পরিচ্ছেদঃ ১৯৫. দুই সাহু সিজদা্ সম্পর্কে
১০০৮। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাথে যুহর বা ’আসর সালাত আদায় করেন। বর্ণনাকারী (আবূ হুরায়রাহ) বলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে নিয়ে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করেই সালাম ফিরিয়ে দিলেন। অতঃপর তিনি মসজিদের সম্মুখ দিকে রাখা কাষ্ঠখন্ডের দিকে অগ্রসর হয়ে তার উপরে এক হাতকে অপর হাতের উপর রাখলেন। এ সময় তাঁর চেহারায় অসন্তুষ্টির ছাপ ছিল।
লোকজন মাসজিদ থেকে দ্রুত বেরিয়ে যেতে যেতে বলছিল, ’সালাত সংক্ষিপ্ত করে দেয়া হয়েছে, সংক্ষিপ্ত করে দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে আবূ বকর এবং ’উমার (রাঃ)-ও ছিলেন। তারা উভয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে এ নিয়ে কথা বলতে ভয় পাচ্ছিলেন। তখন এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়ালেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকে যুল-ইয়াদাইন (দু’ হাতবিশিষ্ট) বলে ডাকতেন। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি কি ভুল করেছেন, না সালাত সংক্ষিপ্ত করে দেয়া হয়েছে?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি ভুলও করি নাই এবং সালাতও হ্রাস করা হয় নাই। যুল-ইয়াদাইন বললেন, হে আল্লাহর রসূল! তাহলে আপনি ভুল করেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকজনের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেনঃ যুল-ইয়াদাইন কি সত্য বলছে? জবাবে সকলেই ইশারায় হ্যাঁ বললেন।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জায়গায় এগিয়ে গেলেন এবং অবশিষ্ট দু’ রাক’আত সালাত আদায় করে সালাম ফিরালেন, এরপর তাকবীর বলে স্বাভাবিক সাজদার মত সিজদায় করলেন অথবা তার চেয়ে দীর্ঘ সিজদা্ করলেন। এরপর তাকবীর বলে মাথা উঠালেন, তারপর আবার তাকবীর বলে স্বাভাবিক সাজদার মত অথবা তার চেয়ে দীর্ঘ সিজদা্ করলেন, অতঃপর তাকবীর বলে মাথা উঠালেন।[1]
বর্ণনাকারী আইয়ূব বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু সীরীনকে সাহু সিজদা্ এবং সালাম ফিরানো সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রাহর কাছে এ বিষয়ে শুনেছি কিনা স্মরণ নেই। তবে আমাকে জানানো হয়েছে যে, ’ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহু সাজদার পরও সালাম ফিরিয়েছিলেন।
সহীহ : বুখারী ও মুসলিম।
باب السَّهْوِ فِي السَّجْدَتَيْنِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِحْدَى صَلَاتَىِ الْعَشِيِّ - الظُّهْرَ أَوِ الْعَصْرَ قَالَ - فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ ثُمَّ قَامَ إِلَى خَشَبَةٍ فِي مُقَدَّمِ الْمَسْجِدِ فَوَضَعَ يَدَيْهِ عَلَيْهَا إِحْدَاهُمَا عَلَى الأُخْرَى يُعْرَفُ فِي وَجْهِهِ الْغَضَبُ ثُمَّ خَرَجَ سَرَعَانُ النَّاسِ وَهُمْ يَقُولُونَ قَصُرَتِ الصَّلَاةُ قَصُرَتِ الصَّلَاةُ وَفِي النَّاسِ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ فَهَابَاهُ أَنْ يُكَلِّمَاهُ فَقَامَ رَجُلٌ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُسَمِّيهِ ذَا الْيَدَيْنِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ أَنَسِيتَ أَمْ قَصُرَتِ الصَّلَاةُ قَالَ " لَمْ أَنْسَ وَلَمْ تَقْصُرِ الصَّلَاةُ " . قَالَ بَلْ نَسِيتَ يَا رَسُولَ اللهِ . فَأَقْبَلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى الْقَوْمِ فَقَالَ " أَصَدَقَ ذُو الْيَدَيْنِ " . فَأَوْمَئُوا أَىْ نَعَمْ فَخَرَجَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى مَقَامِهِ فَصَلَّى الرَّكْعَتَيْنِ الْبَاقِيَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ ثُمَّ كَبَّرَ وَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ ثُمَّ رَفَعَ وَكَبَّرَ ثُمَّ كَبَّرَ وَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ ثُمَّ رَفَعَ وَكَبَّرَ . قَالَ فَقِيلَ لِمُحَمَّدٍ سَلَّمَ فِي السَّهْوِ فَقَالَ لَمْ أَحْفَظْهُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَلَكِنْ نُبِّئْتُ أَنَّ عِمْرَانَ بْنَ حُصَيْنٍ قَالَ ثُمَّ سَلَّمَ .
- صحيح : ق
-
সাজদায়ে সাহু প্রসঙ্গে
সালাতে ভুলত্রুমে কোন ওয়াজিব ছুটে গেলে, সন্দেহ হলে বা রাক‘আত কম-বেশি হলে সংশোধনের জন্য যে সিজদা্ দিতে হয় তাকে সাহু সিজদা বলে। এর পদ্ধতিছ
১। ইমাম সালাতে নিজের ভুল সম্পর্কে নিশ্চিত হলে অথবা মুক্তাদীরা লোকমার মাধ্যমে ভুল ধরিয়ে দিলে তাশাহ্হুদ শেষে তাকবীর দিয়ে পরপর দু’টি সাহু সিজদা দিবেন অতঃপর সালাম ফিরাবেন। (সহীহ মুসলিম ও অন্যান্য)
২। সালাতের রাক‘আত বেশি পড়ে সালাম ফিরিয়ে দেয়ার পর ভুল ধরা পড়লে তাকবীর দিয়ে দু’টি সাহু সিজদা দিবেন।
৩। সালাতের রাক‘আত কম পড়ে সালাম ফিরিয়ে দিলে ভুল ধরার পর তাকবীর দিয়ে অবশিষ্ট সালাত আদায় করে সালাম ফিরাবেন। অতঃপর তাকবীর দিয়ে দু’টি সাহু সিজদা আদায় করে আবার সালাম ফিরাবেন। (সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিম)
৪। সাহু সিজদা্ সালামের পূর্বে ও পরে উভাবেই জায়িয আছে। (মুসলিম, নায়লুল আওত্বার)
উল্লেখ্য, শুধুমাত্র ডানে সালাম দিয়ে সাহু সিজদা্ করার প্রচলিত নিয়মটি ভিত্তিহীন। একইভাবে সাহু সাজদার পর তাশাহহুদ পাঠের কোন সহীহ হাদীস নেই। এ সম্পর্কিত বর্ণিত ‘ইমরান ইবনু হুসাইনের হাদীসটি দুর্বল এবং একই রাবী কতৃর্ক বর্ণিত বুখারী ও মুসলিমের সহীহ হাদীসের বিরোধী, যাতে তাশাহ্হুদের কথা নেই। (সালাতুর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৮৩-৮৪ পৃঃ)
Abu Hurairah said:
The Messenger of Allah (ﷺ) led us in one of the evening (‘Asha) prayers, noon or afternoon. He led us in two Rak’ahs and gave the salutation. He then got up going towards a piece of wood which was placed in the front part of the mosque. He placed his hands upon it, one on the other, looking from his face as if he were angry. The people came out hastily saying: the prayer has been shortened. Abu Bakr and ‘Umar were among the people, but they were too afraid to speak to him. A man whom the Messenger of Allah (ﷺ) would call “ the possessor of arms” (Dhu al-Yadain) stood up (asking him): Have you forgotten. The Messenger of Allah, or has the prayer been shortened? He said: I have neither forgotten nor has it been shortened. He said : Messenger of Allah , you have forgotten. The Messenger of Allah (ﷺ) turned towards the people and asked : did the possessor of arms speak the truth? They made a sign , that is, yes. The Messenger of Allah (ﷺ) returned to his place and prayed the remaining two Rak’ahs, then gave the salutation; he then uttered the takbir and prostrated himself as usual or prolonged. He then raised his head and uttered the takbir; then he uttered the takbir and made prostration as usual or made longer (prostration). Then he raised his head his and uttered the takbir (Allah is most great). The narrator Muhammad was asked : Did he give the salutation (while prostrating) dueto forgetfulness? He said : I do not remember it from Abu Hurairah. But we Are sure that ‘Imran b. Husain (in his version) said; he then gave the salutation.