পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মৌলিক দু‘আসমূহ
২৫০২-[২১] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন রোগীকে দেখতে গেলেন, যে পাখির বাচ্চার মতো শুকিয়ে দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি আল্লাহর কাছে কোন বিষয়ে দু’আ করেছিলে অথবা তা তাঁর কাছে কামনা করেছিলে? উত্তরে সে বললো, হ্যাঁ, আমি বলতাম, ’’হে আল্লাহ! তুমি আমাকে আখিরাতে যে শাস্তি দিবে তা আগেই দুনিয়াতে দিয়ে দাও। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সুবহা-নাল্ল-হ! আখিরাতের শাস্তি তুমি দুনিয়াতে সহ্য করতে পারবে না এবং আখিরাতেও সহ্য করতে পারবে না। তুমি এভাবে বলনি কেন- ’’আল্ল-হুম্মা আ-তিনা- ফিদ্দুন্ইয়া- হাসানাতওঁ ওয়াফিল আ-খিরাতি হাসানাতাওঁ ওয়াকিনা- ’আযা-বান্না-র’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমাদেরকে দুনিয়াতে ও আখিরাতে কল্যাণ দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের ’আযাব থেকে রক্ষা কর)। বর্ণনাকারী [আনাস (রাঃ)] বলেন, পরে ঐ ব্যক্তি এভাবে দু’আ করলো এবং আল্লাহ তা’আলা তাকে আরোগ্য দান করলেন। (মুসলিম)[1]
وَعَنْ أَنَسٍ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَادَ رَجُلًا مِنَ الْمُسْلِمِينَ قَدْ خَفَتَ فَصَارَ مِثْلَ الْفَرْخِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَلْ كُنْتَ تَدْعُو اللَّهَ بِشَيْءٍ أَوْ تَسْأَلُهُ إِيَّاهُ؟» . قَالَ: نَعَمْ كُنْتُ أَقُولُ: اللَّهُمَّ مَا كُنْتَ مُعَاقِبِي بِهِ فِي الْآخِرَةِ فَعَجِّلْهُ لِي فِي الدُّنْيَا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: سُبْحَانَ اللَّهِ لَا تُطِيقُهُ وَلَا تَسْتَطِيعُهُ أَفَلَا قُلْتَ: اللَّهُمَّ آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ . قَالَ: فَدَعَا الله بِهِ فشفاه الله. رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: হাদীসে উল্লিখিত অসুস্থ ব্যক্তি প্রথমে যে দু‘আ করেছিলেন সেটি যথার্থ ছিল না বিধায় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দু‘আ পরিবর্তন করে ‘‘আল্ল-হুম্মা আ-তিনা ফিদ্দুন্ইয়া হাসানাহ্.....‘আযা-বান্ নার’’ দু‘আটি তাকে বলতে বলেছেন। এর অর্থ হলো, ঐ ব্যক্তি যদি এ দু‘আটি বলত তাহলে আল্লাহ ঐ ব্যক্তির পাপরাশি ক্ষমা করে দিতেন এবং রোগ থেকে আরোগ্য দান করতেন। এরপর ঐ ব্যক্তি এ দু‘আটি বললে আল্লাহ তাকে আরোগ্য দান করেন।
ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেনঃ এ হাদীসে আখিরাতের শাস্তি দুনিয়ায় পাওয়ার কিংবা শাস্তি প্রাপ্তিতে তাড়াহুড়া করতে নিষেধ করা হয়েছে। হাদীসে ‘‘আল্ল-হুম্মা আ-তিনা ফিদ্দুন্ইয়া হাসানাহ্.....‘আযা-বান্ নার’’ দু‘আটির ফাযীলাত প্রমাণিত হয়েছে।
এ হাদীস দ্বারা আরো প্রমাণিত হয় যে, আশ্চর্য হওয়ার পর আশ্চর্য প্রকাশক অভিব্যক্তি হিসেবে ‘‘সুবহা-নাল্ল-হ’’ বলা জায়িয। রোগীকে দেখতে যাওয়া, তার সেবা করা ও তার জন্য দু‘আ করা মুস্তাহাব কাজ হিসেবে এবং রোগ-বিপদ কামনা করা মাকরূহ কাজ হিসেবে পরিগণিত হবে। হাদীসে উল্লিখিত দুনিয়ায় হাসানাহ্ বলতে ‘ইবাদাত ও সুস্থতাকে বুঝানো হয়েছে এবং আখিরাতে হাসানাহ্ বলতে জান্নাত ও ক্ষমাকে বুঝানো হয়েছে। তবে কারো মতে হাসানাহ্ বলতে দুনিয়া ও আখিরাতের নিয়ামতরাজিকে বুঝানো হয়েছে।