পরিচ্ছেদঃ ৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ‘আরাফায় অবস্থান প্রসঙ্গে
২৬০৩-[১২] ’আব্বাস ইবনু মিরদাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’আরাফার দিন বিকালে নিজের উম্মাতের (হাজীদের) জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইলেন। উত্তর দেয়া হলো, অত্যাচারী ছাড়া সকলকে ক্ষমা করে দিলাম। কেননা আমি মাযলূমের পক্ষ হয়ে যালিমকে পাকড়াও করে হাক্ব আদায় করব। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, হে আমার রব! আপনি ইচ্ছা করলে মাযলূমকে জান্নাত দিতে পারেন এবং যালিমকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। কিন্তু সেদিন বিকালে তাঁর দু’আ কবূল হলো না। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন মুযদালিফায় ভোরে উঠলেন, তখন আবার সেই দু’আ করলেন। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা চেয়েছিলেন তা তাঁকে দেয়া হলো। রাবী ’আব্বাস বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে ফেললেন অথবা তিনি বলেছেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মুচকী হাসলেন। এ সময় আবূ বকর ও ’উমার (রাঃ) বললেন, আমাদের পিতা-মাতা আপনার প্রতি কুরবান হোক! এটা তো এমন একটা সময় যে, আপনি কোন সময়ই হাসতেন না। কিসে আপনাকে হাসালো? আল্লাহ তা’আলা আপনাকে আরও হাসিখুশি রাখুন। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহর শত্রু ইবলীস যখন জানতে পারলো যে, আল্লাহ আমার দু’আ কবূল করেছেন এবং উম্মাত (হাজীদেরকে) ক্ষমা করে দিয়েছেন তখন সে মাটি উঠিয়ে নিজের মাথায় ছিটাতে লাগলো আর বলতে লাগলো, হায় আমার কপাল! হায় আমার দুর্ভাগ্য! ইবলীসের এ অস্থিরতা দেখেই আমায় হাসি এসেছে। [ইবনু মাজাহ; বায়হাক্বী (রহঃ) তাঁর ’’কিতাবুল বা’সি ওয়ান্ নুশূর’’-এ অনুরূপ বর্ণনা করেছেন][1]
وَعَن عبَّاسِ بنِ مِرْداسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَعَا لِأُمَّتِهِ عَشِيَّةَ عَرَفَةَ بِالْمَغْفِرَةِ فَأُجِيبَ: «إِنِّي قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ مَا خَلَا الْمَظَالِمَ فَإِنِّي آخُذُ لِلْمَظْلُومِ مِنْهُ» . قَالَ: «أَيْ رَبِّ إِنْ شِئْتَ أَعْطَيْتَ الْمَظْلُومَ مِنَ الْجَنَّةِ وَغَفَرْتَ لِلظَّالِمِ» فَلَمْ يُجَبْ عَشِيَّتَهُ فَلَمَّا أَصْبَحَ بِالْمُزْدَلِفَةِ أَعَادَ الدُّعَاءَ فَأُجِيبَ إِلَى مَا سَأَلَ. قَالَ: فَضَحِكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوِ قَالَ تبسَّمَ فَقَالَ لَهُ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ: بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي إِنَّ هَذِهِ لَسَاعَةٌ مَا كُنْتَ تَضْحَكُ فِيهَا فَمَا الَّذِي أَضْحَكَكَ أَضْحَكَ اللَّهُ سِنَّكَ؟ قَالَ: «إِنَّ عَدُوَّ اللَّهِ إِبْلِيسَ لَمَّا عَلِمَ أَنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدِ اسْتَجَابَ دُعَائِي وَغَفَرَ لأمَّتي أخذَ الترابَ فَجعل يحشوه عَلَى رَأْسِهِ وَيَدْعُو بِالْوَيْلِ وَالثُّبُورِ فَأَضْحَكَنِي مَا رَأَيْتُ مِنْ جَزَعِهِ» . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ وَرَوَى البيهقيُّ فِي كتاب الْبَعْث والنشور نحوَه
ব্যাখ্যা: এ হাদীসে বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। হাদীসের প্রারম্ভে দেখা যাচ্ছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় উম্মাতের জন্য হজ্জের সময় আল্লাহর কাছে দু‘আ করেছেন যাতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর উম্মাতকে মাফ করে দেয়। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু‘আর ব্যাখ্যায় মুল্লা ‘আলী কারী (রহঃ) বলেন, বাহ্যিকভাবে বুঝা যায় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জন্য করেছেন যারা তাঁর সাথে হজ্জ/হজ করেছিলেন।
‘আল্লামা সিনদী (রহঃ) বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল উম্মাতের জন্য দু‘আ করেছিলেন যারা তখন তার সাথে হজ্জ/হজ করেছিলেন এবং যারা ক্বিয়ামাত পর্যন্ত হজ্জ/হজ করবেন সকলের জন্য রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু‘আ করেছেন। অথবা তিনি সকল উম্মাতের জন্য দু‘আ করেছেন চাই সে হজ্জ করুক বা না করুক।