২৬৫৬

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - হজের কার্যাবলীতে আগ-পিছ করা বৈধতা প্রসঙ্গে

২৬৫৬-[২] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন মিনায় কোন ব্যতিক্রম ’আমলের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতেন, এতে কোন গুনাহের কিছু হবে না। এমন সময় জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এতে কোন গুনাহের কিছু হবে না। এ সময় আরেক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, আমি সন্ধ্যার পর পাথর মেরেছি। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এতে কোন গুনাহের কিছু হবে না। (বুখারী)[1]

بَابٌ فِى التَّحَلُّلِ وَنَقْلِهِمْ بَعْضَ الْأَعْمَالِ عَلٰى بَعْضٍ

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُسْأَلُ يَوْمَ النَّحْرِ بِمِنًى فَيَقُولُ: «لَا حرَجَ» فَسَأَلَهُ رجل فَقَالَ: رميت بعد مَا أمسَيتُ. فَقَالَ: «لَا حرَجَ» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن ابن عباس قال: كان النبي صلى الله عليه وسلم يسال يوم النحر بمنى فيقول: «لا حرج» فساله رجل فقال: رميت بعد ما امسيت. فقال: «لا حرج» . رواه البخاري

ব্যাখ্যা: এ বিষয়ে আলোচনা ‘আবদুল্লাহ বিন ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ)-এর হাদীসে পূর্বে হয়ে গেছে। তাই তো হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) ‘আবদুল্লাহ বিন ‘আব্বাস (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটি উল্লেখ করে বলেছেন, এ রিওয়ায়াতটি প্রমাণ করে এ ঘটনা ঘটেছিল সূর্য ঢলে যাওয়ার পর, কেননা (مساء) দ্বারা তখনকার সময় বুঝা যায় যখন সূর্য ঢলে যায় এবং প্রশ্নকারী যেন জানতেন যে, মূলত হাজীদের জন্য নিয়ম হলো সকালে কংকর নিক্ষেপ করা কিন্তু ভুলে বিকালে কংকর নিক্ষেপ করে ফেললেন তখনই বিষয়টি সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট জিজ্ঞেস করলেন।

‘আল্লামা শাওকানী (রহঃ) বলেন, প্রশ্নকারীর কথা, (رَمَيْتُ بَعْدَ مَا أَمْسَيْتُ) এ কথাটি থেকে বুঝা যায় যে, যারা সূর্য ঢলে যাওয়ার পর কংকর নিক্ষেপ করবে তাদের কংকর নিক্ষেপ সহীহ হবে এবং এতে কোন পাপ হবে না।

আমি [‘আল্লামা ‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী (রহঃ)] বলব, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে এ বিষয়ে আলোচনা অতিক্রম হয়েছে যে, বিষয়টি নিয়ে ‘উলামায়ে কিরামের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ- যদি কোন ব্যক্তি কুরবানীর দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও জামারায়ে ‘আক্বাবায়ে কংকর নিক্ষেপ করেনি আর এমতাবস্থায় সূর্য ডুবে গেল তার এ মুহূর্তে করণীয় কি? কেউ বলেছেন, তিনি ঐ রাতে কংকর নিক্ষেপ করবেন আর এ মতের প্রবক্তা হলেন ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম মালিক (রহঃ) এবং তাদের অনুসারীরা।

অপর দল বলেছেন, তিনি রাতে কংকর নিক্ষেপ করবেন না বরং পরের দিন সূর্য ঢলে গেলে কংকর নিক্ষেপ করবেন। আর এ মত পোষণ করেছেন ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)। যারা রাতে কংকর নিক্ষেপের কথা বলেছেন তাদের দলীল হলো ‘আবদুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ)-এর হাদীস। কারণ তারা বলে থাকেন, (المساء) শব্দটি রাতের কিছু অংশের উপরন্ত বুঝায়। শুধু তাই নয় তাদের কেউ কেউ এ কথাও বলেছেন যে, (المساء) বলতে সূর্য ডুবার পরের সময়কে বুঝায়।

‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী হানাফী (রহঃ) বলেন, প্রশ্নকারীর কথা (امسيت) সন্ধ্যা করেছি। যার অর্থ اصبحت সকালে করেছি- এর বিপরীত। সুতরাং এর বাহ্যিক দিক থেকেই বুঝা যায়-এর অর্থ হলো সূর্য ডুবার পরের সময়। অপরদিকে রাতে কংকর নিক্ষেপের বিপরীত মতাবলম্বীরা উত্তরে বলেছেন হাদীসের শব্দ (يوم النحر) প্রমাণ করে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দিনের বেলায় প্রশ্ন করেছিলেন আর সন্ধ্যায় কংকর নিক্ষেপও ঠিক দিনের অর্থ বুঝায় রাত নয়। কেননা (المساء) শব্দটির আভিধানিক অর্থ হচ্ছে যুহর থেকে রাত পর্যন্ত সময়। সুতরাং হাদীস স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, (امساء) দ্বারা এখানে উদ্দেশ্য হচ্ছে দিনের শেষাংশ সূর্য ঢলে যাওয়ার পরে যা আরম্ভ হয়-এর দ্বারা কোনভাবেই রাত উদ্দেশ্য হতে পারে না। (আল্লাহ অধিক অবগত)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك)