২৭১৩

পরিচ্ছেদঃ ১৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বাধাগ্রস্ত হওয়া এবং হজ্জ ছুটে যাওয়া

২৭১৩-[৭] হাজ্জাজ ইবনু ’আমর আল আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল­াহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার হাড় ভেঙ্গে গেছে অথবা খোঁড়া হয়ে গেছে সে হালাল হয়ে গেছে। তবে পরের বছর তার ওপর হজ্জ/হজ করা অত্যাবশ্যক। [তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী; কিন্তু আবূ দাঊদ আরেক বর্ণনায় আরো বেশি বলেছেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ ’’অথবা রোগাক্রান্ত হয়েছে’’। তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান। ইমাম বাগাবী মাসাবীহ গ্রন্থে বলেন, হাদীসটি দুর্বল।][1]

وَعَنِ الْحَجَّاجِ بْنِ عَمْرٍو الْأَنْصَارِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «من كُسِرَ أَوْ عَرِجَ فَقَدْ حَلَّ وَعَلَيْهِ الْحَجُّ من قَابل» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَأَبُو دواد وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ وَزَادَ أَبُو دَاوُدَ فِي رِوَايَةٍ أُخْرَى: «أَوْ مَرِضَ» . وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيث حسن. وَفِي المصابيح: ضَعِيف

وعن الحجاج بن عمرو الانصاري قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من كسر او عرج فقد حل وعليه الحج من قابل» . رواه الترمذي وابو دواد والنساىي وابن ماجه والدارمي وزاد ابو داود في رواية اخرى: «او مرض» . وقال الترمذي: هذا حديث حسن. وفي المصابيح: ضعيف

ব্যাখ্যা: (مَنْ كُسِرَ أَوْ عَرِجَ فَقَدْ حَلَّ) ‘‘যে ব্যক্তির পা ভেঙ্গে যাবে অথবা লেংড়া হয়ে যাবে সে হালাল হয়ে যাবে।’’ অর্থাৎ- এমন ব্যক্তির জন্য ইহরাম পরিত্যাগ করে স্বদেশে ফিরে যাওয়া বৈধ।

‘আল্লামা সিন্দী (রহঃ) বলেনঃ ইহরাম বাঁধার পর যে ব্যক্তি শত্রু দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত ব্যতীত যে কোন কারণে যদি সফর অব্যাহত রাখতে অপারগ হয়ে যায়। যেমন- কারো পা ভেঙ্গে গেল অথবা এমনিতেই লেংড়া হয়ে গেল তার জন্য ইহরাম ছেড়ে দিয়ে হালাল হওয়া বৈধ যদিও ইহরাম বাঁধার সময় কোন শর্ত না করে থাকেন। তবে শাফি‘ঈ ও হাম্বালীদের মতে শর্তারোপ করলে তার জন্য হালাল হওয়া বৈধ নচেৎ নয়। আর হানাফীগণ এটা কেউ ইহসার মনে করে যেমন- শত্রু কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হওয়াটাকে ইহসার বলা হয়।

এদের মতে এখানে حل শব্দের অর্থ হলো সে হালাল হওয়ার নিকটবর্তী হয়েছে। অর্থাৎ- সে কারো মাধ্যমে কুরবানীর পশু মক্কায় পাঠিয়ে দিবে এবং তা যাবাহ করার নির্দিষ্ট দিন ও সময় ধার্য করে দিবে। অতঃপর নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর ইহরাম পরিত্যাগ করে হালাল হয়ে যাবে।

(عَلَيْهِ الْحَجُّ مِنْ قَابِلٍ) ‘‘সে পরবর্তী বৎসর হজ্জ/হজ করবে।’’ অর্থাৎ- যিনি ফরয হজ্জ/হজ সম্পাদন করতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে হালাল হবে তাকে পরবর্তী বৎসর পুনরায় হজ্জ/হজ করতে হবে। আর নফল হজ্জ/হজ সম্পাদনকারীর জন্য হালাল হওয়ার নিমিত্তে কুরবানী করা ব্যতীত তাকে আর কিছুই করতে হবে না। এ অভিমত ইমাম মালিক ও ইমাম শাফি‘ঈর। আর আবূ হানীফার মতে তার হজ্জ/হজ ও ‘উমরা করা ওয়াজিব। ইব্রাহীম নাখ্‘ঈর অভিমতও এরূপ।

‘আল্লামা ইবনুল ক্বইয়্যিম বলেনঃ সহাবা এবং পরবর্তী ‘আলিমগণ এ বিষয়ে মতভেদে লিপ্ত হয়েছেন যে, শত্রু কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হওয়া ব্যতীত অন্য কোন কারণে বাধাপ্রাপ্ত হলে তার জন্য বায়তুল্লাহ-তে পৌঁছার আগেই হালাল হওয়া বৈধ কি-না?

ইবনু ‘আব্বাস, ইবনু ‘উমার ও মারওয়ান-এর মতে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ব্যতীত তার জন্য হালাল হওয়া বৈধ নয়। ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ, ইসহাক ও আহমাদ প্রমুখ ‘আলিমগণের অভিমতও এটাই।

ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ)-এর মতে সে ব্যক্তি শত্রু কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত ব্যক্তির মতই। ‘আত্বা, সাওরী ও আবূ হানীফার মত এটাই।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك)