পরিচ্ছেদঃ ৯৭. যে পরিমাণ পানি দিয়ে গোসল করা যায়
২৩৮। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ফারাক পরিমান পানি সংকুলান হয় এমন একটি পাত্র থেকে পানি নিয়ে জানাবাতের গোসল করতেন।[1]
সহীহ : বুখারী ও মুসলিম।
قَالَ أَبُو دَاوُدَ قَالَ مَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ فِي هَذَا الْحَدِيثِ قَالَتْ كُنْتُ أَغْتَسِلُ أَنَا وَرَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ إِنَاءٍ وَاحِدٍ فِيهِ قَدْرُ الْفَرَقِ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَرَوَى ابْنُ عُيَيْنَةَ نَحْوَ حَدِيثِ مَالِكٍ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ سَمِعْتُ أَحْمَدَ بْنَ حَنْبَلٍ يَقُولُ الْفَرَقُ سِتَّةَ عَشَرَ رِطْلاً . وَسَمِعْتُهُ يَقُولُ صَاعُ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ خَمْسَةُ أَرْطَالٍ وَثُلُثٌ . قَالَ فَمَنْ قَالَ ثَمَانِيَةُ أَرْطَالٍ قَالَ لَيْسَ ذَلِكَ بِمَحْفُوظٍ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَسَمِعْتُ أَحْمَدَ يَقُولُ مَنْ أَعْطَى فِي صَدَقَةِ الْفِطْرِ بِرَطْلِنَا هَذَا خَمْسَةَ أَرْطَالٍ وَثُلُثًا فَقَدْ أَوْفَى . قِيلَ الصَّيْحَانِيُّ ثَقِيلٌ قَالَ الصَّيْحَانِيُّ أَطْيَبُ . قَالَ لَا أَدْرِي .
- صحيح
ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, যুহরী থেকে মা’মার এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তাতে রয়েছেঃ ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’জনে একই পাত্র হতে পানি নিয়ে গোসল করতাম। ঐ পাত্রে এক ফারাক পানি ধরত। ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, আমি আহমাদ ইবনু হাম্বাল (রহঃ)-কে বলতে শুনেছি, ’এক ফারাক হলো, ষোল রতল।’ আমি তাকে এটাও বলতে শুনেছি, ’ইবনু আবূ যি’ব এর মতেঃ এক সা’ হচ্ছে পাঁচ রতল এবং এক রতলের এক তৃতীয়াংশ।’ আর যিনি আট রতল বলেছেন তা সুরক্ষিত (মাহফূয) নয়। ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, ইমাম আহমাদকে আমি বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আমাদের রতলের পাঁচ রতল এবং এক তৃতীয়াংশ দ্বারা সাদাকাতুল ফিতর আদায় করল, সে পূর্ণ ফিতরা দিল। লোকজন বলল, সায়হানী (মদীনার এক প্রকার খেজুর) তো (ওজনে) ভারী হয়। তিনি বললেন, সায়হানী কি উৎকৃষ্ট? তিনি বললেন, আমার তা জানা নেই।
সহীহ।
باب فِي مِقْدَارِ الْمَاءِ الَّذِي يُجْزِئُ فِي الْغُسْلِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَغْتَسِلُ مِنْ إِنَاءٍ - هُوَ الْفَرَقُ - مِنَ الْجَنَابَةِ .
- صحيح : ق
-
হাদীস থেকে শিক্ষাঃ
অপচয়রোধ ও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরিমিত পানি ব্যবহারের সুন্নাত অনুসরণার্থে গোসলের সময় প্রয়োজনের বেশি পানি ব্যবহার করা অনুচিত।
-
গোসল সংক্রান্ত আলোচনাঃ
(ক) গোসলের পরিচিত ও প্রকারঃ গোসলের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে ধৌত করা। ইসলামী পরিভাষায় ‘পবিত্রতা অর্জনের উদ্দেশ্যে (উযু করে) সমস্ত শরীর ধৌত করাকে গোসল বলা হয়। গোসল দু’ প্রকারঃ ১. ফরয, ২. মুস্তাহাব। ফরয গোসল ঐ গোসলকে বলা হয়, যা করা অপরিহার্য। আর মুস্তাহাব গোসল বলা হয় ঐ গোসলকে যা করা অপরিহার্য নয়, কিন্তু করলে নেকী আছে।
(খ) ফরয গোসলের পদ্ধতিঃ প্রথমে দু’ হাত কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে অপবিত্রতা পরিষ্কার করবে। তারপর ‘বিসমিল্লাহ’ বলে সালাতের উযুর ন্যায় উযু করবে। এরপর প্রথমে মাথায় পানি ঢেলে চুলের গোড়া খিলাল করে পানি পৌঁছাবে। অতঃপর সারা শরীরে পানি ঢেলে গোসল সম্পন্ন করবে। (সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিম)
(গ) যেসব কারণে গোসল করা ফরযঃ (১) সহবাস করলে, এতে বীর্যপাত হোক বা না হোক পুরুষের লিঙ্গ স্ত্রীলিঙ্গের সাথে একত্র হলেই গোসল করা ফরয (২) স্বপ্নদোষে বীর্যপাত হলে (৩) উত্তেজনা বশতঃ বীর্য বের হলে (৪) মহিলাদের হায়িয ও নিফাসের রক্ত শ্রাব বন্ধ হলে। (সহীহুল বুখারী, সহীহ মুসলিম, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ)
(ঘ) এক নজরে সুন্নাত ও মুস্তাহাব গোসলসমূহঃ
(১) ইসলাম গ্রহণের সময় গোসল করা। (তিরমিযী, নাসায়ী)
(২) জুমু‘আহার সালাতের পূর্বে গোসল করা। (সহীহুল বুখারী, সহীহ মুসলিম)
(৩) মৃত ব্যক্তিকে গোসল দান কারীর গোসল করা। (ইবনু মাজাহ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ)
(৪) হজ অথবা উমরাহর ইহরাম বাঁধার পূর্বে গোসল করা। (দারাকুতনী, হাকিম)
(৫) ‘আরাফার দিন গোসল করা। (সহীহ সনদে বায়হাক্বী, ইরওয়া ১/১৭৭)
(৬) ঈদুল ফিত্বর ও ঈদুল আযহার দিন ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে গোসল করা। (সহীহ সনদে, বায়হাক্বী, ইরওয়া ১/১৭৭)
(৭) মক্কাহয় প্রবেশের পূর্বে গোসল করা। (সহীহুল বুখারী, সহীহ মুসলিম)
(৮) সিঙ্গা লাগালে গোসল করা। (আবূ দাঊদ)
(৯) একবার স্ত্রী সহবাসের পর পুনরায় সহবাস করতে চাইলে গোসল করা। (আবূ দাঊদ, ২১৯)
(১০) বেঁহুশ ব্যক্তির সুস্থ হওয়ার পর গোসল করা। (সহীহুল বুখারী, ই‘লাউস সুনান, আদ-দুররুল মুখতার)
(ঙ) কতিপয় মাসআলাহঃ
(১) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে পর্দার মধ্যে গোসল করার নির্দেশ দিয়েছেন। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী)
(২) লোকচক্ষুর অগোচরে নির্জন জায়গায় উলঙ্গ হয়ে গোসল করা যাবে। যেমন, নাবী মূসা ও আইয়ূব (আঃ) উলঙ্গ হয়ে গোসল করতেন- (সহীহুল বুখারী, নাসায়ী)। তবে এরূপ অবস্থায়ও পর্দা করা উত্তম।
(৩) প্রাচীর বেষ্টিত জায়গায় বা গোসল খানায় উলঙ্গ হয়ে গোসল করা জায়িয।
(৪) গোসলের সময় কোনো অঙ্গ আগে ও পিছে ধোয়ার ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা নেই। তবে পছন্দনীয় মতে, প্রথমে উযুর অঙ্গগুলো ধোয়া, তারপর দেহের উপরের অংশ থেকে নীচের দিকে ধোয়া উচিত। (আইনী তুহফা)
(৫) গোসলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি অপচয় না করা অনুচিত।
(৬) উযু সহ গোসল করার পর উযু নষ্ট না হলে পুনরায় উযু করার প্রয়োজন নেই। (তিরমিযী, নাসায়ী, আবূ দাঊদ)
(৭) গোসলের সময় মহিলাদের চুলের খোপা বা বেনী খোলা জরূরী নয়। বরং চুলের গোড়ায় তিনবার তিনকোষে পানি পৌঁছিয়ে সারা শরীরে পানি ঢালবে। (সহীহ মুসলিম, মিশকাত)
উল্লেখ্য গোসল সংক্রান্ত বিভিন্ন মাসআলাহ ‘হাদীস থেকে শিক্ষা’ শিরোনামে যথাস্থানে বর্ণনা করা হবে।
'Aishah said:
The Messenger of Allah (May peace be upon him) used to take bath with from a vessel (which contained seven to eight seers, i.e., fifteen to sixteen pounds) because of sexual intercourse.
Abu Dawud said: The version narrated by Mu’ammar on the authority of al-Zuhri has: She (‘A’ishah) said: I and the Messenger of Allah (May peace be upon him) took a bath from a vessel which was equal to al-faraq in measurement (i.e., containing water about seven or eight seers).
Abu Dawud said: Ibn ‘Uyainah also narrated like the version of Malik.
Abu Dawud said; I heard Ahmad b. Hanbal say: Al-Faraq contains sixteen rotls (of water). I also heard him say: The sa’of of Ibn Abi Dhi’b contained 5 rotls (of water). The view that a sa’ contains eight rotls (of water) is not safe.
Abu Dawud said: I heard Ahmad (b. Hanbal) say: Whoever gave 5 1/3 rotls (measuring) with our rotl alms of fitr (sadaqat al-fitr), he gave in full, Thereupon he was questioned: Are the dates called al-saihani heavier (can one sa’ of them be given as alms of fitr)? He replied: The dates called al-saihani are good. But I do not know (whether water is heavier or the dates).