পরিচ্ছেদঃ আমানত আদায় করার গুরুত্ব
(৩৪২২) হুযাইফাহ ও আবূ হুরাইরাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’বরকতময় মহান আল্লাহ (কিয়ামতের দিন) সকল মানুষকে একত্রিত করবেন। অতঃপর মু’মিনগণ উঠে দাঁড়াবে; এমনকি জান্নাতও তাদের নিকটবর্তী ক’রে দেওয়া হবে। (যার কারণে তাদের জান্নাত যাওয়ার ইচ্ছা প্রবল হয়ে যাবে)। সুতরাং তারা আদম (সালাওয়াতুল্লাহি আলাইহি)র নিকট আসবে। অতঃপর বলবে, ’হে আমাদের পিতা! আমাদের জন্য (আল্লাহর কাছে) জান্নাত খুলে দেওয়ার আবেদন করুন।’ তিনি বলবেন, ’(তোমরা কি জান না যে,) একমাত্র তোমাদের পিতার ভুলই তোমাদেরকে জান্নাত থেকে বহিষ্কার করেছে? সুতরাং আমি এর যোগ্য নই। তোমরা আমার ছেলে ইব্রাহীম খলীলুল্লাহর নিকট যাও।’’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ’’অতঃপর তারা ইব্রাহীমের নিকট যাবে।’’ ইব্রাহীম বলবেন, ’আমি এর উপযুক্ত নই। আমি আল্লাহর খলীল (বন্ধু) ছিলাম বটে, কিন্তু আমি এত উচ্চ মর্যাদার অধিকারী নই। (অতএব) তোমরা মূসার নিকট যাও, যার সঙ্গে আল্লাহ সরাসরি কথা বলেছেন।’ ফলে তারা মূসার নিকট যাবে। কিন্তু তিনি বলবেন, ’আমি এর যোগ্য নই। তোমরা আল্লাহর কালেমা ও তাঁর রূহ ঈসার নিকট যাও।’ কিন্তু ঈসাও বলবেন, ’আমি এর উপযুক্ত নই।’
অতঃপর তারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসবে। সুতরাং তিনি দাঁড়াবেন। অতঃপর তাঁকে (দরজা খোলার) অনুমতি দেওয়া হবে। আর আমানত ও আত্মীয়তার বন্ধনকে ছেড়ে দেওয়া হবে। সুতরাং উভয়ে পুল সিরাত্বের দু’দিকে ডানে ও বামে দাঁড়িয়ে যাবে। অতঃপর তোমাদের প্রথম দল বিদ্যুতের মত গতিতে (অতি দ্রুতবেগে) পুল পার হয়ে যাবে। আমি (আবূ হুরাইরা) বললাম, ’আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! বিদ্যুতের মত গতিতে পার হওয়ার অর্থ কি?’ তিনি বললেন, ’’তুমি কি দেখনি যে, বিদ্যুৎ কিভাবে চোখের পলকে যায় ও আসে?’’ অতঃপর (দ্বিতীয় দল) বাতাসের মত গতিতে (পার হবে)। তারপর (পরবর্তী দল) পাখী উড়ার মত এবং মানুষের দৌড়ের মত গতিতে। তাদেরকে তাদের নিজ নিজ আমল (সিরাত্ব) পার করাবে। আর তোমাদের নবী পুল-সিরাতের উপর দাঁড়িয়ে থাকবেন। তিনি বলবেন, ’’হে প্রভু! বাঁচাও, বাঁচাও!’’ শেষ পর্যন্ত বান্দাদের আমলসমূহ অক্ষম হয়ে পড়বে। এমনকি কোন কোন ব্যক্তি পাছা ছেঁচ্ড়াতে ছেঁচ্ড়াতে (সিরাত্ব) পার হবে। আর সিরাত্বের দুই পাশে আঁকড়া ঝুলে থাকবে। যাকে ধরার জন্য সে আদিষ্ট তাকে ধরে নেবে। অতঃপর (কিছু লোক) জখম হলেও বেঁচে যাবে। আর কিছু লোককে হাত-পা বেঁধে (পিছন থেকে ধাক্কা দিয়ে) জাহান্নামে ফেলা হবে। সেই সত্তার কসম, যার হাতে আবূ হুরাইরার প্রাণ আছে! নিশ্চয় জাহান্নামের গভীরতা সত্তর বছরের (দূরত্বের পথ)।
وَعَن حُذَيفَةَ وَأبي هُرَيرَةَ رَضِيَ الله عَنهُمَا قَالاَ : قَالَ رَسُوْلُ الله ﷺ يَجمَعُ اللهُ تبَارَكَ وَتَعَالَى النَّاسَ فَيَقُومُ المُؤمِنُونَ حَتّٰـى تُزْلَفَ لَهُمُ الجَنَّةُ فَيَأتُونَ آدَمَ صَلَواتُ اللهِ عَلَيهِ فَيقُولُونَ : يَا أَبَانَا اسْتَفْتِحْ لَنَا الجَنَّةَ فَيقُولُ : وَهَلْ أخْرَجَكُمْ مِنَ الجَنَّةِ إلاَّ خَطيئَةُ أبيكُمْ لَسْتُ بِصَاحِبِ ذلِكَ اذْهَبُوا إِلَى ابْنِي إِبْراهيمَ خَلِيل اللهِ قَالَ : فَيَأتُونَ إبرَاهِيمَ فَيَقُولُ إبراهيم : لَسْتُ بِصَاحِبِ ذلِكَ إِنَّمَا كُنْتُ خَليلاً مِنْ وَرَاءَ وَرَاءَ، اعْمَدُوا إِلَى مُوسَى الَّذِي كَلَّمَهُ الله تَكليماً। فَيَأتُونَ مُوسَى فَيَقُولُ : لستُ بِصَاحِبِ ذلِكَ اذْهَبُوا إِلَى عِيسى كلمةِ اللهِ ورُوحه فيقول عيسى : لستُ بصَاحبِ ذلِكَ فَيَأتُونَ مُحَمَّداً ﷺ فَيَقُومُ فَيُؤذَنُ لَهُ وتُرْسَلُ الأَمَانَةُ وَالرَّحِمُ فَيَقُومانِ جَنْبَتَي الصِّرَاطِ يَمِيناً وَشِمَالاً فَيَمُرُّ أوَّلُكُمْ كَالبَرْقِ قُلْتُ : بأبي وَأمِّي أيُّ شَيءٍ كَمَرِّ البَرقِ ؟ قَالَ ألَمْ تَرَوا كَيْفَ يمُرُّ وَيَرْجِعُ في طَرْفَةِ عَيْن ثُمَّ كَمَرّ الرِّيحِ ثُمَّ كَمَرِّ الطَّيْرِ وَشَدِّ الرِّجَال تَجْري بهمْ أعْمَالُهُمْ وَنَبيُّكُمْ قَائِمٌ عَلَى الصِّراطِ يَقُولُ : رَبِّ سَلِّمْ سَلِّمْ حَتّٰـى تَعْجِزَ أعْمَالُ العِبَادِ حَتّٰـى يَجِيء الرَّجُلُ لا يَسْتَطِيعُ السَّيْرَ إلاَّ زَحْفاً وَفي حَافَتي الصِّراطِ كَلاَلِيبُ معَلَّقَةٌ مَأمُورَةٌ بِأخْذِ مَنْ أُمِرَتْ بِهِ فَمَخْدُوشٌ نَاجٍ وَمُكَرْدَسٌ في النَّارِ وَالَّذِي نَفْسُ أَبي هُرَيْرَةَ بِيَدِهِ إنَّ قَعْرَ جَهَنَّمَ لَسَبْعُونَ خَرِيفاً رواه مسلم