অর্থাৎ, তুমি ক্ষমাশীলতার নীতি অবলম্বন কর, সৎকাজের নির্দেশ দাও এবং মূর্খদেরকে এড়িয়ে চল। (সূরা আ’রাফ ১৯৯)
তিনি অন্য জায়গায় বলেন,
فَاصْفَحِ الصَّفْحَ الْـجَمِيْلَ
অর্থাৎ, তুমি পরম সৌজন্যের সাথে তাদেরকে ক্ষমা কর। (সূরা হিজর ৮৫)
তিনি আরো বলেন,
وَلْيَعْفُوا وَلْيَصْفَحُوا أَلاَ تُـحِبُّوْنَ أنْ يَّغْفِرَ اللهُ لَكُمْ
অর্থাৎ, তারা যেন ওদেরকে ক্ষমা করে এবং ওদের দোষ-ত্রুটি মার্জনা করে। তোমরা কি পছন্দ করো না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা ক’রে দিন? (সূরা নূর ২২)
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَالْكَاظِمِيْنَ الْغَيْظَ وَالْعَافِيْنَ عَنِ النَّاسِ وَاللهُ يُـحِبُّ الْمُحْسِنِيْنَ
অর্থাৎ, (সেই ধর্মভীরুদের জন্য বেহেশত্ প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় দান করে,) ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে থাকে। আর আল্লাহ (বিশুদ্ধচিত্ত) সৎকর্মশীলদেরকে ভালবাসেন। (সূরা আলে ইমরান ১৩৪) তিনি অন্য জায়গায় বলেন,
وَلَـمَنْ صَبَرَ وَغَفَرَ إِنَّ ذٰلِكَ لَمِنْ عَزْمِ الأُمُورِ
অর্থাৎ, অবশ্যই যে ধৈর্য ধারণ করে এবং ক্ষমা করে, নিশ্চয় তা দৃঢ়-সংকল্পের কাজ। (সূরা শূরা ৪৩)
(৩৪৬৫) আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, তিনি একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন, ’আপনার উপর কি উহুদের দিনের চেয়েও কঠিন দিন এসেছে?’ তিনি বললেন, ’’আমি তোমার কওম থেকে বহু কষ্ট পেয়েছি এবং সবচেয়ে বেশি কষ্ট আক্বাবার দিন পেয়েছি, যেদিন আমি নিজেকে ইবনে আব্দে ইয়ালীল ইবনে আব্দে কুলাল (ত্বায়েফের এক বড় সর্দার) এর উপর (ইসলামের দিকে আহবান করার জন্য) পেশ করেছিলাম। সে আমার দাওয়াত গ্রহণ করল না। সুতরাং আমি চিন্তিত হয়ে চলতে শুরু করলাম। তারপর ’ক্বারনুস সাআলিব’ (বর্তমানে সাইল কাবীর) নামক স্থানে পৌঁছলে সেখানে কিছু স্বস্তি অনুভব করলাম। আমি (আকাশের দিকে) মাথা উঠিয়ে দেখতে পেলাম যে, একটা মেঘখণ্ড আমার উপর ছায়া ক’রে আছে। অতঃপর গভীর দৃষ্টিতে দেখলাম, তাতে জিবরীল (আঃ) রয়েছেন। তিনি আমাকে ডেকে বললেন, ’আপনার কউম আপনাকে যে কথা বলেছে এবং তারা আপনাকে যে জবাব দিয়েছে, তা সবই মহান আল্লাহ শুনেছেন।
অতঃপর তিনি আপনার নিকট পর্বতমালার ফিরিশতাকে পাঠিয়েছেন, যেন আপনি তাঁকে তাদের (ত্বায়েফবাসীদের) ব্যাপারে যা ইচ্ছা আদেশ দেন।’ অতঃপর পর্বতমালার ফিরিশতা আমাকে আওয়াজ দিলেন এবং আমাকে সালাম দিয়ে বললেন, ’হে মুহাম্মাদ! আপনার কওম আপনাকে যা বলেছে, তা (সবই) মহান আল্লাহ শুনেছেন। আমি হচ্ছি পর্বতমালার ফিরিশতা। আমার প্রভু আমাকে আপনার নিকট পাঠিয়েছেন, যেন আপনি আমাকে তাদের ব্যাপারে (কোন) নির্দেশ দেন। সুতরাং আপনি কী চান? আপনি চাইলে, আমি (মক্কার) বড় বড় পাহাড় দু’টিকে তাদের উপর চাপিয়ে দেব।’ (এ কথা শুনে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (এমন কাজ করবেন না) বরং আমি আশা করছি যে, মহান আল্লাহ তাদের পৃ’দেশ থেকে এমন লোকের আবির্ভাব ঘটাবেন, যারা এক আল্লাহর উপাসনা করবে এবং তাঁর সাথে কোন জিনিসকে শরীক করবে না।
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا : أَنَّهَا قَالَت لِلنَّبِيِّ ﷺ هَلْ أتَى عَلَيْكَ يَوْمٌ كَانَ أشَدَّ مِنْ يَوْمِ أُحُدٍ ؟ قَالَ لَقَدْ لَقِيتُ مِنْ قَوْمِكِ وَكَانَ أشَدُّ مَا لَقيتُ مِنْهُمْ يَوْمَ الْعَقَبَةِ إذْ عَرَضْتُ نَفْسِي عَلَى ابْنِ عَبْدِ يَالِيْلَ بْنِ عَبْدِ كُلاَلٍ فَلَمْ يُجِبْني إِلَى مَا أرَدْتُ فَانْطَلَقْتُ وَأنا مَهْمُومٌ عَلَى وَجْهِي فَلَمْ أسْتَفِقْ إِلاَّ وأنَا بِقَرْنِ الثَّعَالِبِ، فَرَفَعْتُ رَأْسِي وَإِذَا أنَا بِسَحَابَةٍ قَدْ أظَلَّتْنِي فَنَظَرْتُ فَإذَا فِيهَا جِبْرِيْلُ ، فَنَادَانِي فَقَالَ : إنَّ الله تَعَالٰـى قَدْ سَمِعَ قَوْلَ قَوْمِكَ لَكَ وَمَا رَدُّوا عَلَيْكَ، وَقَد بَعَثَ إلَيْكَ مَلَكَ الجِبَالِ لِتَأْمُرَهُ بمَا شِئْتَ فِيهِمْ فَنَادَانِي مَلَكُ الجِبَالِ فَسَلَّمَ عَلَيَّ ثُمَّ قَالَ : يَا مُحَمَّدُ إنَّ اللهَ قَدْ سَمِع قَوْلَ قَوْمِكَ لَكَ وَأنا مَلَكُ الجِبال وَقَدْ بَعَثَنِي رَبِّي إلَيْكَ لِتَأْمُرَنِي بِأَمْرِكَ فَمَا شِئْتَ إِنْ شِئْتَ أطْبَقْتُ عَلَيْهِمُ الأَخْشَبَيْنِ فَقَالَ النبي ﷺ بَلْ أرْجُو أنْ يُخْرِجَ اللهُ مِنْ أصْلاَبِهِمْ مَنْ يَعْبُدُ اللهَ وَحْدَهُ لاَ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئاً متفقٌ عَلَيْهِ